ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাফিজ উদ্দীন আহমদ

বেলা আপা

প্রকাশিত: ০৭:৪১, ১ জুন ২০১৮

বেলা আপা

পঞ্চাশ দশকের শেষ দিককার কথা। সে সময় হাসান খুবই ছোট। রীনা তার খেলার সাথী। হাসানদের সামনের বাসায় থাকে ওরা। সন্ধ্যাবেলায় রীনাদের ড্রইংরুমে গৃহ-শিক্ষক আসেন। ক্লাস থ্রিতে পড়ে মেয়েটা। হাসান প্রায়ই ওখানে যেয়ে দাঁড়িয়ে থেকে ওদের পড়া দেখে। একদিন হাসান ড্রইংরুমে হাজির হলো। গৃহশিক্ষক তার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলেনÑ : কোন ক্লাসে পড়? : তৃতীয় ভাগে পড়ি। হাসান তখন স্কুলে যায় না। এখনও ভর্তি হয়নি কোথাও। বাবা অসম সরকারের ভাল চাকরি ছেড়ে মুসলমানের দেশে থাকার জন্য পূর্ব-পাকিস্তানে চলে এসেছেন কিন্তু চাকরি নিয়মিত না হওয়ার জন্য আড়াই বছর ধরে বেতন পান না। বড় মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন কোন ক্রমে কিন্তু হাসান বাসায় মা-বাবার কাছে পড়ে। স্কুলে না যাওয়া ছেলেরা একটু বোকা হয়। সে যে বাংলা বইটা পড়ে তাতে লেখা তৃতীয় ভাগ তাই সে এ উত্তরটা দিয়েছে। তার কথা শুনে মাস্টার সাহেব হাসলেন। রীনা হেসে লুটোপুটি খেল। হাসান অপমানিত বোধ করল। বছরটা শেষ হতে তখনও আরও কয়েক মাস বাকি, জানুয়ারি আসতে বাবা তাকে লোক মারফত পলাশী গার্লস স্কুলে পাঠালেন পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির জন্য। স্কুলটা মেয়েদের হলেও নিচের শ্রেণীতে শুধু মেয়েরা না ছেলেরাও পড়ে। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় টিকল না হাসান। এরপর এক বছর ঘরে পড়িয়ে অর্থাৎ পরের বছর আবার তাকে পাঠানো হলো। তবে এবার ওয়েস্ট এ্যান্ড হাই স্কুলে ষষ্ঠ শেণীতে ভর্তির জন্য। লিখিত পরীক্ষা হলো ইংরেজী ও অঙ্ক বিষয়ে। ইংরেজীপত্রে ইংলিশ ট্রান্সলেশন ও অনুবাদ ছিল। একটা প্রশ্ন ছিল : ঋধঃবসধ ফড়বং হড়ঃ ষরশব রিপশবফ নড়ুং - এটা বাংলা করতে হবে। হাসান তখন স্কুলে না পড়লেও ক্রিকেট খেলা বুঝে। পাকিস্তানের বিশ্ববিখ্যাত তারকা ব্যাটসম্যান হানিফ মোহাম্মদের সে ভক্ত। ডরপশবফ শব্দটার অর্থ জানা ছিল না। তার মনে হলো শব্দটা উইকেট হবে কোন কারণে ভুলে শেষে : এর জায়গায় ফ যুক্ত হয়ে গেছে। অর্থাৎ ফাতিমা উইকেটের ছেলেদের মানে যারা উইকেটে বসে সেই উইকেট কিপারদের ভালবাসে না। তাই সে অনুবাদ করল- ফাতিমা উইকেটের ছেলেদের ভালবাসেন না। আশ্চর্য! এ রকম ভুল-ভাল লেখার পরও নির্বাচিত হলো সে। পিলখানা এলাকায় ইপিআর (পরবর্তীতে বিডিআর ও বর্তমানে বিজিপি) এর বাসা থেকে মেইন রোড ধরে স্কুলে যায় সে। ক’দিন না যেতেই আবিষ্কার করল শাহ-সাহেব বাড়ির জঙ্গলের ভেতর হাটা পথ দিয়ে অত্যন্ত অল্প সময়েই স্কুলে হাজির হওয়া যায়। শাহ সাহেবের জঙ্গল ছিল এখনকার আজিমপুরস্থ চায়না বিল্ডিংয়ের পেছন থেকে শুরু করে শেখ সাহেব বাজারের শাহ সাহেব বাড়ি বা দায়রা শরিফ পর্যন্ত বিস্তৃত বিশাল এলাকা। ঘনসন্নিবিষ্ট ঝোঁপ-ঝাড়, লতাপাতা গাছাপালায় পূর্ণ জনবিরল ছিল স্থানটা। বসতি ছিল না কোন। প্রায়ই এ পথ ধরে স্কুলে যেত হাসান। মাঝে মাঝে আবার শেখ বাজার রোড দিয়ে বর্তমানের বাংলা প্রেসের পাস দিয়ে যেত সে। প্রেসের উল্টো দিকে মোড়ের সঙ্গেই ছিল বেলা আপাদের বাসা। তার ছোট ভাই মতিন ওর সঙ্গে পড়ত। সেই সুবাদে তার বড় বোনের সঙ্গে পরিচয় গড়ে উঠেছিল। বেলা আপা ফর্সা, সুন্দরী, ক্লাস সেভেনে পড়ত কিন্তু স্কুলে যাবার খুব একটা তাগিদ ছিল না। ওরা দল বেঁধে স্কুল যাবার সময় প্রায়ই দেখত তাদের বাড়ির উঠানে থাকা পেয়ারা গাছের মগডালে চড়ে আপা পা ঝুলিয়ে বসে পেয়ারা খাচ্ছে। বাড়ির সীমানা প্রাচীরের বাইরে রাস্তা থেকেই তাকে দেখা যাচ্ছে। কোন কোন দিন হাসানের দিকে তাক করে হাতের কাছের ভাল থেকে ছিঁড়ে একটা ডাঁশা পেয়ারা ছুড়ে দিত। হাসান ক্রিকেট খেলা ভাল জানায় সেটা লুফে নিত অনায়াসে। তারপর খেতে খেতে চলতে থাকত। বন্ধুদের কেউ টিটকারি দিত তাকে মতিনের অগোচরে- : বেলা আপা তোকে ভালবাসে তা না হলে আমাদের না দিয়ে তোকেই কেন পেয়ারা দেয়? আমরাও তো তার সঙ্গে খেলি। তারপর সমস্বরে হি-হি করে হাসত সবাই। একটা সময় থাকে যখন ছেলেমেয়েদের খেলার মাঝে কোন সীমারেখা থাকে না, তখন সেই বয়স তদের। মতিনদের উঠানে এক্কা-দোক্কা, কানামাছি, ডাংগুলি মায় পুতুল খেলা, দড়ি লাফানো প্রতিযোগিতা সবই চলত সমান তালে। এই ভালবাসা বোঝার বয়স নয় তখন। কিন্তু স্কুলের কিছু ছেলে ইচড়েপাকা হয়েই থাকে, তারাই এসব বলত। হাসান তো স্কুলেই যায়নি আগে। এসব ব্যাপারে সে একটু পিছিয়েছিল। ছেলে-মেয়েদের ভেতরে অন্য কোন রকম সম্পর্ক হয় তা সে জানত না। স্কুলে দু-একজন সহ-পাঠি ছিল যারা পুরনো ঢাকার আড়তদার-দোকানদারদের ছেলে। তাদের বয়স বেশি। ক’দিন পরেই ঐতিহ্য অনুযায়ী লেখাপড়া সাঙ্গ করে বাবার সঙ্গে গদিতে বসবে। দাড়ি-গোঁফ গজিয়েছে। একজন আবার এর মাঝে বিয়ে করে ফেলেছে। তাদের কাছেই ‘প্রেম’ শব্দটা প্রথম শুনল সে। এ সম্পর্কে তার কোন জ্ঞান ছিল না। মতিনদের প্রশস্ত উঠানে ডাংগুলি, চোরপলান্তি, মার্বেল এসব খেলায় বেলা আপা ওদের সঙ্গী হতো কিন্তু একটা ব্যাপার লক্ষ্য করত হাসান, আপা হেরে গেলে একটা অজ্ঞাত কারণে তার মন খারাপ হয়ে যেত। একদিন চোরপলান্তি খেলায় পলায়নপর বেলা আপাকে ধরে ফেলল সে। ওপাশ থেকে কিশলয়ের মতো দাড়ি-গোঁফ গজানো সেন্টু চেচিয়ে উঠল- : জাবড়াইয়া ধর শালা। মেয়ে বলে হাসান একটু হাল্কাভাবে ধরেছিল। এক ঝটকায় ছুটে গেল বেলা। বেলা আপা ছুটে যেতেই অন্যান্য খেলার সাথীরা বিশেষত সেন্টু মন্তব্য করল : : তুই ছাইড়া দিছস ইচ্ছা কইর‌্যা। আসলেই প্রেম আছে তোর : কি যে বলিস! ওর গায়ে এত শক্তি কে জানত? : বুঝি! সবই বুঝি। সেন্টু তার কয়েকজন সাঙ্গ-পাঙ্গ নিয়ে দাঁত কেলিয়ে হাসতে লাগল। সেন্টু বলেছে প্রেম করলে চিঠি দিতে হয়। একদিন সে হাসানকে স্কুল যাবার পথে একটু আড়ালে নিয়ে জিজ্ঞাসা করল বেলাকে কখনও চিঠি লিখেছে কি-না। : চিঠি? একটু থেমে বলল আবার হাসান- : আমি কেন বেলা আপাকে চিঠি দেব? রোজই তো দেখা হয় তার সঙ্গে। সে হাসানের উত্তরটা কানে না তুলে পরবর্তী প্রশ্নটা করল- : বেলা তোকে চিঠি দিছে? : সে কেন চিঠি দেবে? বলল হাসান : তাইলে কিসের প্রেম করলি? প্রেম, প্রেম কথাটা বার বার শুনতে শুনতে কেমন একটা কৌতূহল সৃষ্টি হলো হাসানের। বেলা আপাকে দেখলে এই প্রথম অন্যরকম সুন্দর মনে হতে লাগল তার। একদিন গাছে বসা বেলা হাত ইশারায় ডাকল তাকে। এর আগে বেলা আপা তাকে অনেক ডেকেছে কখনও তার কিছু মনে হয়নি কিন্তু প্রেমের কথাগুলো রোজ রোজ শোনার পর কেন জানি হঠাৎ তার মনে একটা অদ্ভুত শিহরণ জাগল আজ। কাছে গিয়ে বলল- : কি আপা? লক্ষ্য করল হাসান তার কণ্ঠস্বরটা অজান্তেই কেঁপে গেল যেন একটা নীরব উত্তেজনায়। বেলা আপা তার দিকে একটা দু’আনা ছুড়ে দিয়ে বলল- : আমার জন্য একটা আইসক্রিম নিয়ে আয়। সে আমলে দু’আনায় সবচেয়ে মজদার মালাই আইসক্রিম পাওয়া যেত, অন্যান্য সাধারণ আইসক্রিম এর দাম ছিল দু’পয়সা, এক আনা। মোড়ের আইসক্রিমআলার কাছ থেকে তক্ষণি ছুটে গিয়ে নিয়ে এল সে তা। আপা লাফ দিয়ে নেমে আইসক্রিমের কাঠিটা ধরে কোনা থেকে দাঁতে কামড়ে একটু ভেঙ্গে ওর হাতে দিয়ে বলল- : নে, খা। তারপর বাকিটুকু মুখে ঢুকিয়ে চুষতে লাগল। আজ হঠাৎ অপরের মুখে দেয়া জিনিস খেতে কেন জানি ঘেন্না লাগল না। এতে অবাক হলো হাসান নিজেও। এ রকম পরিবর্তনের কোন কারণ খুঁজে পেল না সে। পরের সপ্তাহে বেলা আপার বাসায় স্কুল ছুটির পর সবাই খেলতে গিয়ে বেলা যখন হাসানের গলা জড়িয়ে ধরে উভয়পক্ষের রাজার সামনে যেয়ে বলল- : ডাক-ডাক বেলি ওরা উত্তর দিল- : আয়রে সবাই খেলি বেলা এবার বলল ডাক ডাক কিসকো ডাক? ওদের একজন উত্তর দিল- হামকো মেরি তুমকো ডাক হাসান এবার বলল- : লতা চাই না পাতা? প্রতিপক্ষের নেতা বলল- : লতা অমনি বেলা ওদের দলে চলে গেল। হাসান ও বেলা জুটি বেঁধে আগেই নাম নিয়েছিল, হাসান পাতা ও বেলা লতা। নামটা বেলাই ঠিক করে দিয়েছিল। এর আগে বেলা অন্যপক্ষে গেলে কিছু হতো না কিন্তু আজ মন খারাপ হয়ে গেল হাসানের তার বেলা আপা অন্যপক্ষে যাওয়ায়। পরদিন সেন্টু ক্লাসে আবার জিজ্ঞাসা করল- : বেলা আপাকে চিঠি দিয়েছিস? : চিঠি? কিসের চিঠি? : চিঠি মানে প্রেমপত্র সোজা সাপ্টা উত্তর দিল সে। : প্রেমপত্র আবার কি? কি করে লিখে? : ওরে একটু শিখাইয়া দে দোস্ত। সেন্টুর সমবয়সী দাড়ি -গোঁফ উঠা হাসানের অপর এক সহপাঠি কাশেম এক চোখটিপ দিয়ে দাঁত কেলিয়ে হাসতে হাসতে বলল সেন্টুকে উদ্দেশ্য করে। : আইচ্ছা আইজ তোরে আমি শিখাইয়া দিমু। চিন্তা করিস না। বেঞ্চের উপর নিজের বইগুলো গোছাতে গোছাতে হাসানের দিকে তাকায় সেন্টু। : নে, আমি কই, তুই লেখ। তারপর হাসান এর স্কুল-ব্যাগ থেকে খাতা বের করে তার হাতে পেন্সিল গুঁজে দেয় সে। কাশেম ও সেন্টু টিফিন পিরিয়ডে প্রায়ই পালিয়ে যায়। সেদিন সেন্টু পালিয়েছে। ক্লাসের মনিটর সে কথা শ্রেণী শিক্ষককে বলে দেয়ায় তিনি পরদিন তার হাতে সাপাং সাপাং করে তিনবার জোড়া বেতের বাড়ি দিলেন। কিন্তু ছুটির পর স্কুলে গেট দিয়ে বের হতেই মনিটরের পথ আগলে ধরে তার নাকে ঘুসি মেড়ে ফাটিয়ে দিয়ে প্রতিশোধ নিল সেন্টু। দর দর করে রক্ত ঝরেছিল তার। সেন্টুর কথা অমান্য করতে তাই ভয় পেল হাসান। সে বলতে লাগল আর ক্লাসে শ্রুতলিপি লেখার মতো লিখে চলল হাসান- জানের জান কইলজার টুকরা বেলা, আমি তুমারে ভালবাসি... বলাবাহুল্য পত্রটি খাতায় লেখা থাকল। কিন্তু হাসান তা দিল না। দেয়ার রুচি হলো না, কোন তাগিদও সে অনুভব করল না মন থেকে তা দেয়ার। পরদিন সেন্টু ক্লাসে আসেনি। তাই বেমালুম সে ভুলে গিয়েছিল ব্যাপারটা। কিন্তু তার পরবর্তী দিন সেন্টু আসতেই টিফিন পিরিয়ডে তার জেরার মুখে পড়ে গেল সে। : চিঠি দিছিলি? : দিয়েছিলাম। ভয়ে মিথ্যা কথা বলল সে। এরপর থেকে প্রতিদিনই জিজ্ঞাসা করে সেন্টু - : উত্তর পাইছিস? হাসান সত্যি কথা বলে- : পাই নাই। আসলে চিঠিই দেয়নি, উত্তর পাবে কি? কিন্তু কারণটা সহপাঠিকে খুলে বলা যাবে না। কিন্তু একদিন বেলা আপা গাছ থেকে হাসানকে রাস্তা দিয়ে যেতে দেখেই ডাক দিল- : এই এদিকে আয়। হাসান কাছে যেতেই পেয়ারা গাছ থেকে লাফ দিয়ে নামল সে। ফ্রকের কোচড় থেকে চার-পাঁচটি পেয়ারা ছিটকে মাটিতে পড়ে গেল সেই সঙ্গে। একটা হাসানের হাতে তুলে দিয়ে বলল- : নে। পেয়ারাটা নিয়েই হাসান চলে যেতে উদ্যত হতেই বলল- : দাঁড়া। তারপর গলার ফাঁক দিয়ে জামার ভেতরে হাত ঢুকিয়ে বুকের এলাকা থেকে একটা খাম বের করে বলল- : এটা তোর জন্য। বাড়ি গিয়ে পড়বি। হাসান বিমূঢ় হয়ে গেল। তার বুক সহসা এক্কা-দোক্কা খেলল। আমি নয় আপাই শেষে আমাকে প্রেমপত্র লিখল। সেন্টুরা তাহলে ঠিকই বলেছিল আপা আমাকে ভালবাসে। বাড়ি গিয়ে আর চিঠি বের করল না হাসান। যে কোন সময় বাবা-মা দেখে ফেললে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। দু’কানের যে জবরদস্ত ব্যায়াম হবে তাতে সন্দেহ নেই। লুকিয়ে স্কুল ব্যাগে সে ঢুকিয়ে রাখল ওটা। যে সেন্টু তাকে দিয়ে প্রেম করাতে এত আগ্রহান্বিত তার সামনেই এটা পড়া উচিত হবে। স্কুলের টিফিন পিরিয়ডে সব ছেলে ক্লাস থেকে বের হয়ে মাঠে খেলতে চলে গেলে পেছন দিকের একটা বেঞ্চে বসে সেন্টুকে কাছে ডাকল সে- : বেলা আপা চিঠি দিয়েছে। : উত্তর পাইছস তাইলে। আরে আমি যে সুন্দর ভাষা দিয়া চিঠিখান লিখছি জবাব না দিয়া যাইব কই? চোখ চক চক করে উঠল ওর। দেখি দেখি বলে কেড়ে নিল চিঠিটা হাসানের কাছ থেকে। তারপর খাম খোলা শুরু করতে করতে বলল- : কইছিলাম না বেলা তোরে ভালবাসে! এখন চিঠি পাইয়া প্রমাণ পাইলি তো? চিঠি অর্ধেক খুলে হঠাৎ থেমে গেল সেন্টু। বলল- : চিঠি খুলনের আগে কিছু খাওয়া দোস্ত : বিশ্বাস কর আব্বা আজকে পয়সা দেয় নাই। তোকে লজেন্স, চকোলেট কিচ্ছু কিনে খাওয়াতে পারব না। : ঠিক আছে, কিছু কিনতে হবে না। তোর টিফিনটাই দে, বলে হাসানের বিন্দুমাত্র সম্মতির অপেক্ষা না করে এইমাত্র টিফিন পিরিয়ডে স্কুল থেকে সবাইকে দেয়া নাস্তা হিসাবে হাসানের প্রাপ্ত দুটো লুচি আর হালুয়া গপাগপ সাবড়ে দিল সেন্টু। নিজের ভাগেরটা আগেই গলাধঃকরণ করেছে সে। ততক্ষণে অপর হাতে সে মেলে ধরেছে চিঠিটা সামনে। তাতে গোটা গোটা সুন্দর অক্ষরে লেখা : চিঠি এলো আকাশে উড়ে গেলো বাতাসে চিঠি নিয়ে করলে ভুল তুমি হলে এপ্রিল ফুল আজ যে পহেলা এপ্রিল মনেই ছিল না হাসানের।
×