ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গফরগাঁওয়ে নারী দিবসেও কর্মক্ষেত্রে অবহেলিত নারীরা

প্রকাশিত: ১৫:৩১, ৭ মার্চ ২০২১

গফরগাঁওয়ে নারী দিবসেও কর্মক্ষেত্রে অবহেলিত নারীরা

নিজস্ব সংবাদদাতা, গফরগাঁও ॥ “করোনা কালে নারীর নেতৃত্ব গড়বে নতুন সমতার বিশ^” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সমতার অঙ্গীকারে দেশে পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। কিন্তু এখনো বৈষম্যের শিকার এদেশের শ্রমজীবী নারীরা। জীবিকার তাগিদে কোনো খারাপ কাজ বা অনৈতিক কাজে লিপ্ত না হয়ে কেউ কাজ করছেন ইটভাঁটিতে কেউ বা করছেন ইট ভাঙার কাজ আবার কেউ কেউ জীবিকার তাগিদে অন্যের বাড়িতে বুয়ার কাজ করছেন। কেউবা রাস্তার পাশে পুরি-সিঙ্গারার বিক্রি করে অনেক কষ্টে সন্তানদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। আবার কেউ মটর বাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এতে করে তাদের কাজের গন্ডি যেমন বৃদ্ধি করছে তেমনি অন্য নারীকেও স্বাবলম্বী সাহস যোগাচ্ছে। তেমনি এক নারী ময়মনসিংহের গফরগাঁও পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের রুমা আক্তার (৩৫) তিন ছেল এক মেয়ে নিয়ে জীবন চালাচ্ছে দুঃখে কষ্টে তার দাবি মানুষে এত কিছু পায় শেখ হাসিনার কাছ থেকে আমরা পাই না কেন? রুমা আক্তারের মত এ রকম দাবি সুজাতা রাণী দাসসহ গৃহহারা অনেক শ্রমজীবী নারীর। সমাজ সংসারে পুরুষের পাশাপাশি নারী। একজন পুরুষ যেমন তার পূর্ণতা পায় অর্ধাঙ্গিনীর মাধ্যমে ঠিক তেমনি একজন নারীও পূর্ণতা পায় তার জীবন সঙ্গীর মাধ্যমে। সমতার হিসাবে নারীরা সবসময় পিছিয়ে কর্মস্থলে। নারীরা সব সময় পুরুষের কাঁধে কাঁধ রেখে চলার যোগ্যতা রাখলেও তা যেন সব সময় দেখেও অস্বীকার করা হয়। এই অপ্রাপ্তি নারীর ক্ষেত্রে আজ থেকে নয়। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মজুরি বৈষম্য, কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত নারী সমাবেশে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন হয়। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন। এ সম্মেলনে ক্লারা প্রতি বৎসর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করার প্রস্তাব দেন। এর পর থেকেই প্রতি বছর মার্চ মাসের ৮ তারিখ বিশ্ব নারী দিবস পালন করা হয়। সুজাতা রাণী দাস বলেন, তের বছর বয়সে বিয়ে হয়েছে সেই ছোট কাল থেকেই সংসারের বোঝা বইছি। দুই ছেলে দুই মেয়ে নিয়ে রাস্তার পাশে পুড়ি সিঙ্গারা তৈরি করে বিক্রি করছি ১১ বছর যাবৎ কোনো রকম জীবন চালিয়ে যাচ্ছি। অপর নারী রুমা আক্তার বলেন, মাঝে মধ্যে অন্যের বাড়িতে ১৬০-২০০ টাকা বুয়ার কাজ করে মেয়েকে লেখাপড়া করাচ্ছি তবু ‘সুখী’। মানুষের কাছে শুনি মুজিব বর্ষে শেখ হাসিনা যাদের জমি আছে তাদেরকে ঘর দিচ্ছে। কিন্তু আমার ভাগ্যে তা জুটেনি। রুমার মত ঝর্ণা আক্তার, ময়মন নেছা, নাজমা খাতুন, সুজাতা রাণী দাসসহ অনেকেরই দাবী জমি থাকা সত্ত্বেও আমরা কেন ঘর পাইনা? আমরা কেন সরকারের সুযোগ সুবিধা পাইনা? তাহলে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সুযোগ সুবিধা কারা নেয়? এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খালেদা আক্তার বলেন, আমরা নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে, ভাতা দিয়ে সামাজিক বেষ্টনির আওতায় এনে সমাজের অবহেলিত নারীদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সমাজের অবহেলিত দুস্থদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় আনা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, শুধু নারী দিবসেই নয় আমরা নারীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তার বেষ্টনিতে আনার চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। করোনা কালীন সময়ে হয়তো একটু সমস্যা হয়েছিল। আগামীতে এই সমস্যা থাকবে না।
×