মোঃ মামুন রশীদ ॥ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) ইতোমধ্যেই প্লে অফে ওঠার রেস থেকে ছিটকে গেছে সিলেট থান্ডার। সম্ভাবনা এখন পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখলেও রংপুর রেঞ্জার্সের জন্য তা বেশ কঠিন। তবে ১২ পয়েন্ট করে নিয়ে ঢাকা প্লাটুন, রাজশাহী রয়্যালস ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স দারুণ অবস্থানে আছে। আজ নিজেদের ম্যাচ জিতলেই প্লে অফে এক পা দিয়ে রাখবে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীর। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ বেলা ১টা ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম মুখোমুখি হবে খুলনা টাইগার্সের। ৮ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট পাওয়া খুলনা এই ম্যাচ হারলেই ১৪ পয়েন্ট নিয়ে প্লে অফ প্রায় নিশ্চিত করবে চট্টগ্রাম। তবে হারলেও রেসে থাকবে খুলনা, চট্টগ্রাম হারলে অপেক্ষায় থাকতে হবে। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে সিলেটকে হারিয়ে দিতে পারলে রাজশাহীও প্লে অফে এক পা দিয়ে রাখবে। কারণ রানরেটেও এগিয়ে আছে তারা। আজই সিলেট পর্বের শেষ দিন। এরপর ৭ জানুয়ারি ঢাকায় বঙ্গবন্ধু বিপিএলে রাউন্ড রবিন লীগের পঞ্চম ও শেষ পর্ব।
এই মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের শীর্ষ তিনটি পজিশনে আছে ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম। এ তিনটি দলের মধ্যে আজ দুটি দল রাজশাহী ও চট্টগ্রামের ম্যাচ। তারা জিতলেই প্লে অফ অনেকখানি নিশ্চিত করবে, কারণ ১৪ পয়েন্ট করে হয়ে যাবে দল দুটির। তবে খুলনা ও কুমিল্লার ম্যাচগুলোর ফলাফল কিছুটা ব্যতিক্রম ঘটাতে পারে। এ দুটি দল পরস্পরের মধ্যে এখন পর্যন্ত মুখোমুখি না হওয়াতেই সমীকরণটা এমন দাঁড়াতে পারে। খুলনা যদি কুমিল্লার কাছে দুই ম্যাচেই হেরে যায় এবং আজ চট্টগ্রামের কাছে পরাজিত হয়, সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম পৌঁছে যাবে প্লে অফে। কারণ শীর্ষ চারে থাকা নিশ্চিত হয়ে যাবে তখন দলটির। শুধুমাত্র তখন কুমিল্লারই সুযোগ থাকবে শীর্ষ চারে থাকার। তবে যদি আজ খুলনা জিতে যায়, তখন ৪টি দলের পয়েন্ট ১২ হয়ে যাবে। অপেক্ষায় থাকতে হবে পরবর্তী সময় পর্যন্ত। আর খুলনা আজ জিতে যাওয়ার পর কুমিল্লাকেও যদি পরের দুই ম্যাচে হারিয়ে দেয় সেক্ষেত্রে বিদায় ঘটবে কুমিল্লার। তাই আজ খুলনার অবশ্যই জিততে হবে। শুক্রবার তারা ঢাকার কাছে ১২ রানে হেরে যাওয়াতে চট্টগ্রামের জন্য তাই সুবিধা হয়েছে। অর্থাৎ খুলনা-কুমিল্লার মধ্যে দুই ম্যাচই মূলত প্লে অফের চারটি দল নিশ্চিত করে দেবে। সিলেট পর্বে আজ প্রথম ম্যাচ চট্টগ্রামের। সর্বশেষ ম্যাচে তারা মিরপুরে হেরে গেছে কুমিল্লার কাছে। সেই ম্যাচে খেলেননি ইমরুল কায়েস। মাহমুদুল্লা রিয়াদও ছিলেন না। আজ ইমরুল ফিরবেন। আর খুলনা টানা দুই ম্যাচ জিতে সিলেটে এসেই হার দেখেছে। সবচেয়ে কম ৮ ম্যাচ খেলেছে দলটি। তাই আজকের ম্যাচের ফলাফল তাদের পরবর্তী সমীকরণ ঠিক করে দেবে। জিততে পারলে খুব ভালভাবে রেসে টিকে থাকবে তারা, রানরেট ভাল থাকায় শীর্ষস্থানেও উঠে আসবে। এমন একটি ম্যাচে জেতার জন্যই নামবে মুশফিকুর রহীমের দল। ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম পর্বে চট্টগ্রামকে ৮ উইকেটে হারিয়ে দেয়ার সুখস্মৃতিও আছে দলটির। চট্টগ্রামের দলটি নিয়মিত খেলোয়াড়দের অভাবে ভুগলেও সমস্যাটা নেই খুলনার। শুরু থেকেই কম্বিনেশন এক আছে তাদের।
দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাগতিক সিলেটের মুখোমুখি হবে রাজশাহীর। এখন আর চলতি আসর থেকে পাওয়ার কিছুই নেই সিলেটের। শুধু বাকি থাকা ম্যাচগুলোতে জয় নিয়ে স্বস্তির সঙ্গে শেষ করা। নিজেদের মাঠে প্রথম ম্যাচেই তারা কুমিল্লার কাছে সুপার ওভারে হেরে রবিন লীগ থেকেই ছিটকে যায়। ৯ ম্যাচে মাত্র একটিই জয় পেয়েছে তারা খুলনার বিপক্ষে। বাকি সব দলের কাছেই হেরেছে। প্রথম পর্বেই রাজশাহীর সঙ্গে সাক্ষাত হয়েছিল তাদের। সেই ম্যাচে বাজেভাবে হেরে গিয়েছিল মিরপুরে। ৮ উইকেটে জয় পেয়েছিল রাজশাহী। এখন সেই পরাজয়ের শোধ তুলে নেয়ার সুযোগ সিলেটের। স্বাগতিক দর্শকদের স্বস্তি দিতে সেই জয় পেতে উন্মুখ থাকবে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দল। তবে সেজন্য দুই ক্যারিবীয় তারকা জনসন চার্লস ও আন্দ্রে ফ্লেচারের আরেকবার জ্বলে ওঠা জরুরী। মোহাম্মদ মিঠুনও আবার রানে ফিরেছেন।
তবে দলগতভাবে জ্বলে উঠতে না পেরেই এবার ব্যর্থ হয়েছে সিলেট। অধিনায়ক মোসাদ্দেক নিজেই ফর্মে নেই। এবাদত হোসেন চৌধুরী ব্যতীত বোলিং বিভাগেও বলার মতো পারফর্মেন্স দেখাতে পারেননি কেউ। এমন একটি দলকে আবার হারাতেই মাঠে নামবে আজ রাজশাহী। সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচেই তারা রংপুরকে হারিয়ে আবার জয়ের ধারায় ফিরেছে। নিয়মিত অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেল সেই ম্যাচটি খেলেননি। এখন আরেকটি ম্যাচ জিতে আজই সুবিধাজনক অবস্থানে যেতে চায় রাসেলের দল। এই মুহূর্তে ৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে তারা। আজ হেরে গেলেও তাই খুব সমস্যায় পড়তে হবে না। কিন্তু আফিফ হোসেন ধ্রুব, রবি বোপারা ফর্মের তুঙ্গে আছেন। এক ঝাঁক অলরাউন্ডার মূল শক্তি রাজশাহীর। সেই শক্তিতে ভর দিয়েই এত দূর এসেছে দলটি। আজ ম্যাচ জিতলেই শীর্ষস্থান পেয়ে যাবে তারা। প্লে অফও অনেকখানি নিশ্চিত হয়ে যাবে।
ঢাকা, বাংলাদেশ শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১
