ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্ঘটনা, প্রাণহানি বাড়ছেই

প্রকাশিত: ০৯:০২, ৭ জানুয়ারি ২০২০

দুর্ঘটনা, প্রাণহানি বাড়ছেই

সড়ক দুর্ঘটনা ঢাকাসহ সারা দেশের একটি করুণ ও মর্মস্পর্শী আখ্যান। কত মূল্যবান প্রাণ অকালে ঝরে যায়, যার হিসাব কষতে গেলে হিমশিম খেতে হয়। অগণিত আহত মানুষের জীবনের স্বচ্ছন্দ গতি অনিবার্যভাবে ছেদ পড়াও দৃষ্টিকটুভাবে দৃশ্যমান। নিরাপদ সড়ক আন্দোলন থেকে সড়ক পরিবহনের আইনী বিধি-বিধান ছাড়াও গণমানুষের সচেতন দৃষ্টিভঙ্গিকে ছাপিয়ে জানমালের মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতিকে কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বৃহদাকার ভারি যান থেকে শুরু করে মাঝারি ও ক্ষুদ্র পরিবহনগুলো নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করে বলে মনেও হয় না। সাধারণ পথচারীদের পদচারী সেতু থাকা সত্ত্বেও চলমান পরিবহনের ফাঁকফোকড়ে রাস্তা পারাপার একটি নৈমিত্তিক চিত্র। সারা বছরের সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র এবারও ভয়াবহ এবং মর্মান্তিক, যা আগের বছরের তুলনায় বেড়ে গেছে বলে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সংগঠনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। যেভাবে দুর্ঘটনা বেড়েছে, একই গতিতে প্রাণহানিও সংঘটিত হয়েছে। নিরাপদ সড়ক পরিবহন আইনের যথাযথ প্রয়োগের সরকারী নির্দেশনা থাকলেও রাস্তাঘাটে তেমন দৃশ্য অনুপস্থিত। অদক্ষ চালক, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, সড়ক বিধি-নিষেধকে অমান্য করা, চালকের বেপরোয়া, নিয়ন্ত্রণহীন গতি সর্বোপরি গণসচেতনতার মারাত্মক অভাব। বিশেষ করে ভারি যান, রিকশা, মোটরসাইকেল কারোরই খেয়াল থাকে না ঠাণ্ডা মাথায়, ধীরস্থির গতিতে যানটিকে নিয়ন্ত্রণ করা। একে তো সড়ক ব্যবস্থাপনায় যতখানি যানবাহন থাকা বাঞ্ছনীয় তার থেকে প্রায় ৭ গুণ বেশি গাড়ি চলে শুধু রাজধানী ঢাকা শহরেই। যার মূল দায়িত্ব বর্তায় বিআরটিএর ওপর। অভিযোগ রয়েছে, এই সংস্থাটি কোন বিধিনিষেধ না মেনে একতরফা গাড়ি নিবন্ধনের ছাড়পত্র দিয়ে যাচ্ছে গ্রাহকদের। প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যাই অনেক বেশি। সড়ক বিশেষজ্ঞ এবং গবেষকরা বলছেন, আন্দোলন আর প্রতিবাদে এমন সঙ্কট কাটার সম্ভাবনা নেই। সবচেয়ে বেশি জরুরী সড়ক পরিবহন বিধি নিয়মমাফিক অনুসরণ করা। যাত্রী ও পথচারীকেও এ ব্যাপারে সচেতনতার পরিচয় দিতে হবে। অদক্ষ চালকের হাতে ভারি যানবাহনের দায়িত্ব দিতে গেলে মালিকপক্ষকেও বিধিসম্মত উপায় অবলম্বন করা দেশ ও জনস্বার্থে আবশ্যক। যান্ত্রিক ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং মেয়াদোত্তীর্ণ কোন যানবাহনই রাস্তায় বের করা আইনত দ-নীয়। মোটরবাইক তো চালান মালিক নিজেই। তিনি যদি তার জীবনের নিরাপত্তাকে আমলে না নেন, তাহলে দায়টা কার ওপর বর্তাবে? আর কিভাবেই বা সড়কের শৃঙ্খলা নিশ্চিত হবে। যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠা-নামা-তাও বিধিসম্মত বিষয় নয়। সব মানুষকে সচেতন দায়বদ্ধতায় সড়ক-মহাসড়কে চলাচল করা যৌক্তিক দাবি তা তিনি যাত্রী, পথচারী, চালক যেই হোন না কেন।
×