ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

চিত্রশালায় বুয়েট শিক্ষার্থীদের স্থাপত্য প্রদর্শনী ‘ইলেশন’

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ১২ অক্টোবর ২০১৮

চিত্রশালায় বুয়েট শিক্ষার্থীদের স্থাপত্য প্রদর্শনী ‘ইলেশন’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রকৃতির সঙ্গে আধুনিক স্থাপত্যকলার সংযোগ গড়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্থাপত্য বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার সঙ্গে অবকাঠামোর আলোকে মেলে ধরেছে স্থাপত্যনির্ভর নগর পরিকল্পনা। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হলো ‘ইলেশন’ শীর্ষক সেই স্থাপত্য প্রদর্শনী। বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার ৬ নং গ্যালারিতে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. নাসরীন হোসেন, আকতার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএম রিফাতুজ্জামান, শোকেজের উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল ওয়ারেস, জেএ আর্কিটেক্টসের প্রধান স্থপতি জালাল আহমেদ। অনুষ্ঠানে এবারের প্রকল্পগুলো নিয়ে ‘ইলেশন’ নামে একটি সংকলনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। উদ্বোধনী বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, বাংলাদেশ বিশেষ করে ঢাকা শহরের বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থপতিদের দায়িত্ব ও কাজের পরিধি অনেক বেড়েছে। ঢাকা শহরের অপরিকল্পিত স্থাপনা ঘিরে যে সঙ্কট তা নিরসনে স্থপতিদেরই সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে প্রিয় এ ভালবাসার শহরটিকে বাঁচানো যাবে। সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, স্থাপত্যকে শিল্পের মর্যাদা দেয়া জরুরী। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশসেরা স্থপতিদের দুই বছর পর পর পুরস্কার প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে স্থপতিদের যাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, সে প্রচেষ্টা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের এ প্রদর্শনী থেকেই প্রথম হাতিরঝিল প্রকল্পের কথা উঠে আসে। যার প্রায় কাছাকাছি বাস্তবিক রূপ বর্তমানের হাতিরঝিল। এবারের প্রদর্শনীতেও রয়েছে হাতিরঝিল নিয়ে বিশেষ একটি প্রকল্প। গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে প্রয়াত জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের নামে একটি ফিল্ম ইন্সটিটিউট গড়ে তোলার পরিকল্পনা মেলে ধরা হয়েছে প্রদর্শনীতে। খুলনা জেলা কারাগারকে ‘হিউম্যানিজিং প্রিজন’ করার পরিকল্পনাটি দারুণ নজরকাড়া। খুলনার দৌলতপুরের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে সবুজের সমারোহময় পরিকল্পনার ছক এঁকেছেন শিক্ষার্থীরা। রাজশাহীর লক্ষীপুরের বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের নব পরিকল্পনাটিতে রয়েছে আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর নুমনা। রাজধানীর গে-ারিয়ায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নামে একটি কাল্পনিক প্রকল্প রয়েছে। পুরনো ঢাকার সরু গলি বেয়ে সেই প্রকল্পে একজন মানুষ খুঁজে পাবে নিজেকে, নিজের দেশ ও সংস্কৃতিকে; এমনিভাবেই নক্সা করা হয়েছে। রয়েছে পাখিগ্রাম, সেকেন্ড হোম, পরিচ্ছন্নকর্মীদের বাসস্থান, গুলশান সিটি কর্পোরেশন মার্কেটের নবরূপায়নের মতো প্রকল্পও। চার দিনের প্রদর্শনীটি চলবে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে। ইতিহাস চর্চার নতুন দিগন্তে ঐতিহ্য জাদুঘরের উন্মোচন ॥ ঢাকার ইতিহাস চর্চার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করে যাত্রা শুরু করল ঐতিহ্য জাদুঘর। পুরনো সর্বসাধারণের জন্য খুলে গেল পুরনো ঢাকার নিমতলীর এশিয়াটিক সোসাইটি ঐতিহ্য জাদুঘর। ১৭০০ থেকে ১৯০০ সাল পর্যন্ত ঢাকা এবং পূর্ব বাংলার সমাজ, সংস্কৃতি ও জীবনভিত্তি নিদর্শনে সজ্জিত হয়েছে এ জাদুঘর। নিমতলী দেউড়িখ্যাত এক সময়ের ঢাকার নবাবদের নিমতলী প্রাসাদের পশ্চিম প্রবেশদ্বারটি রূপান্তরিত হলো ইতিহাসের সংগ্রহশালায়। এই সূত্রে সংস্কারের মাধ্যমে টিকে গেল ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রাসাদটির দেউড়ি। সেই দেউড়ির ওপর নির্মিত হলো এ জাদুঘর। ঢাকার বনেদী ও সংস্কৃতিবান পরিবারের কাছ থেকে সংগৃহীত নিদর্শনে সাজানো জাদুঘরটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতার আগে জাদুঘরটি পরিদর্শন করেন অতিথিরা। উদ্বোধনী আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। স্বাগত বক্তৃতা দেন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ড. সাব্বীর আহমেদ। জাদুঘরের পরিচিতি তুলে ধরেন ঐতিহ্য জাদুঘরের প্রধান গবেষণা সমন্বয়ক অধ্যাপক শরীফ উদ্দিন আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজা খানম। এছাড়া আলোচনায় অংশ নেন সোসাইটির সম্পাদক আব্দুর রহিম। আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। টিএসসিতে জয়ধ্বনির শরৎ উৎসব ॥ রপে-রঙে এসেছে শরৎ। দুলে ওঠা কাশফুল আর নীলাকাশ গাইছে শরতের জয়গান। রাজধানীতে নানা আয়োজনে চলছে নীলের ছোঁয়ামাখা এই ঋতু বন্দনা। সেই সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার বিকেলে শরৎ উৎসবের আয়োজন করে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়কেন্দ্রিক সাংস্কৃতিক সংগঠন জয়ধ্বনি। দলীয় সঙ্গীত, দ্বৈত সঙ্গীত, একক সঙ্গীত, কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য, পুঁথি পাঠ, বাঁশিবাদন ও বাউল গানের সুরে সাজানো ছিল উৎসব। মেঘলা বিকেলে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে টিএসসি মিলনায়তনে শরৎ উৎসবের আয়োজন হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর। আয়োজনের শুরুতে সম্মেলক ‘আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরি খেলা’ রবীন্দ্রসঙ্গীতের সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে সংগঠনের শিল্পীরা। তারপর পরই ছিল শিল্পীর কণ্ঠে একক গানের পরিবেশনা। ‘শরতে আজ কোন অতিথি এলো প্রাণের দ্বারে’ গানটি পরিবেশিত হয়। এভাবেই একে একে ‘তোমরা যা বলো তাই বলো’, ‘মোর বীণা উঠে কোন সুরে বাজিসহ শ্রুতিমধুর সব গানে-সুরে ভেসেছে মিলনায়তন। রাত পর্যন্ত চলে শরৎ উৎসবের এ আয়োজন। ঢাকা বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা ॥ সমৃদ্ধির সোপানে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। ডিজিটাল যুগের ছোঁয়ায় ক্রমশ বদলে সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম। সেই ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি এখন শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায়। বৃহস্পতিবার থেকে এখানে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী ঢাকা বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা। ডিজিটাল পদ্ধতিতে কিভাবে মানুষের দৌরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে সেই নমুনা তুলে ধরা হয়েছে মেলায়। উপস্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক্সেস টু ইনফর্মেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের সহযোগিতায় মেলার আয়োজন করেছে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়। সকালে চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্বোধন করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার কে এম আলী জয়। আগামী ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে এ মেলা। প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত দর্শনার্থীর জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ‘বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী পরিচিতি ও ব্যবস্থাপনা কৌশল’ গ্রন্থের প্রকাশনা ॥ ড. তপন কুমার দে তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে ‘বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী পরিচিতি ও ব্যবস্থাপনা কৌশল’ গ্রন্থটি লিখেছেন। যাতে সহজ-সাবলীল বাংলা ভাষায় রঙিন ছবিসহ দেশের অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণী, পাখি, সাপ, গিরগিটি, কচ্ছপ-কাছিম ও ব্যাঙের প্রজাতিভিত্তিক বর্ণনা, জীবনদশা, সামগ্রিক জীবন প্রণালীর ও ব্যবস্থাপনা কৌশলের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া সহস্রাধিক প্রাণীর রঙিন ছবি, আবাসস্থল বিস্তৃতি, শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য, বংশবিস্তার, খাদ্য, স্বভাবসহ অন্যান্য তথ্যও রয়েছে। তথ্যবহুল ও বৈচিত্র্যে ভরা গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান আয়োজিত হলো। বৃহস্পতিবার দুপুরে চ্যানেল আইয়ের তেজগাঁও কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী পরিচিতি ও ব্যবস্থাপনা কৌশল’ বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ মোস্তফা ফিরোজ ও ড. মনিরুল খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. নুর জাহান সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির সভাপতি ড. গুলশান আরা লতিফা এবং বইটির লেখক ড. তপন কুমার দে।
×