ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

নাসরীন মুস্তাফার একাধিক নতুন মঞ্চনাটক

প্রকাশিত: ০৮:০৮, ১২ অক্টোবর ২০১৯

 নাসরীন মুস্তাফার একাধিক নতুন মঞ্চনাটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের অন্যতম একজন তরুণ মেধাবী নাট্যকার নাসরীন মুস্তাফা। ‘লীলাবতী’, ‘জনমাংক’, ‘কমলাকান্ত’র মতো জনপ্রিয় মঞ্চনাটক রচনা করে তিনি দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছেন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন নাটক রচনা করছেন। অচিরেই মঞ্চে আসছে তার রচিত একাধিক নতুন নাটক। এরই ধারাবাহিকতায় তার রচিত ‘বাঘ’ নতুন নাটকটি মঞ্চে আনছে নাট্যবেদ নামের একটি সংগঠন। নতুন নাটক ‘বাঘ’ প্রসঙ্গে নাট্যকার নাসরীন মুস্তাফা বলেন, নাটকটির কাহিনী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে বান্দরবানে সরকারী সফরে গেলে বান্দরবানের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক নেতা বঙ্গবন্ধুকে একটি বাঘের বাচ্চা উপহার দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ঢাকায় ফিরে বাঘটি ঢাকা চিড়িয়াখানায় দান করেন। বাঘটি আপন মনে চিড়িয়াখানায় বড় হতে থাকে। পাকিস্তানের প্রেতাত্মারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর এই দেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় বাঘটিও ওদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। বাঘটিকে বন্দী করে রাখা হয়। কষ্ট দেয় নানা ভাবে। সেই ঘটনা অবলম্বনে নাটকটির কাহিনী এগিয়েছে। হঠাৎ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নাটক কেন? এ প্রসঙ্গে নাসরিন মুস্তাফা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে দর্শকদের জন্য নাটকটি। নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, রাজনৈতিক দর্শন, তিনি যে বাঙালী জাতির মুক্তির দূত হয়ে এসেছিলেন, তাই এ নাটকের মাধ্যমে বলতে চেয়েছি। আমি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখালেখি করি সেই ছোট্ট বেলা থেকেই। আমার লেখা গল্প ‘রাজাকারের আংটি’, পরবর্তীতে নাট্যরূপ দেই। সায়েম সামাদের নির্দেশনায় নাটকটি মঞ্চস্থ হয় শিশু একাডেমিতে। নাটকটি ৪টি বিভাগে অগ্রণী ব্যাংক শিশুনাট্য প্রতিযোগিতায় সেরা পুরস্কার পেয়েছিল। পরবর্তীতে পদাতিক নাট্য সংসদ নাটকটি পথনাটক হিসেবে ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে প্রদর্শনী করে। ঢাকার মঞ্চে আমার তিনটি নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। লোক নাট্যদল করছে ‘লীলাবতী আখ্যান’, পদাতিক নাট্য সংসদ করছে ‘জনমাংক’, নাট্যবেদ করছে ‘কমলা কান্ত’, আর নাট্যদল দৃশ্যকাব্য করবে ‘বাঘ’। ‘বাঘ’ নাটকটির মঞ্চে আনার পেছনে সমস্ত কৃতিত্বই ড. আইরিন পারভীন লোপা আপার। নাটকটি রেডিওতে প্রথম প্রচার হয়। এতে অভিনয় করেছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম মহসীন। তিনি নাটকটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তখন লোপা আপা গল্পটি শুনে মঞ্চ নাট্যরূপ দিতে বলেন। নির্দেশনায় ড. আইরীন পারভীন লোপা। সাম্প্রতিক ব্যস্ততা প্রসঙ্গে নাট্যকার নাসরীন মুস্তাফা বলেন এখন তিনটি নাটক লেখার কাজ চলছে। এর মধ্যে রয়েছে মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আরও একটা নাটক লিখছি, নাম এখন না হয় না-ই বলি। কবি বিজয় সরকারের জীবনী নিয়ে একটি, মহাকবি ও বিজ্ঞানী ওমর খৈয়ামের জীবনী নিয়ে লিখছি। এ ছাড়া চট্টগ্রামের বিবর্তন মঞ্চে আনছে মুক্তিযুদ্ধের আর একটি নাটক ‘কুটে কাহার’। লোক নাট্যদলে নির্মাণাধীন স্যার জগদীশ চন্দ্রবসুকে নিয়ে লেখা নাটক ‘জগদীশ’। নিজের পারিবার প্রসঙ্গে নাসরিন মুস্তাফা বলেন অভিনেতা স্বামী সায়েম সামাদ, দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে এ লেভেল করল এবার। ছোট মেয়ে অষ্টম শ্রেণীতে পড়ছে। এই নিয়ে সুখের সংসার নাসরীন মুস্তাফার। প্রতিনিয়ত আরও ভাল ভাল নাটক রচনা করতে চান। বাংলা নাটককে নিয়ে যেতে চান অনন্য উচ্চতায়। বাংলাদেশের গুণী এই নাট্যকারের জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।
×