ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

চার বছরেও রাজধানীর বৃত্তাকার রেলপথ জরিপের কাজ শেষ হয়নি

প্রকাশিত: ০৭:৪৬, ২৫ জানুয়ারি ২০২০

  চার বছরেও রাজধানীর বৃত্তাকার রেলপথ জরিপের কাজ শেষ হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানী ঢাকায় বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্য সমীক্ষার কাজ শুরু হয় চার বছর আগে। কয়েক ধাপে এই কাজের সময় বৃদ্ধি করেও সম্পন্ন হচ্ছে না সমীক্ষার কাজ। এতে আটকা পড়েছে মূল প্রকল্পের কাজ। এদিকে মূল প্রকল্পের কাজে হাত দিতে না পারায় চাওয়া যাচ্ছে না উন্নয়ন সহযোগীর ঋণ। চলমান সমীক্ষা প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এখনও চূড়ান্ত ফিজিবিলিটি রিপোর্ট দাখিল না করায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বিল পরিশোধেও জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এই জটিলতা পরিহার ও সমীক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রকল্পের মেয়াদ আরও বৃদ্ধির প্রস্তাব গেছে পরিকল্পনা কমিশনে। সাধারণত সমীক্ষা প্রকল্পের মেয়াদ ছয় মাস থেকে এক বছর বৃদ্ধি করা যায়। এরইমধ্যে কয়েক ধাপে এই সময় প্রায় চার বছর বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ অবস্থায় নতুন করে সমীক্ষা প্রস্তাব মেয়াদ বৃদ্ধির যথাযথ কারণ উল্লেখ করে সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে নতুন করে আবারও পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুমোদন প্রয়োজন। এছাড়া পরামর্শক প্রতিষ্ঠানকে খসড়া ফিজিবিলিটি রিপোর্ট এবং ফাইনাল ফিজিবিলিটি রিপোর্ট নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে দাখিল করার জন্য তাগিদ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। জানা যায়, সমীক্ষার রিপোর্ট সম্পন্ন করতে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় চেয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। প্রথমে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সাল থেকে ২০১৭ মেয়াদে জরুরী ভিত্তিতে সমীক্ষা চালানোর সময়সীমা নির্ধারিত ছিল। পরে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকল্পের মেয়াদ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, অনুমোদিত সমীক্ষা প্রস্তাবে পরামর্শক কাজের মূল প্যাকেজের আওতায় কেনাকাটার জন্য সিঙ্গেল সোর্স সিলেকশনের সংস্থান ছিল। সেই অনুযায়ী ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিয়েশন কোম্পানিকে (আইআইএফসি) নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু আইআইএফসি’র প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হয়নি। ফলে নতুন করে অন্যান্য কোম্পানি প্রস্তাব দাখিল করে। মূলত পরামর্শক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যই প্রকল্পটির কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন হচ্ছে না। বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘পরামর্শকদের সঙ্গে চুক্তিতে বিলম্ব হওয়ায় কিছু সময় আরও লাগবে। আশা করছি এই সময়েই প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হবে। বলা যায় প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। এরপরে ইআরডি’র (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ) মাধ্যমে আমরা উন্নয়ন সহযোগীর সন্ধান করব।’ যানজটে বেহাল নগরবাসীকে স্বস্তি দিতে ভবিষ্যত পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। এজন্য রাজধানী ঢাকার চারদিকে বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণ করতে চায় সরকার। বৃত্তাকার রেলপথ বাস্তবায়িত হলে ঢাকাসহ গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও মুন্সীগঞ্জের মানুষ কোন ধরনের যানজটে না পড়েই সহজেই রাজধানীতে আসা-যাওয়া করতে পারবেন। বৃত্তাকার রেলপথ নির্মাণ হলে ঢাকা থেকে চাপ কমবে। সূত্র জানায়, সম্ভাব্য বৃত্তাকার রেলপথটি হবে আব্দুল্লাহপুর-ধউর-বিরুলিয়া-গাবতলী-রায়েরবাজার, বাবুবাজার-সদরঘাট-ফতুল্লা-চাষাঢ়া-সাইনবোর্ড- শিমরাইল-পূর্বাচল সড়ক থেকে তেরমুখ পর্যন্ত। এছাড়া এর পাশাপাশি নৌরুটও করা হবে। যেখানে উন্নতমানের ওয়াটার বাস চলাচল করবে। নৌরুটের পাশে নদীতীর ঘেঁষে হবে ইকোপার্ক, ওয়াকওয়ে। এজন্যও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে। ঢাকার চারপাশে ৯১ কিলোমিটার সার্কুলার রুট করার পরিকল্পনা নেয়া হলেও রেলপথের দৈর্ঘ্য হবে ৮০ কিলোমিটার। যা কয়েকটি ধাপে বাস্তবায়িত হবে। তবে উন্নয়ন সহযোগী পাওয়া গেলে একটি প্রকল্পের আওতায় ঢাকার চারপাশে ৮০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার। অথচ মূল প্রকল্প নেয়ার আগে সমীক্ষা কাজেই চলে গেছে কয়েক বছর।
×