ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাফর ওয়াজেদ

রসাতলে যাবার পথে বাড়ানো পা

প্রকাশিত: ১১:১০, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 রসাতলে যাবার পথে বাড়ানো পা

গভীর মনোযোগসহকারে পর্যবেক্ষণ করলে মনোবিজ্ঞানীরা স্পষ্ট হবেন যে, বিএনপি নামক দলটির চিন্তা-ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি, রাজনৈতিক কৌশল বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। সে কারণেই তাদের কার্যকলাপও আজ বিকৃত। যুক্তি-তর্কের কোন ধারই তারা ধারে না। সভ্য সমাজকে তারা পরোয়া করে না। তারা জানে, সভ্য সমাজে যুক্তি হচ্ছে সবচেয়ে বড় শক্তি। মতবিরোধ ঘটলে যুক্তি-বিচারের দ্বারা বিরোধ মেটায় সে সমাজ। কিন্তু বিএনপির কাছে এসবের কানাকড়ি মূল্য নেই। তাদের গায়ের জোর মাথার জোরকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। আর তাই বিএনপিতে ঘোর দুর্দিন উপস্থিত। পতনের ঘোরে জাগরণের আকাক্সক্ষা স্তিমিত প্রায়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই তাদের রাজনীতি জিনিসটি বড় সিধে নয়; সে ক্ষমতালোভী, সুযোগসন্ধানী, ফন্দিবাজ, দুর্নীতি ও লুটে সিদ্ধহস্ত। ন্যায়-অন্যায় বোধটা ঢিলে। বাংলাদেশকে পাকিস্তানী ধারায় পরিচালনার মাধ্যমে যতটা স্বস্তি পায়, মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনলে তত বেশি জ্বলে পিত্তি। এটা জনগণের কাছে স্বতঃসিদ্ধ যে, এদেশে বিএনপি যতখানি অশান্তির সৃষ্টি করেছে, দেশের ক্ষতিসাধনে তৎপর রয়েছে তারও বেশি। বিএনপি যখন দলে-বলে কোন কাজে লিপ্ত হয়, তখন অনেক সময় তাদের কান্ডজ্ঞান রহিত বলে মনে হয়। গুন্ডা, পান্ডা, সন্ত্রাসী, জঙ্গী সবই তাদের করায়ত্তে। খেয়ালখুশি মতো তারা সেসবের ব্যবহারও করেছে। এই সমাজ ও দেশবিরোধীরাই বিএনপির কাছে ‘হিরো’ হিসেবে গণ্য হয়ে আসছে প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই। রাজনীতিকে বিরাজনীতিকরণের কাজটি শুরু করে দলটির প্রতিষ্ঠাতা ক্ষমতা দখলকারী সামরিকজান্তা শাসক। ‘রাজনীতিকে রাজনীতিবিদদের জন্য কঠিন’ করে তোলার ঘোষণা দিয়ে সমাজে দুর্নীতি, লুটপাটের বিস্তার ঘটিয়ে কলুষতার বিষবাষ্প সর্বত্র ছড়ানো হয়েছে। রাজনৈতিক হঠকারিতা, দল ভেঙ্গে দলগড়া, যুব ও ছাত্র সমাজকে সকল প্রকার অসাধুপ্রবণতায় আবিষ্ট ও মোহগ্রস্ত করে রাখা, খুনের মহড়া থেকে খুনখারাবিতে সিদ্ধহস্ত করে তোলার কাজটি সুনিপুণভাবে করা হয়েছে। শিক্ষার নামে দেশময় ঘটানো হয়েছে কুশিক্ষার বিস্তার। ছাত্রদের হাতে বইখাতা, কলমের পরিবর্তে অস্ত্র তুলে দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অস্ত্রের অধীনে রাখার কাজটিও করা হয়েছে ছাত্রনামধারীদের মাধ্যমে। সামরিক জান্তা শাসকের জানা ছিল, শিক্ষা মানুষের আত্মীয়তাবোধকে প্রসারিত করে। আপন পরিবার-পরিজন ছাড়িয়ে পাড়া-প্রতিবেশীতে, প্রতিবেশী ছাড়িয়ে নিকটস্থ লোকালয়ে, লোকালয় ছাড়িয়ে চতুষ্পার্শস্থ অঞ্চলে, অঞ্চল অতিক্রম করে সমগ্র দেশে এবং দেশ ছাড়িয়ে সমগ্র দেশে এবং বিদেশে। শিক্ষিত মনের কাছে অনাত্মীয় নয় কেউ। আর তাই শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছিল তাদের কার্যকলাপ। জান্তা শাসনামলে প্রায়শই বন্ধ হয়ে যেত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো, বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়। তারা বুঝত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা জেগে উঠলে সিংহাসন বা তখতে তাউস উল্টে যাবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। রাজনীতির যে একটা গঠনমূলক ভূমিকা রয়েছে, সে কথা জান্তারা বিশ্বাস করত না। বরং বিশ্বাস করত জনগণের বিচ্ছিন্ন হবার মধ্যে ক্ষমতার কর্তৃত্ব বজায় রাখা সহজ। একতাবদ্ধ হলে বিপদ ঘনিয়ে আসে প্রতিমুহূর্তেই। অতএব দল ভেঙ্গে বহু দলে পরিণত করার কাজটিতেই জিয়া-এরশাদ সমগ্র দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিলেন। এই যে ‘বহুদলীয় গণতন্ত্র’ নামক প্রবাদ বাক্যটি জিয়ার ঘাড়ে চাপিয়ে তার প্রবক্তা হিসেবে জাহির করা হয়। তা আসলে রাজনৈতিক দলগুলোকে টুকরো টুকরো করে তাদের শক্তি-সামর্থ্য ক্ষীণ করে দেয়ার নামান্তর। একতাবদ্ধ থাকলে দল বহু শক্তি অর্জন করে। আর সেই শক্তিবলে ক্ষমতা দলখকারীকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বেগ পেতে হয় না। আর জিয়া যে দল গঠন করেন, তা বিদ্যমান দলগুলোকে ভেঙ্গে এবং গ্রাস করে। নতুন কোনকিছুই তার সৃষ্টি নয়। বরং নানা লোভ, টোপ, উপকরণ, ক্ষমতার অংশীদার ইত্যাকার মাধ্যমে দলে ভিড়িয়েছেন ‘বারো কুতুব’দের। পাকিস্তানী চেতনাধারী, স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, গণদুশমন, সন্ত্রাসী, লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, গণহত্যাকারী ইত্যাদি বারোভাজাদের তিনি এক ঝুড়িতে রেখে যে দল গঠন করেন সেনা ছাউনিতে বসে তাতে নীতি-নৈতিকতার লেশমাত্র ছিল না। কর্মীদের শিক্ষা দেয়া হয়েছে কাজ করতে হবে দেশের হয়ে নয়, দলের হয়ে। দলের মধ্য থেকেই ‘দেশসেবা’ করার ফর্মুলাও তারা তৈরি করেন। এককালে বাংলাদেশ ছিল বারোভূঁইয়ার দেশ। জিয়ার সৃষ্ট দল দেশজুড়েই বারোভূঁইয়া তৈরি করে সামন্ত যুগের প্রবর্তন ঘটায়। বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতারা সেই পঁচাত্তর পরবর্তী দল গঠনের পর থেকেই হয়ে ওঠেন একেকজন সামন্ত প্রভু বা ফিউডাল লর্ড। যাদের প্রত্যেকের একটি ‘প্রাইভেট সেনা’ থাকত। নানা মত ও পথের অনুসারীদের নিয়ে গড়া জিয়ার দলের হঠাৎ বনে যাওয়া নেতারা নিজেদের বেশ ‘প্রগতিশীল’ দাবি করতেন। বাম রাজনীতির ধারক-বাহক বনে যাওয়ারা জান্তাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে বর্তে যেতেন। চীনাপন্থীরা তো তার বক্ষপুটে আশ্রয়ই নিয়ে ফেলে। আর মস্কোপন্থীরা জিয়ার ‘খাল কেটে কুমির আনার’ প্রকল্প বাস্তবায়নে ঝুড়ি-কোদাল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। খুনী শাসককে তারা ‘বিপ্লবী’ স্বীকৃতি দিয়ে এমন ভাষ্য সর্বত্র ছড়াতে থাকে যে, ‘মহাবিপ্লব’ সাধিত হতে যাচ্ছে। জিয়ার সঙ্গে যোগ দেয়া নেতারা আচার-ব্যবহারে স্পষ্ট করতে চাইতেন যে, তারা প্রত্যেকেই একেকটি সামন্ত নৃপতি। তারা যাকে দল এবং তাদের বাম মার্গীয় ভাষায় ‘ক্যাডার’ হিসেবে অভিহিত করতেন, তারা ছিলেন তাদের সেই ‘সেনা’। আর সে ‘সেনার’ একমাত্র কাজ ছিল মারামারি, খুনোখুনি। ফলে বারোভূঁইয়ার দেশটি উন্নীত হয়েছিল বারোভূতের দেশে, বারো লুটেরার দেশে। এই সামন্ত নৃপতিরা ক্ষমতার দম্ভে দিনকে রাত আর রাতকে দিনে পরিণত করেছিলেন। জিয়ার পোষ্য এসব নেতা ভাবতেন, আস্ফালনেই বীরত্ব জাহির হয়। তাদের বশংবদ গণমাধ্যম বুঝত, চাঞ্চল্য সৃষ্টিতেই কৃতিত্ব প্রকাশ পায়। বিএনপি এবং তাদের নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র উভয়েই অতিমাত্রায় মুখর ছিল বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার বিরোধিতা করায়। আর স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের আরও কাছে টেনে নিয়ে তাদের অতীত ঢেকে রেখে নতুন ‘মেকাপে’ দৃশ্যমান করে তোলা। দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হতে পারে, এমনকি জাতীয় সংহতি নষ্ট হতে পারে এমন সব কর্মকান্ড প্রকাশ্যে ও খোলামেলা তুলে ধরতে তাদের জুড়ি ছিল না। দেশের ধূলিকণাটিও তাদের কাছে ছিল না পবিত্র। বরং দেশের কোন অর্জনেরই ছিল না কানাকড়ি মূল্য তাদের কাছে। তাই এই একুশ শতকে এসেও বাস, ট্রেন, লঞ্চ জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে, রেললাইন উপড়ে ফেলে, বৃক্ষ কর্তন করে এবং জীবন্ত মানুষ ও পুলিশকে পেট্রোলবোমা মেরে হত্যার মধ্য দিয়ে উল্লসিত হতো। সরকারের পতন ঘটাতে আন্দোলনের নামে তারা নাশকতা, নির্মমতা, জঙ্গী তৎপরতায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত হয়ে অরাজক ও অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে দেশ ধ্বংসের আয়োজনে অনেকটা পথ এগিয়েছিল। দেশের শত শত কোটি টাকার সম্পত্তি বিনষ্ট করেও সামান্য অনুশোচনায় তাড়িত হয়নি। তাদের বিরোধিতা মূলত স্বাধীন বাংলাদেশের সঙ্গে। দেশই তাদের শত্রু। কারণ ‘পাকিস্তান ভেঙ্গে’ দেশ এনেছে আওয়ামী লীগ। যা মুছে ফেলতে তৎকালীন সময় থেকে তাদের নানান অপতৎপরতা অব্যাহত। মারামারি, হানাহানি, খুনোখুনিকে কেউ সম্মানের চোখে দেখে না। কিন্তু বিএনপি গোড়া থেকে সেই চর্চাই করে এসেছে। ছুরি মেরে, গুলি ছুড়ে নির্বিচারে হত্যা কাপুরুষতার চূড়ান্ত। এর মধ্যে বীরত্ব নেই লেশমাত্র। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এবং তদীয় পুত্র সেই চর্চাকেই প্রাধান্য দিয়েছে। তাই বিএনপি ক্রমশ অধপতনের দিকেই ধাবিত হয়েছে। বিএনপি তার রাজনৈতিক চরিত্র বহু আগেই খুইয়েছে। সম্ভ্রান্ত জীবন চর্চার অভাবে বিএনপির ব্যবহারটা হঠাৎ ‘গজানো ভদ্দরলোকে’র মতো এখনও। তাই চেঁচাচ্ছে, হাত পা ছুড়ছে। আস্ফালনটাই বেশি। শোভন সুন্দর মার্জিত রুচির অভাব। তার শক্তির মূলে ওই চাছাছোলা আচরণ। যা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে চাওয়ার মতোই। ২০০১ সালে বিএনপি নামক দলটি ক্ষমতায় এসে যেভাবে পাকিস্তানী কায়দায় সংখ্যালঘু নির্যাতন, ধর্ষণ, হত্যা করেছে, লুটপাট, অগ্নিকান্ড চালিয়েছে, তাতে সে নিজেকে পাকিস্তানী হানাদারদের সমতুল্যে দাঁড় করাতে পেরেছে। আর এই সঙ্গে সে সঙ্গী হিসেবে পেয়েছে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী, গণহত্যাকারী, ধর্ষকের দল জামায়াতে ইসলামীকে। এই দু’দল মিলে দেশটাকে উচ্ছন্নে নিয়ে যেতে হেন অপকর্ম নেই, যা সাধন করেনি। সেসব এদেশবাসী ভুলে যায়নি; যেমন যায়নি ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ‘আন্দোলন’-এর নামে মানুষ হত্যাসহ নাশকতামূলক কর্মকান্ড। এদেশে জঙ্গীবাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও বিস্তারে বিএনপি-জামায়াত এতই কামিয়াব হয়েছিল যে, গ্রেনেড হামলা চালিয়ে স্বয়ং শেখ হাসিনাকে জনসমাবেশে হত্যা করতে চেয়েছিল। আর এই ঘটনার পরিকল্পনা, অর্থায়ন সবই করেছে একালের দুর্বৃত্ত হিসেবে খ্যাত জিয়াপুত্র। আজ প্রশ্ন উঠতে পারে, বিএনপি কি একটা দল? বিএনপি একটি দুর্নীতি, খুনখারাবি, দেশ ধ্বংসকারী শ্রেণীর প্রতিভূ। ঢেউ যেমন সমুদ্র নয়, বিএনপি তেমনি দল নয়। বিপরীতে আওয়ামী লীগ একটা দল শুধু নয়, আওয়ামী লীগ সমগ্র দেশ। আওয়ামী লীগেই সমগ্র বাঙালী জাতি। একে ছোট করতে যাওয়া আত্মঘাতী দুর্বুদ্ধি। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠিত হয়েছে। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে দেশকে এগিয়ে নেয়ার সময় বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। আর এই হত্যাকারীরা মিলে জিয়ার নেতৃত্বেই দেশ দখল করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছিল। ‘মানি ইজ নো প্রবলেম’ ধ্বনি দিয়ে দেশের সম্পদ লুটপাট করার আনজাম তৈরি করে দিয়ে লুটেরা ধনিক শ্রেণী গড়ে তুলেছিল জিয়া। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত তার স্ত্রী-পুত্র লুটপাটকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে। লুটপাটে পুরো পরিবারের মতো বিএনপি নেতা-কর্মীরাও মাঠে নেমে যখন যেখানে যা পেয়েছে, তাই করেছে আত্মসাত। সেই ধারাবাহিকতায় জিয়ার স্ত্রী ও পুত্র লুটেরার ভূমিকায় নেমে এতিমদের অর্থ আত্মসাতেও পিছপা হয়নি। দেশকে বিরোধী রাজনৈতিক দলমুক্ত করার জন্য হত্যা, জেল, জুলুম, হুলিয়া, বাড়ি-ঘর উচ্ছেদ ইত্যাকার সব ধরনের অপকর্মকেই প্রাধান্য দিয়েছে। জিয়ার স্ত্রী-পুত্ররা উচ্চশিক্ষিত হতে পারেননি। তাই অর্ধশিক্ষিতদের টেনে এনে দলের নেতা বানিয়েছেন। হাওয়া ভবন নামক লুটেরাদের ভবন বানিয়ে ‘মি. টেন পার্সেন্ট’ খেতাব পেয়েছেন। খালেদা-তারেক আইনের বিচারে দুর্নীতিগ্রস্ত। দুজনেরই সাজা হয়েছে। একজন জেলে, অপরজন বিদেশে পলাতক। দলের শীর্ষ দু’জনের এই করুণ অবস্থা হওয়ার পেছনে তাদের অতীত কার্য, পাপ, তাপ, অভিশাপ কম নয়। শেখ হাসিনাকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য শেখ হাসিনাবিদ্বেষী কামাল হোসেনকে ‘ভাড়ায় খাটা’ হিসেবে এনেও সুবিধে করতে পারছে না। নির্বাচনে জামানত হারিয়ে তাদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। এখন তাই দল নেতারা আবোল তাবোল বকে যাচ্ছে। বিএনপি আবারও ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল। কিন্তু এ জন্য জনগণের ওপর নয় বিদেশী কূটনীতিকদের কাছে ধরনা দিয়ে আসছে। কিন্তু তাতে কোন ফল আসবে না। একাদশ সংসদ নির্বাচনে হেরে যাওয়া বিএনপি তার অস্তিত্বকে রক্ষা করতে পারছে না। জনগণের অভিশাপ আর নিজের অর্জিত পাপ-তাপ মিলেমিশে একটি অভিশপ্ত দলে পরিণত হয়েছে। ড. কামাল হোসেন স্যালাইন দিয়েও বাঁচিয়ে রাখতে পারবেন কিনা সন্দেহ। খালেদা-কামাল দু’জনেই ব্যর্থকাম। তবে এই ব্যর্থকাম মানুষরা যে কোন অঘটন ঘটাতে পারে। কামাল হোসেন বিএনপিকে নিয়ে যত আন্তরিকই হোক না কেন, দলটার মুমূর্ষু অবস্থা থেকে উদ্ধার নয়, বরং সলিল সমাধি ঘটানোর ক্ষেত্রটাই প্রস্তুত করছেন। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নিয়ে হারিয়ে ফুরিয়ে যাওয়ার পথে যাচ্ছে। বিএনপি ধুতুরা গাছ ও ফুল হয়ে ফুটে থাকবে। লতায়-পাতায় যার বিষ আর বিষাক্ত নিঃশ্বাস। নিজস্ব রাজনীতি ছেড়ে জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আর যাই হোক রাজনীতিতে দৃঢ় অবস্থান নিতে পারছে না বিএনপি। রসাতলে যাওয়ার সমস্ত আয়োজন নিজেরাই করেছে। কামাল হোসেনরা এই লাশ বহন করবে না কখনই।
×