ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পাল্টে গেছে চাঁপাই-২ আসনের চিত্র

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

পাল্টে গেছে চাঁপাই-২ আসনের চিত্র

ডি.এম তালেবুন নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট ঘুরে এসে ॥ জেলার গুরুত্বপূর্ণ সংসদীয় আসন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২। এই আসনে তিনটি বরেন্দ্র উপজেলা রয়েছে। এর মধ্যে ইলা মিত্রের নাচোল, গোমস্তাপুর ও পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া বিচ্ছিন্ন ভোলাহাট উপজেলা। উপজেলাটি মহানন্দা প্রবেশের মুখ বলে গণ্য করা হয়। ছোট উপজেলা হলেও ফল নির্ধারণে এই উপজেলার ভোটকে প্রাধান্য দেয়া হয়। বরেন্দ্রর তিন উপজেলা ও শিবগঞ্জ আসনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতিশ্রুতিতে পাল্টে গেছে চেহারা। ভোলাহাট উপজেলায় বিএনপি, আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোন দলের ভোটার নেই। জামায়াত আছে ছিটেফোঁটা। অন্য দুই উপজেলাতেও জামায়াতের সংগঠন খুবই নড়বড়ে। তবুও তারা এবার বিএনপিকে ছাড় দিতে নারাজ। তাই এক কলেজ অধ্যাপক দাঁড় করিয়ে তার ব্যানার পোস্টারে পোস্টারে তিন উপজেলা ছেয়ে ফেলেছে। বরেন্দ্র এলাকার জনসাধারণ অনেকটাই সাম্প্রদায়িক বিরোধী। তাই তাদের মধ্যে জামায়াতের সংখ্যা হাতেগোনা। বহুবার জামায়াত সংগঠন জোরদার করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। তবে বরেন্দ্রর তিন উপজেলায় বিএনপির একক প্রার্থী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমিনুল হক। কেন্দ্রীয় নেতা হবার সুবাদে ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হওয়ায় তারেক জিয়ার খুবই ঘনিষ্ঠ। সেই সুবাদে তিনি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও একক প্রাথী। অনেকেই বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় আসার চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিয়েছেন। কারণ তিনি তারেক জিয়ার লোক। তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সদস্য নুরুল ইসলাম ঠা-ু রহনপুরে বিশাল জনসভা করার পর পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে গেছে। এ সভার স্থানটি ছিল রহনপুর কলেজ মাঠ। এবার এই কলেজটি সরকারী হওয়ার সুবাদে পুরো গোমস্তাপুর উপজেলা আনন্দে মাতোয়ারা ছিল। জনসভায় সেদিন জনতার ঢল নেমেছিল। পুরো রহনপুর শহরে পা-ফেলার জায়গা ছিল না। পাশাপাশি ৭৫ পরবর্তী আসনটি বিএনপির দখলে থাকলেও তেমন উন্নয়ন হয়নি। বিশেষ করে প্রথম টার্মেই আওয়ামী লীগের অন্যতম সহসভাপতি জিয়াউর রহমান এমপি হবার পর উপজেলার আনাচে-কানাচে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। যা মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। দ্বিতীয় টার্মেও আওয়ামী লীগের অন্যতম নেতা রহনপুর পৌরসভার মেয়র গোলাম মোস্তফা এমপি হলে বরেন্দ্রর তিন উপজেলায় উন্নয়নের বন্যা বয়ে যায়। একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করার মধ্য দিয়ে উন্নয়নের সূত্রপাত হলেও নানামুখী উন্নয়নের কারণে এখনও আওয়ামী লীগের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। তারপরেও জনসভায় কেন্দ্রী নেতারা নৌকায় ভোট চাওয়ার পাশাপাশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আরও বহুমুখী উন্নয়নের। যদিও বরেন্দ্রর এই আসনে আওয়ামী লীগের ডজন খানের প্রার্থী মনোনয়নের দৌড়ে আছেন। বিশেষ করে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউর রহমান, বর্তমান এমপি গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, ভোলাহাটের মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির নেতা ডাঃ আশরাফুল হক চুন্নু। এছাড়াও বেসিক ব্যাংকের সাবেক পরিচালক কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা জনাব আনোয়ারের শোডাউন ছিল উল্লেখ করার মতো। ভোলাহাটের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সচিব সানাউল্লাহ মিঞা আওয়ামী লীগের কোন নেতা না হবার পরেও ভোট যুদ্ধে অন্যতম সৈনিকের ভূমিকা পালন করছেন। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহসম্পাদক সৈকত জোয়ার্দ্দার কয়েকদিন ধরে তিন উপজেলায় গাড়ি বহর নিয়ে মহড়া দিচ্ছেন। এ ছাড়াও নাচোলের উপজেলা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদের পোস্টারে আর ব্যানারে ছেয়ে ফেলেছেন তিন উপজেলার রাস্তাঘাট। পাশাপাশি চাঁপাইনবাবগঞ্জ বারের সদস্য এ্যাডভোকেট আফসার হোসেন। অধ্যাপক অজিত কুমার দাস, সাবেক ভোলাহাট উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ, রাজশাহী চেম্বারের সাবেক সভাপতি বর্তমানে রাজশাহী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তবে দ্রুত মনোনয়ন সম্পন্ন হলে সকল প্রার্থী তাদের পদচারণা বন্ধ করে শেখ হাসিনার প্রার্থীর পেছনে কাজ শুরু করবে এমনটাই জানা গেছে।
×