ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ জেলা মহাসড়ক উন্নয়নের উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ১৫ অক্টোবর ২০১৮

 টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ জেলা মহাসড়ক উন্নয়নের উদ্যোগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ জেলা মহাসড়ক উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। উদ্যোগটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার আন্তঃবাণিজ্য সম্প্রসারণ, পর্যটন শিল্পের বিকাশসহ উন্নত ও নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন হবে। এ জন্য ‘টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ জেলা মহাসড়ক (জেড-১০৯৯)-এর হাড়িয়াখালী থেকে শাহপরীর দ্বীপ অংশ পুনঃনির্মাণ প্রশস্তকরণ এবং শক্তিশালীকরণ’ নামের একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে খরচ হবে ৬৭ কোটি ৭৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আগামী মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপন করা হতে পারে প্রকল্পটি। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদতফর। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কক্সবাজার সড়ক বিভাগাধীন টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ জেলা মহাসড়কটির মোট দৈর্ঘ্য ১৩ দশমিক ৭০ কিলোমিটার। সড়কটির হাড়িয়াখালী হতে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫ দশমিক ১৫ কিলোমিটার অংশ ২০১১ সালের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়। বর্তমানে নবম হতে এগারো কিলোমিটার পর্যন্ত সড়ক বাঁধের অস্তিত্ব নেই। ফলে শাহপরীর দ্বীপের সঙ্গে টেকনাফের সড়ক যোগাযোগ বর্তমানে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধটি পুনঃনির্মাণ কাজ চলছে এবং বাঁধে মাটির কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। শাহপরীর দ্বীপে প্রায় ৪০ হাজার লোক বসবাস করে। পর্যটন কেন্দ্র সেন্টমার্টিন এবং শাহপরীর দ্বীপে যাতায়াতের জন্য এই সড়কটি একমাত্র মাধ্যম। এ ছাড়া সড়কটি দিয়ে শাহপরীর দ্বীপে উৎপাদিত সামুদ্রিক মাছ, লবণ এবং অন্যান্য কৃষি পণ্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়ে থাকে। এ জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে মোট ৪৯ কোটি ৯৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটির ওপর ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পুনর্গঠন করা হয়েছে। পুনর্গঠিত ডিপিপিতে প্রস্তাবিত প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ৬৭ কোটি ৭৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়ন ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, ১ দশমিক ৩২ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ, ২৫ হাজার বর্গফুট আবাসিক ভবন, ৩ হাজার বর্গফুট পরিদর্শন বাংলো, ১ লাখ ২৭ হাজার ৫৩৯ ঘনমিটার সড়ক বাঁধে মাটির কাজ, ২ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার নতুন পেভমেন্ট নির্মাণ, ২ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার বিদ্যমান পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ, ৫ দশমিক ১৫ কিলোমিটার সার্ফেসিং, ৫০ দশমিক ১২ মিটার পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ, ৮২ মিটার আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, ২ হাজার ৪৫০ মিটার আরসিসি সসার ড্রেন নির্মাণ, ২৮২ দশমিক ৪৬ বর্গমিটার সেতুর কালভার্ট সংস্করণ এবং ২ হাজার ৮৮৪ বর্গমিটার রোড মার্কিং করা হবে। এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য সুবীর কিশোর চৌধুরী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে একনেকের জন্য তৈরি সার-সংক্ষেপে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ জেলা মহাসড়কের হাড়িয়াখালী হতে শাহপরীর দ্বীপ অংশ পুনঃনির্মাণ, প্রশস্তকরণ এবং শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ মিয়ানমার আন্তঃবাণিজ্য সম্প্রসারণ, পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটবে এবং পর্যটকদের যাতায়াত সুবিধার পাশাপাশি প্রকল্প এলাকার জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।
×