ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিয়োগকারীদের আন্দোলন নিয়ে কমিশনের প্রশ্ন

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ১ আগস্ট ২০১৯

বিনিয়োগকারীদের আন্দোলন নিয়ে কমিশনের প্রশ্ন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রাস্তায় বিনিয়োগকারীদের বিক্ষোভ ও মিছিল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী। ১০-২০ বিনিয়োগকারী দিয়ে বিক্ষোভ করানোর নেপথ্যে নায়ক রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। যাদের শেয়ারবাজারে কোন ভূমিকা নেই। এরা অযৌক্তিক কারণে রাস্তায় নেমে মিছিল করে। বুধবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, আপনি আপনার গোডাউনে আলু তুলেছেন, বন্যায় বাজার দরে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। কয়েক হাজার টন মজুদ করেছেন। সেটি ২০ টাকা থেকে ১৮ টাকা কেজিতে নেমেছে। এতে গোডাউনের আলু কি উধাও হয়ে গেছে। এই আলু যখন নষ্ট হয়ে যায়, তখন কি কেউ রাস্তায় মিছিল করে। কেউ তো সেটা করে না। সুতরাং শেয়ারবাজার নিয়ে মিছিলের বিরুদ্ধে আপনাদের অবস্থান কি? আপনারা কি এই ধরনের মিছিল চান? তিনি বলেন, আমরা কি এই বিনিয়োগকারীদের চাহিদার ওপর নির্ভর করে শেয়ারবাজার চাই। তাহলে ইস্যু ম্যানেজারদের দায়িত্ব কি? আন্ডার রাইটারদের দায়িত্ব কি? তাহলে কি করে আমরা অর্থনীতিকে বেগবান ও শক্তিশালী করব? কি করা যায় আমাদের? এভাবে একটি অর্থনীতির পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে আমাদের। যে দেশের ব্যাংকের মধ্যে তারল্য সঙ্কট, আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারবে কিনা- তা নিয়ে অনাস্থা তৈরি হয়েছে। সারাদেশে যখন অর্থনীতির এরকম একটি অবস্থা বিরাজ করে, সেখানে শেয়ারবাজারে তারল্য সঙ্কটের জন্য কমিশনকে দায়ী করা হয়। কিন্তু কেন? গত বছর এডি রেশিও বাড়ানো হয়েছে, এর জন্য তো আমরা দায়ী না। ব্যাংকের টাকা ফেরত দিতে হয় না, এজন্যতো আমরা দায়ী নই। এই সঙ্কটতো আমরা তৈরি করিনি। এডি রেশিও আমরা বাড়াইনি। বিটিআরসির কারণে গ্রামীণফোনের দাম ৪৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় নেমে এসেছে- এ জন্য তো আমরা দায়ী নই। পিপলস লিজিং অবসায়নে যাবে, সেজন্য কি আমাদের দায় আছে? এসবের কারণে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কিন্তু মিছিল করা হলো আমাদের বিরুদ্ধে। কি চান আপনারা? কি ভূমিকা আপনারা পালন করেছেন? কারা এইসব মিছিল করিয়েছে? আমরা কি ১০-২০ বিনিয়োগকারীর ওপর শেয়ার বাজারের ভাগ্য ছেড়ে দিতে পারি। এর নেপথ্য নায়কেরা কি তাদের রাস্তায় নামিয়ে দেয়নি বলে প্রশ্ন রাখেন নিজামী। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা তো কাউকে বিনিয়োগ করতে বলিনি। মঙ্গলবারের পত্রিকায় দেখলাম বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে এসেছে। কি হলো শেয়ার বাজারের? কিন্তু তার দুদিন আগে ২৭ হাজার কোটি টাকা উধাও, নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতি আস্থা নেই, পদত্যাগ করতে হবে ইত্যাদি নিউজ দেখিছি। দুদিন পরেই আস্থা কিভাবে ফিরে আসে। এটাই হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমের পরিপক্বতার অভাব। দু-একটি পত্রিকা ইতিবাচক। অধিকাংশ পত্রিকার রিপোর্টে পরিপক্বতার বালাই থাকে না। এদেশের একটি আইপিওতে ৪০ গুণ আবেদন জমা পড়ে। আমরা কি এই আবেদনের জন্য বলেছি। এরপরে লেনদেনের শুরুতেই ১০ টাকার শেয়ার ৪০ টাকায় বিক্রি হয়। এর ২-৬ মাস পরে হয়তো ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হয়। এবার মিছিল শুরু হয়ে গেল। কে বলেছে আপনাকে আইপিওতে আবেদন করতে। কিন্তু দাম যখন বাড়তেছিল, তখন আপনি কোথায় ছিলেন? আপনিতো কৌশলে বিনিয়োগকারী নন। অথবা আপনি লোভের ব্যবসায় সেখানে বিনিয়োগ করেছেন। আমরা তো বলছি শেয়ার বাজার ঝুঁকিপূর্ণ। কাউকে তো আহ্বান করি না। যার বুঝ জ্ঞান নেই, তার শেয়ার বাজারে না আসাই ভাল বলে যোগ করেন তিনি।
×