ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে কার্যকর উদ্যোগনেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

প্রকাশিত: ১৯:১৮, ১৭ এপ্রিল ২০২১

বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে কার্যকর উদ্যোগনেওয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বর্তমান করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি ও স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বাংলাদেশের জন্য বিদেশী বিনিয়োগ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিনিয়োগ আকর্ষণে দীর্ঘদিন ধরে নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে অনেক আলোচনা হলেও অগ্রগতি প্রত্যাশিত নয়। এ পরিস্থিতিতে বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। শনিবার এক অনলাইন সেমিনারে (ওয়েবিনার) তারা এসব কথা বলেন। ‘এফডিআই ফর এক্সপোর্ট ডাইভারসিফিকেশন এন্ড স্মুথ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন’ শীর্ষক ওই ওয়েবিনার যৌথভাবে আয়োজন করে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ), দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন ও রিসার্স পলিসি ইনটিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড)। ইআরএফের সহসভাপতি এম শফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ওই ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। ইআরএফ সাধারন সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা এলডিসি থেকে উত্তরণ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে তাদের মতামত তুলে ধরেন। ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক বর্তমান করোনা ভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিদেশী বিনিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিযোগী অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় বিদেশী বিনিয়োগ অনেক কম বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ এসেছে ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অথচ একই সময়ে কম্বোডিয়ায় এই বিনিয়োগের পরিমাণ ৩৪ বিলিয়ন ডলার আর ভিয়েতনামে ১৬১ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে বার্ষিক বিদেশী বিনিয়োগের প্রবাহ জিডিপি মাত্র এক শতাংশের মতো আর ভিয়েতনামে তা প্রায় ৬ শতাংশ। অথচ সরকারের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাসহ অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য বিনিয়োগের বিকল্প নেই। কিন্তু বহু আলোচনা সত্বেও দেশে প্রত্যাশিত বিদেশী বিনিয়োগ না আসার পেছনে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে নানা ধরণের জটিলতা তথা বিশ^ ব্যাংকের ব্যাংকের ব্যবসা সহজ করার সূচকে পিছিয়ে থাকাকে অন্যতম কারন হিসেবে দায়ী করেন। বিশেষত অবকাঠামো দুর্বলতা এবং যেসব অবকাঠামো রয়েছে, বিদ্যমান অবকাঠামো সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারা, শ্রমিকের দক্ষতার ঘাটতি, দুর্নীতি, ব্যবসায়িক বিরোধ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা, দুর্বল ব্যাংকিং খাত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণতা, সম্পত্তির নিবন্ধনে জটিলতা ও দীর্ঘসূত্রতা, ঋণ প্রাপ্তিতে জটিলতা, বিভিন্ন অবকাঠামোর অনুমোদন প্রাপ্তিতে জটিলতা তথা ব্যবসা শুরু করতে অনেক বেশি সময় লেগে যাওয়াকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ তথা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পথে বাংলাদেশ আগামী পাঁচ বছর রপ্তানিতে বিদ্যমান সুযোগ পেতে যাচ্ছে। এই সময়ের মধ্যেই ইউরোপ, কানাডাসহ বড় বাজারগুলোতে রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত সুবিধা ধরে রাখতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যদিকে বিনিয়োগ আকর্ষণে চলমান সীমাবদ্ধতা দ্রুত সমাধান করা বিশেষত ব্যবসা সহজ করার সূচকে উন্নতি করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, বিদেশীরা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ^ব্যাংকের এই সূচকটিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন। এছাড়া চীন থেকে সরে আসা বিনিয়োগ ধরতে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন।
×