ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন ওষুধ আফ্রিকায় আড়াই হাজারের বেশি নারীর ওপর পরীক্ষা চালানো হবে

এইচআইভি প্রতিষেধক আবিষ্কারে অগ্রগতি

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ১০ জুলাই ২০১৮

এইচআইভি প্রতিষেধক আবিষ্কারে অগ্রগতি

এইচআইভি ভাইরাসের কার্যকর প্রতিষেধক হতে পারে এমন ওষুধ তৈরির সম্ভাবনা দেখছেন গবেষকরা। সম্প্রতি আবিষ্কৃত এক চিকিৎসা পদ্ধতি এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুগান্তকারী ফল বলে মনে করা হচ্ছে। এই চিকিৎসার মাধ্যমে মানবদেহে এইচআইভি ভাইরাসের বিভিন্ন প্রজাতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করা সম্ভব বলে মনে করছেন গবেষকরা। খবর বিবিসির। ৩শ’ ৯৩ জন মানুষের ওপরে এই পরীক্ষা চালানোর পর তাদের দেহে এইচআইভি প্রতিরোধকারী ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, এমন তথ্য উঠে এসেছে ল্যানসেট এর একটি গবেষণাপত্রে। এইচআইভি সদৃশ্য একটি ভাইরাসে আক্রান্ত কয়েকটি বানরও এই চিকিৎসায় নিরাময় লাভ করেছে। তবে এই চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করা যায় কি না তা নির্ণয় করতে আরও গবেষণা প্রয়োজন। প্রতিবছর আনুমানিক ১৮ লাখ নতুন এইচআইভি সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু এইচআইভি’র চিকিৎসায় নানাবিধ অগ্রগতি হলেও এই ভাইরাসের নিশ্চিত প্রতিষেধক এখনও মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছে। ‘প্রেপ’ বা ‘প্রি এক্সপোজার প্রোফাইল্যাক্সি’ নামের এই ওষুধ, যেটি এইচআইভি সংক্রমণ রোধে কার্যকর, নিয়মিত সেবন করতে হয়। অর্থাৎ আক্রান্ত হওয়ার আগেই নিয়মিত এই ওষুধ গ্রহণ করলে এইচআইভি সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে না। এইচআইভি ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করার পর দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে টিকে থাকতে পারে, যা এই ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির পেছনে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে মনে করা হয়। এর আগে এইচআইভি ভাইরাসের বিভিন্ন প্রজাতির প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা করা হলেও এই ‘মোজাইক’ প্রতিষেধক এইচআইভি’র বিভিন্ন ধরনের প্রজাতির সংক্রমণ রোধে কার্যকর হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী সুস্থ মানুষের মধ্যে এই প্রতিষেধকের গবেষণা চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র, রুয়ান্ডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, উগান্ডা আর থাইল্যান্ডের ওই অধিবাসীরা ৪৮ সপ্তাহের মধ্যে ৪টি প্রতিষেধক গ্রহণ করেন। নির্দিষ্ট সময় শেষে প্রত্যেকের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাতেই এইচআইভি প্রতিরোধক তৈরি হয় এবং প্রতিষেধক নিরাপদ হিসেবে প্রমাণিত হয়। তবে এই গবেষণার শীর্ষ গবেষক ও হার্ভার্ড মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড্যান বারোখ বলেন, এই গবেষণার ফল সতর্কতার সঙ্গে ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। বারোখ জানান প্রতিষেধকের মাধ্যমে সবার দেহে এইচআইভি প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হলেও এই ভাইরাসের আক্রমণ ও সংক্রমণ রোধে এই প্রতিষেধক যথেষ্ট কি না তা এখনও নিশ্চিত নয়। এই গবেষণা থেকে পাওয়া আশাপ্রদ ফলের ভিত্তিতে আফ্রিকার দক্ষিণাংশের ২,৬০০ নারীর ওপর পরীক্ষা চালানোর কথা চিন্তা করছেন গবেষকরা। ওই এলাকার নারীদের মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। এখন পর্যন্ত কেবল একটি প্রতিষেধক মানবদেহে এইচআইভি’র বিরুদ্ধে নিশ্চিতভাবে প্রতিরোধ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। থাইল্যান্ডে পরীক্ষা চালানো একটি প্রতিষেধক মানবদেহে এইচআইভি সংক্রমণের হার ৩১% কমাতে পারে বলে প্রমাণিত হয়। তবে ওই প্রতিষেধকের প্রভাব যথেষ্ট হওয়ার প্রমাণ না পাওয়ায় তা সাধারণভাবে ব্যবহার করা হয়নি।
×