ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উদ্বোধনের অপেক্ষায়

প্রকাশিত: ০৯:১১, ২৮ জুলাই ২০১৯

 উদ্বোধনের অপেক্ষায়

বাংলাদেশের জন্য সুসংবাদ বৈকি। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জ্বালানি তেল স্থাপনার কাজ শেষ হয়েছে। এখন উদ্বোধন শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হওয়ার অপেক্ষায়। প্রথম বৃহত্তম জ্বালানি তেল স্থাপনা রয়েছে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জ্বালানি সরবরাহ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে মংলা সমুদ্র বন্দরে দ্বিতীয়টি নির্মাণ করা হয়েছে। মংলা তেল স্থাপনা বা ‘মংলা অয়েল ইনস্টলেশন’ নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই নির্মিত হয়েছে। এ কেন্দ্রে মজুদ ও সংরক্ষণ করা হবে সকল ধরনের জ্বালানি তেল। আর এখান থেকে দেশে-বিদেশে বাণিজ্যিক জাহাজসহ সকল প্রকার নৌযানে জ্বালানি সরবরাহ করা হবে। এছাড়া দেশের উত্তর-দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত শিল্প প্রতিষ্ঠান পাবে জ্বালানি তেলের সুবিধা। চালু হওয়ার পর বাণিজ্যিক জাহাজসমূহের জ্বালানি তেলের সঙ্কট নিয়ে চলমান বিড়ম্বনা দূরীভূত হবে। একই সঙ্গে দেশের উত্তর-দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জ্বালানি তেলের সঙ্কট অনেকটাই কমবে। চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় তিনটি তেল বিপণন কোম্পানি পদ্মা, মেঘনা, যমুনার প্রধান স্থাপনা অবস্থিত। বর্তমানে দেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকায় তেল মজুদাগার বাড়ানো জরুরী হয়ে পড়ে। সে কারণে মংলা বন্দরে স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। তাছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এটি একটি বিকল্প স্থাপনা হিসেবেও কাজ করবে। কোন কারণে চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে মংলার স্থাপনা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে জ্বালানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। মংলা স্থাপনা থেকে ‘কোস্টাল ট্যাঙ্কারে’র মাধ্যমে দৌলতপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল ডিপোসমূহ এবং পাওয়ার প্ল্যান্টসহ এ অঞ্চলের শিল্প প্রতিষ্ঠানে জ্বালানি তেল সরবরাহ সহজতর হবে। ফলে দেশের উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলে জ্বালানি তেলের চাহিদা বহুলাংশে পূরণ করা সম্ভব হবে। তদুপরি মংলা বন্দরে আসা বিদেশী জাহাজে ‘বাঙ্কারিং’-এর মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা যাবে। এছাড়াও সহজে জ্বালানি তেল প্রাপ্তির ফলে মংলা বন্দরে আগত দেশী-বিদেশী জাহাজ, ইপিজেড, বেজাসহ মংলা বন্দর শিল্প এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে লাভবান হবে এবং তাদের কার্যক্রমে ব্যাপক গতিশীলতা সঞ্চার করা যাবে। বিশ্বের সকল বন্দরে বাঙ্কারিং সুবিধা রয়েছে। কিন্তু আঞ্চলিকতার শিকার হয়ে এতদিন মংলা বন্দরে তেল ডিপো না থাকায় বন্দর অনেকটা মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হওয়াসহ মাদার ভ্যাসেল কোম্পানি, শিপিং এজেন্টসহ সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসায়ীকে নানা বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়েছে। জ্বালানি তেলের অভাবে অনেক বাণিজ্যিক জাহাজ এ বন্দরে দিনের পর দিন আটকে থাকার ঘটনাও ঘটেছে। এতে যেমন অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হয়েছে, তেমনি সময় অপচয়সহ নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। এই স্থাপনা চালু হলে মংলা বন্দরে বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন ও কাজের গতি অনেক বাড়বে।
×