ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যমুনার এক চর থেকে আরেক চরে অটোরিক্সা

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ২৬ জানুয়ারি ২০১৯

 যমুনার এক চর থেকে আরেক চরে অটোরিক্সা

যমুনার চরগ্রামের পথঘাট বালিয়াড়ি। তলদেশ ভরে গিয়ে নদী শুকিয়ে যাওয়ার পালা শুরু হয়েছে অনেক আগে। একের পর এক চর পড়ে যমুনাকে আর চেনাই যায় না। যতদূর চোখ যায় ধু-ধু বালি। এর মধ্যেই চরগ্রামে উন্নয়নের ছোঁয়া পড়েছে। যমুনা পাড়ের মানুষ প্রকৃতির দুর্যোগকে মোকাবেলা করেই টিকে আছে। চরগ্রামের মানুষ আরও কঠিনভাবে অস্তিত্ব টিকিয়ে থাকার লড়াই করছে নিরন্তর। গত ক’বছরে যমুনা তীরের বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার অধিকাংশ চরের সড়ক উন্নত হয়েছে। কোথাও পাকা সড়ক নির্মিত হয়েছে। দূর অতীতে যমুনায় চরের সংখ্যা ছিল কম। নদীকেন্দ্রিক যোগাযোগের বাহন ছিল শুধু নৌকা। এই অবস্থা পাল্টাতে শুরু করে সত্তরের দশকের শেষ ভাগে। আশির দশকের মধ্যভাগে ব্রহ্মপুত্র পদ্মা ও মেঘনা অববাহিকায় নদীর তলদেশ ভরাট শুরু হয়। পানি প্রকৌশলীদের ভাষায় এই অবস্থাকে বলা হয় ‘সিল্টেশন’। এর প্রভাব পড়ে দেশের সকল নদীতে। বেশি প্রভাব পড়ে যমুনা ও পদ্মায়। নিকট অতীতে যে নদীগুলোর মূল পয়েন্টে গভীরতা ছিল বেশি সেখানেও তা কমে যায়। দ্রুতই চর পড়তে শুরু করে। অতীতের নৌযানকেন্দ্রিক নদীর জীবন ক্রমেই স্থলের যানবাহনকেন্দ্রিক চরের জীবনে পরিণত হতে থাকে। বর্তমানে শুকনো মৌসুমে যমুনা পাড় ও যমুনার ভেতরের বেশিরভাগ লোকালয় চরগ্রাম। বাঁধের ধারের চরগ্রামে পাকা সড়ক নির্মিত হয়েছে। বিদ্যুত পৌঁছেছে এসব চরগ্রামে। এলাকার উন্নয়নের প্রধান দুই ধারা (সড়ক ও বিদ্যুত) সৃষ্টি হওয়ায় বাকি উন্নয়ন এলাকার লোকজনের উদ্যোগেই হয়েছে। এই চরগুলোতে এখন ছোট যানবাহনের পাশিপাশি সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চলছে। চরের পথঘাট বালিচাপা পড়লে ও বালির গভীরতা কিছুটা বেড়ে গেলে পাইপ লাইনে পানি ছিটিয়ে যানবাহন চলাচল উপযোগী করা হয়। সিএনজি চালিত অটোরিক্সা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারে। কাজলার চরের আশরাফ আলী বললেন, চরে রাস্তা নির্মিত হওয়ার পর তিনি একটি অটোরিক্সা কেনেন। এরপর চরের বাঁধের ওপর তৈরি রাস্তা দিয়ে কিছুদিন যাত্রী পারাপরের পর এখন চরগ্রামে এসেছেন। চরেও প্যাসেঞ্জার বেড়েছে। একচর থেকে আরেক চরে পারাপারে এখন সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চলছে। একদা চরের বালির ওপর দিয়ে লোকজন হেঁটে চলাচল করতো। এখন উন্নয়নের ছোঁয়ায় চরের মানুষ সিএনজি অটোরিক্সায় চলাচল করছে। এতে একদিকে আয়ের নতুন পথ সৃষ্টি হয়ে দারিদ্র্য কমেছে। আরেকদিকে চরের মানুষ যোগাযোগের সময় কমিয়ে বাড়তি কাজের সংস্থান করতে পারছে। এতে তাদের জীবনমান উন্নত হচ্ছে। -সমুদ্র হক, বগুড়া থেকে
×