ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তেল পরিশোধন শিল্পে বিনিয়োগের প্রস্তাব সৌদি এ্যারামকোর

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ২২ জানুয়ারি ২০১৯

তেল পরিশোধন শিল্পে বিনিয়োগের প্রস্তাব সৌদি এ্যারামকোর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দক্ষিণ এশিয়াতে ভারতের পর এবার বাংলাদেশের তেল পরিশোধন শিল্পে বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে সৌদি এ্যারামকো। বিশে^র অন্যতম শীর্ষ তেল পরিশোধনকারী সৌদি আমিরের কোম্পানিটি বাংলাদেশে একটি তেল পরিশোধনাগার নির্মাণ করতে আগ্রহী। যা দিয়ে বাংলাদেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশেও রফতানি করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সোমবার বিদ্যুত, জ্বালানি এবং খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে এ্যারামকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ালিদ কে গেমলাস বিনিয়োগ প্রস্তাবটি নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে এ্যারামকোর তরফ থেকে জানানো হয় বাংলাদেশের চাহিদার দ্বিগুণ ক্ষমতার পরিশোধনাগার নির্মাণ করতে আগ্রহী তারা। ওই বৈঠকে এ্যারামকোকে জানানো হয়, বাংলাদেশে আরও ১০ মিলিয়ন টন বার্ষিক পরিশোধিত তেলের চাহিদা রয়েছে। যদিও বাংলাদেশ ১৫ লাখ টন তেল দেশে পরিশোধন করে। বাকি পরিশোধিত তেল আমদানি করে। এই তেল দেশে পরিশোধন করা সম্ভব হলে প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। বাংলাদেশ অনেক দিন থেকেই একমাত্র তেল পরিশোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারির ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দ্বিতীয় ইউনিট নির্মাণ করার চেষ্টা করছে। নানা সঙ্কটের কারণে পরিশোধনাগার নির্মাণ কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। সরকার চট্টগ্রামের পাশাপাশি পায়রা বন্দর এলাকায় আরও একটি পরিশোধনাগার নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। বৈঠকে এ্যারামকোকে বাংলাদেশের চাহিদা এবং পরিশোধন ক্ষমতা সম্পর্কে অবহিত করা হয়। এতে ওয়ালিদ কে গেমলাস বলেন, তারা অন্তত ২০ মিলিয়ন টন বার্ষিক ক্ষমতার পরিশোধনাগার নির্মাণ করতে আগ্রহী। প্রতিমন্ত্রী বৈঠকে এ্যামারকোকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে স্থিতিশীল। গত ১০ বছরে বাংলাদেশের বিদ্যুত এবং জ্বালানির উন্নয়নের জন্য ধারাবাহিকভাবেই প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার সরকার প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে আন্তরিক। এজন্য জ্বালানির চাহিদা রয়েছে। সঙ্গত কারণে বিশে^র বড় বড় দেশ এখন বাংলাদেশকে বিনিয়োগের অন্যতম ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করছে। জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ভারতের একটি অংশ ছাড়াও মিয়ানমার-বাংলাদেশ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি করতে পারে। বড় পরিশোধনাগার করে আমরা দেশের বাইরে পরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি করতে পারি। বিশে^র অনেক দেশই অন্য দেশ থেকে তেল এনে শুধু পরিশোধন করে বিক্রি করে থাকে। এর আগে ভারতের জ¦ালানি তেলের চাহিদা বিবেচনা করে এ্যারামকো দেশটিতে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে। মহারাষ্ট্রের রতœগিরি জেলায় শোধনাগার ও পেট্রোকেম প্রকল্পে ৫০ শতাংশ অংশীদারিত্ব কিনে নিয়েছে তারা। যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমন সৌদির বাণিজ্য সম্প্রসারণের চিন্তার মধ্যে এখন সৌদি কোম্পানিগুলো দেশের বাইরে প্রকল্প করার জন্য এগিয়ে আসছে। এজন্য দক্ষিণ এশিয়ার সম্ভাবনাময় দেশেও তারা বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসছে। বিশেষ করে সীমিত জ্বালানি সম্পদের দেশেও তারা বিনিয়োগ করতে চাইছে। এতে দেশগুলো যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হবে তেমনি সৌদি তার তেল বিক্রির ভাল বাজার পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
×