ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

লিবিয়ায় মানব পাচার ও হত্যাকান্ডের ঘটনায় মাদারীপুরে নারী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১৩:৪৯, ১০ জুলাই ২০২০

লিবিয়ায় মানব পাচার ও হত্যাকান্ডের ঘটনায় মাদারীপুরে নারী গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ লিবিয়ায় মানব পাচার ও হত্যাকান্ডের ঘটনায় আরো এক নারী সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৮। সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী এলাকা থেকে মানব পাচার চক্রের ওই নারী সদস্য সুমি বেগমকে (৩৩) কে গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে র্যাব ও পুলিশের হাতে নারী দালালসহ ১২ আসামি গ্রেফতার হলো। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় র্যাব ৮ মাদারীপুর ক্যাম্পের অধিনায়ক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৮ এর একটি দল তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বুধবার রাত সাড়ে ১১টার সময় মাদারীপুর সদর উপজেলার শ্রীনদীহাট গ্রাম হতে সামাদ ফকিরের স্ত্রী সুমি বেগম (৩৩) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকার করেন। সুমি বেগম তার এলাকায় দালাল চক্রের মূলহোতা কুদ্দুস (৩৮) এর সাথে যোগসাজসে অবৈধভাবে বাংলাদেশ হতে বিভিন্ন উপায়ে লিবিয়ায় মানব পাচার করে। সুমি বেগম বাংলাদেশ হতে লিবিয়ায় মানব পাচারের যাবতীয় আর্থিক লেনদেন ও লোক সংগ্রহের কাজ সম্পাদন করে। আটককৃত আসামিকে মাদারীপুর সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে একটি আন্তর্জাতিক মানব পাচারকারী চক্র ইতালিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মোটা অংকের বেতনের চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে মানব পাচার করছে। ওই চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশ, লিবিয়া ও ইতালিতে সমভাবে সক্রিয়। এদের শিকার মূলত মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের উঠতি বয়সের বেকার যুবকরা। চক্রটি বাংলাদেশ থেকে প্রথমে যুবকদের লিবিয়ায় পাচার করে। পরে লিবিয়ায় অবস্থানরত চক্রের সদস্যরা লিবিয়ার বন্দিশালায় তাদেরকে আটকে রেখে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে বন্দীদের নিকটাত্মীয়দের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করে। টাকা পাওয়ার পর তাদেরকে লিবিয়া হতে নৌকাযোগে অবৈধ পন্থায় ইতালিতে গমনের সুযোগ করে দেয়। ক্ষেত্র বিশেষে চক্রটি বন্দীপ্রতি পাঁচ থেকে দশ লক্ষ টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ আদায় করে থাকে। উল্লেখ্য, চলতি বছর গত ২৮মে রাত ৯টার দিকে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপলির দক্ষিণ শহর মিজদায় আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্র অভিবাসন প্রত্যাশিদেরকে অপহরণ করে মুক্তিপণ না পেয়ে ২৬ জন বাংলাদেশিসহ ৩০ জনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। তাদের গুলিতে আরো ১১ জন বাংলাদেশি গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় মাদারীপুরের ১১জন নিহত ও ৪জন আহত হয়। বিষয়টি র্যাব-এর নজরে আসলে র্যাব-৮ এর অধীনে ১১ জেলার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট মানব পাচারকারীদের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে তাদের গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
×