ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে পরমাণু আলোচনা অব্যাহত থাকায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

সামরিক মহড়া বাতিল

প্রকাশিত: ০৬:৪২, ২০ জুন ২০১৮

সামরিক মহড়া বাতিল

উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে নিয়মিত সামরিক মহড়া বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পেন্টাগন জানিয়েছে আগস্টে অনুষ্ঠেয় ফ্রিডম গার্ডিয়ান সামরিক মহড়া এবার হচ্ছে না। গত বছর অনুষ্ঠিত এই মহড়া দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা তাজা গুলি ব্যবহার করেছিল।- গার্ডিয়ান। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক মহড়া স্থগিত করেছে। উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের এক সপ্তাহ পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। পেন্টাগনের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা হয়েছে অপারেশন উলচি ফ্রিডম গার্ডিয়ান এবার হবে না। গত মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরে ট্রাম্প ও উনের মধ্যে ঐতিহাসিক বৈঠক হওয়ার পর ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ং এখন পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ আলোচনা ব্যস্ত রয়েছে। গত বছর অনুষ্ঠিত সামরিক মহড়াটি চলেছিল ১১ দিন। এতে ১৭ হাজার মার্কিন ও ৫০ হাজার দক্ষিণ কোরীয় সৈন্য অংশ নিয়েছিল। এ ছাড়া ১৯৫০-৫৩ সালে সংঘটিত কোরিয়া যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী কয়েকটি দেশের সৈন্যরাও মহড়াটিতে যোগ দেয়। চলতি বছর অনুষ্ঠেয় বৈঠক বাতিলের আগে সিউলে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস ও তার দক্ষিণ কোরীয় প্রতিপক্ষ সং ইয়ং মু বৈঠক করেন। পেন্টাগনের মুখপাত্র ডানা হোয়াইট বলেছেন, কোরীয় উপদ্বীপের বাইরে প্রশান্ত মহাসাগরে অনুষ্ঠেয় অন্য মহড়াগুলোর ওপর এর কোন প্রভাব পড়বে না। দক্ষিণ কেরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে ফ্রিডম গার্ডিয়ান মহড়া বাতিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে দু দেশের মধ্যকার অন্য মহড়াগুলোর বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কী না সে বিষয়ে এতে কোন মন্তব্য করা হয়নি। মহড়া বাতিলের বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এ দিকে কি রিজলভ্ ও ফোল ঈগলের মতো অন্য বড় মহড়াগুলোর ওপর এই সিদ্ধান্তের কোন প্রতিক্রিয়া পড়বে না বলে জানানো হয়েছে। ওই মহড়াগুলোতেও তাজা গুলি ব্যবহার করা হয়। ট্যাঙ্ক, এয়ারক্রাফট ও যুদ্ধজাহাজ সহযোগে অনুষ্ঠিত সামরিক মহড়াগুলোতে হাজার হাজার মার্কিন ও দক্ষিণ কোরীয় সৈন্য অংশ নিয়ে থাকে। এই মহড়াগুলো সাধারণত বসন্তকালে হয়ে থাকে। তবে এবার দক্ষিণ কোরিয়ায় পিয়ংচ্যাংয়ে শীতকালীন অলিম্পিক আয়োজনের জন্য কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা না বাড়াতে মহড়াগুলো হয়নি। সিউল ও ওয়াশিংটনের কর্মকর্তাদের বিস্মিত করে ট্রাম্প গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সব ধরনের সামরিক স্থগিতের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত ভবিষ্যত আলোচনা ঠিকমতো এগোবে ততক্ষণ আমরা এই সিদ্ধান্তের ওপর থাকব।’ ট্রাম্প গত সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে উনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘সামরিক মহড়াগুলো বাদ দিলে আমাদের প্রচুর পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হবে।’ এ ছাড়াও তিনি উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেন মহড়া একটি উস্কানিমূলক কাজ। উত্তর কোরিয়া সব সময় বলে এসেছে যে কোরীয় উপদ্বীপে সামরিক মহড়া আসলে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের মহড়া। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার এবং নিজ দেশের সেনাবাহিনীকে না জানিয়ে ট্রাম্প মহড়া বন্ধের ঘোষণা দেন। মার্কিন কংগ্রেসে ট্রাম্পের সমালোচকরা বলেন, সামরিক মহড়া বাতিলের ফলে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়ায় বর্তমানে ২৮ হাজার ৫শ’ মার্কিন সৈন্য রয়েছে। জাপান ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে অবহিত করতে উন যখন বেজিং সফর করছেন দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে মহড়া বাতিলের খবরটি ঠিক তখনই এলো।
×