ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

স্বর্ণকেও ছাড়িয়ে গেল প্যালেডিয়ামের দাম

প্রকাশিত: ১০:৪২, ২৩ জানুয়ারি ২০২০

 স্বর্ণকেও ছাড়িয়ে গেল প্যালেডিয়ামের দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্যালেডিয়াম ধাতুর দাম বেড়েছে বিশ্ববাজারে। গত দুই সপ্তাহে এই ধাতুর দাম লাফিয়ে ২৫ শতাংশ বেড়েছে, গত বছরের তুলনায় যার মূল্য এখন দ্বিগুণ। বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক আউন্স (২৮.৩৫ গ্রাম) প্যালেডিয়ামের দাম ২ হাজার পাঁচশ ডলার। যে হারে দাম বাড়ছে তাতে শীঘ্রই এ ধাতুর দাম কমার কোন সম্ভাবনা নেই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই প্যালেডিয়াম ধাতুটা কী? কী কাজে এটা ব্যবহার হয়? এর দাম কেন হু হু করে বাড়ছে? প্যালেডিয়াম দেখতে চকচকে সাদা। এটি প্লাটিনাম ধাতুর গোত্রভুক্ত। প্যালেডিয়াম ধাতুর গোত্রে রুথেনিয়াম, রেডিয়াম, অসমিয়াম ও ইরিডিয়ামও আছে। রাশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বের বেশিরভাগ প্যালেডিয়াম পাওয়া যায়। খনি থেকে অন্যান্য ধাতু বিশেষ করে প্লাটিনাম এবং নিকেল থেকে নিষ্কাশিত উপজাত এই প্যালেডিয়াম। গাড়ির গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ ‘ক্যাটালিটিক কনভার্টার’ তৈরির জন্য মূলত বাণিজ্যিকভাবে এই ধাতু ব্যবহার করা হয়। এই ক্যাটালিটিক কনভার্টার গাড়ির দূষিত গ্যাস নির্গমন কমাতে সহায়তা করে। প্যালেডিয়ামের ৮০ শতাংশের বেশি এই যন্ত্রে ব্যবহার করা হয় যেটা বিষাক্ত গ্যাস কার্বন মনোঅক্সাইড এবং নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইডকে কম ক্ষতিকর নাইট্রোজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড ও জলীয় বাষ্পে রূপান্তরিত করে। সম্প্রতি এই ধাতুর দাম এতই বেশি হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী গাড়ির ক্যাটালিটিক কনভার্টার চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ বলছে, ২০১৯ সালের প্রথম ছয় মাসে যে পরিমাণ চোর ধরা পড়েছে, সেটা গত বছরের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি। চাহিদার তুলনায় যোগান কম হওয়ায় প্যালেডিয়ামের দাম বাড়ছে। ২০১৯ সালে যে পরিমাণে এই ধাতু উৎপাদন করা হয় তখনই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল যে, আগামী ৮ বছরে বিশ্বে এর যে পরিমাণ চাহিদা হবে তার অনেক নিচে এর যোগান থাকবে। দাম বাড়ার কারণে খনি শ্রমিকদের প্লাটিনাম ও নিকেলের চেয়ে প্যালেডিয়াম উৎপাদনের প্রতি জোর দেয়া হয়েছে। কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, এই ঘাটতি থেকেই যাবে। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকা যে দেশটি ৪০ শতাংশের কাছাকাছি উৎপাদন করতো গত সপ্তাহে তারা বলছে, প্লাটিনাম গোত্র যার মধ্যে প্যালেডিয়ামও রয়েছে তার উৎপাদন কমে ১৩.৫ শতাংশে নেমে এসেছে। ২০১৯ সালের নবেম্বরের সঙ্গে ২০১৮ সালের নবেম্বরের তুলনা করলে এই পরিমাণ অনেক কম। এদিকে গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে প্যালেডিয়ামের চাহিদা ব্যাপক বেড়ে গেছে। এর পেছনে কারণও রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের কাছ থেকে বিশেষ করে চীনে, পেট্রোল চালিত গাড়ি থেকে বায়ুদূষণ কমানোর নিয়ম-কানুন কঠোর রয়েছে। একই সময়ে ইউরোপে গাড়ি থেকে ডিজেল নির্গমন নিয়ে যে কেলেঙ্কারি হলো সেটারও প্রভাব পড়েছে।
×