ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

২৩ বছর ধরে পানির বিল বকেয়া সিলেটের সবুজ বিপণি মার্কেটের

প্রকাশিত: ০৭:০০, ৫ জানুয়ারি ২০১৯

 ২৩ বছর ধরে পানির বিল বকেয়া সিলেটের সবুজ বিপণি মার্কেটের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২৩ বছর ধরে পানির বিল বকেয়া। তার পরও সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) পানির সংযোগ সেবা নিয়ে চলছে সবুজ বিপণি মার্কেট। নগরের জিন্দাবাজারের প্রাণকেন্দ্রে হলেও সিসিক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টির আড়ালে ছিল মার্কেটটি। এভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে সিসিকের প্রধান খাত হোল্ডিং ট্যাক্স, পানির বিল, ট্রেড লাইসেন্স ও বিলবোর্ড বাবদ পাওনা ১০০ কোটি টাকা। অথচ এসব বিল আদায়ে বছরের পর বছর কর্মকর্তারা ছিলেন উদাসীন। বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) অভিযানে নেমে সবুজ বিপণি মার্কেট কর্তৃপক্ষের এমন হেঁয়ালিপনা দেখে চক্ষু চড়কগাছ মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর। শুধু এ প্রতিষ্ঠান নয়, নগরের অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের কাছে যুগের পর যুগ ধরে বিল পাওনা সিসিকের। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আগের মেয়াদে দায়িত্ব পালন করলেও ২৯ মাস কারাভোগ করেন। কারাগার থেকে বেরিয়ে ছড়াখাল উদ্ধারে মনোযোগ দিলেও বিল আদায়ে উদ্যোগ নেননি। অবশ্য দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নগর উন্নয়নের দিকে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছেন মেয়র। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ও দলীয় প্রার্থীর প্রচারের বাইরে বেশি সময় দিয়েছেন নগর উন্নয়নে। আর এরই ধারাবাহিকতায় এবার সিসিকের ‘তহবিল বাড়াতে’ বকেয়া বিল আদায়ে অভিযান শুরু করেছেন মেয়র। গত বুধবার (২ জানুয়ারি) থেকে টানা অভিযান চালানো হচ্ছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে। বৃহস্পতিবার মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে নগরের বিভিন্ন মার্কেটে অভিযান পরিচালনা করে সিসিক। এ সময় বিভিন্ন গ্রাহক এবং প্রতিষ্ঠানকে বকেয়া বিল দ্রুত পরিশোধে হুঁশিয়ারি করা হয় এবং দোকানের বকেয়া বিল বাকি থাকায় নগদ ১০ হাজার টাকা ও চেকে প্রায় ১ লাখ টাকা আদায় করা হয়। প্রথম দিনে অন্তত ১০ লাখ এবং চেকে ৩ লাখ টাকা বকেয়া আদায় করা হয়েছে জানিয়েছেন সিসিকের প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মনসুফ আলী। সিসিক মেয়র বলেন, বিল না দেয়া ও বিল আদায় না করা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। এ অভ্যাস আমাদের পরিত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, সিসিক বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা নিলে বিল সময়মতো পরিশোধ করতে হয় আর সিটি কর্পোরেশনের মূল আয়ের খাতে বিপুল পরিমাণ বিল বকেয়া থাকার কারণে সিসিকের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় নগরবাসীকে নিয়মিত বকেয়া পরিশোধ করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, দ্রুত বকেয়া বিল পরিশোধ করা না হলে এখন থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে জরিমানাসহ বকেয়া বিল আদায় করা হবে। এজন্য সিসিক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে তিনটি টিম গঠন করা হয়েছে। এ টিমের সদস্যরা পর্যায়ক্রমে নগরের ২৭টি ওয়ার্ডে অভিযান চালাবেন। সিসিক সূত্র জানায়, সিসিকের মূল আয়ের খাত হোল্ডিং ট্যাক্স খাতে বকেয়া প্রায় ৬৭ কোটি টাকা, পানির বিলের বকেয়ার পরিমাণ ১২ কোটি টাকা, ট্রেড লাইসেন্স বাবদ বকেয়ার পরিমাণ ২০ কোটি টাকা এবং বিলবোর্ড বাবদ বকেয়ার পরিমাণ ১ কোটি টাকা। সিসিকের আয়ের এ চারটি মূল খাতেই বকেয়ার পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা। বার বার নোটিস দেয়া সত্ত্বেও বিল পরিশোধ করা হয় না। প্রধান আয়ের খাতগুলো স্থবির হয়ে পড়ায় সিসিকের উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে।
×