ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভেড়া পালনে স্বাবলম্বী ইমান আলী

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

ভেড়া পালনে স্বাবলম্বী ইমান আলী

দেশে ছাগলের বিকল্প হিসেবে ভেড়া পালন শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকে। এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যশোর অঞ্চলে ভেড়া পালন। এরই মধ্যে অনেকই আবার ভেড়া লালন-পালনে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। তেমনই একজন যশোরের চৌগাছা উপজেলার হিজলী গ্রামের দরিদ্র ইমান আলী। ইমান আলী জানান, ভেড়া সব ধরনের খাবার খায়। এদের সাধারণত অসুখ-বিসুখ হয় না বললেই চলে। বছরে ৩ বার বাচ্চা দেয়। এরা একবারে ৩-৪টি বাচ্চা প্রসব করে থাকে। দেড় থেকে দু’মাসের বাচ্চা আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে। ফলে কম সময়ে অল্প পুঁজিতে লাভবান হওয়া যায়। তিনি আরও জানান, ২০১০ সালে মাত্র পাঁচটি ভেড়া দিয়ে লালন-পালন শুরু করেন তিনি। ৫ মাস পর এরা ৩টি খাসি ও ৪টি বকরি বাচ্চা দেয়। প্রতি মাসে গড়ে ৮-১০ হাজার টাকার ভেড়া বিক্রি করেন তিনি। এখন তার খামারে ৩৭টি ভেড়া রয়েছে। বর্তমানে ইমান আলী ভেড়াদের জন্য আলাদা ঘর, নিরাপত্তা প্রাচীর করেছেন। খামারি ইমান আলী আরও জানান, ভেড়া পালনে বাড়তি সময় ব্যয় করতে হয় না। সকালে একবেলা ক্ষেত-খামারে কাজ করেন আর বিকেলে ভেড়া চড়ান। স্থানীয় ভাষায় ভেড়াকে গাড়ল বলে ডাকা হয়। ইমান আলী জানান, গাড়ল পালন করে বছরে এক থেকে দেড় লাখ টাকা বাড়তি আয় করা সম্ভব। এ ছাড়া তার মতো অন্যরাও আস্তে আস্তে গাড়ল (ভেড়া) পালনে এগিয়ে আসছেন। তেমনি একজন চৌগাছা পৌরসভার কর নির্ধারক সিংহঝুলী গ্রামের শাহিনুর রহমান শাহিন। তিনি জানান, তার শাশুড়ি হাট থেকে তাকে কয়েকটি ভেড়া কিনে দিয়েছিলেন। সেই থেকে এর দেখাশোনা করছেন। ওকে বাড়তি কোন খাবার দিতে হয় না। চৌগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ সালের এক জরিপের তথ্য অনুযায়ী চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা গ্রামের লিটু মিয়া ও হুমায়ুন কবির, কেসমতখানপুর এলাকার নূর ইসলাম, বড়খানপুরের ইসলাম সর্দার, সোহেল রানাসহ অনেকেই ভেড়া পালন করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। চৌগাছা উপজেলার গাড়ল (ভেড়া) রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজবাড়ী, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মোক্তার হোসেন বলেন, ‘ভেড়া হচ্ছে একটি উপজাত। এটি মেহেরপুর জেলায় প্রথম পালন শুরু হয়। এক একটি ভেড়া পাঁচ বছরের মধ্যে ৩০-৩৫ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। আর এর মাংসও বেশ পুষ্টিকর।’ তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দিনে ছাগলের বিকল্প হিসেবে ভেড়া পালন হবে।’ -সাজেদ রহমান, যশোর থেকে
×