ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

হুমকির মুখে চাষী তাকাও শিতোর পৈত্রিক খামার

পরিবেশের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে নারিতা বিমানবন্দর

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ১ জুন ২০১৮

পরিবেশের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে নারিতা বিমানবন্দর

জাপানের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর হচ্ছে নারিতা। তাকাও শিতোর (৬৮) নামে একজন চাষী এই বিমানবন্দরটি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বিমানবন্দরটি ঘিরে রেখেছে তার খামার। সারা পৃথিবীর জেট বিমানগুলো তার বাড়ির দরজার কাছেই গর্জন করতে করতে অবতরণ করে। যেখানে মৌসুমের মটরশুঁটি ও মুলার সারির সবুজ পাতায় বসন্তের বাতাস দোল দিয়ে যায়। মৃদুভাষী তাকাও বলেন, ‘আপনি শব্দ ব্যবহার করতে পারেন। এই জমিতে আমরা তিন প্রজন্ম চাষাবাদ করে আসছি। যেটি আমার দাদার মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। তারপর আমার বাবা এরপর আমি চাষাবাদ করছি। আমি এখানে বাস করতে চাই ও চাষাবাদ করতে চাই। তাকাওয়ের লড়াইটা অন্য কয়েকটি মুষ্টিমেয় পরিবারের সঙ্গে নারিতা বিমানবন্দরের জন্য একটি বড় মাথাব্যথার কারণ হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। এ বছরই তার ৪০তম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে। বিমানবন্দরটি টোকিওর প্রধান আন্তর্জাতিক প্রবেশ পথ। প্রতিবছর এই বিমানবন্দরটি চার কোটি যাত্রী পরিবহন করে ও দুই লাখ ৫০ হাজার ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। ১৯৬৬ সালে সরকার যখন নারিতা বিমানবন্দর ওই এলাকাটিতে স্থাপন করার জন্য প্রথম প্রস্তাব করে তারপর থেকেই সেটি বিতর্কিত হয়ে আসছে। তিনটি রানওয়েসম্বলিত বিমানবন্দরটিকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। যাতে মানবাধিকার কর্মী ও কৃষকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। সেই বিক্ষোভে তাকাওয়ের বাবাও যুক্ত ছিলেন। কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ও বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর মধ্যে আন্দোলন দিয়ে শেষ হয়। ১৯৭৮ সালে বিমানবন্দরটি চালু হয়। ২০০২ সালের আগ পর্যন্ত মাত্র একটি রানওয়ে ছিল । ২০০২ সালে দ্বিতীয় রানওয়ে চালু করা হয়। বিমানবন্দরটি আইনত বৈধ ভূমি মালিকদের কাছ থেকে পরিকল্পিত দ্বিতীয় রানওয়ে পথের জন্য সংলগ্ন খামার ক্রয় করে। যে জমিগুলো কয়েক দশক ধরে তাকাওয়ের পরিবারের কাছে ভাড়া দেয়া ছিল। তবে তাকাও সেখান থেকে চলে যাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি তার জীবদ্দশায় ভূমি দখলে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। জাপানের এগ্রিকালচার ল্যান্ড এ্যাক্ট অনুযায়ী কৃষকরা ব্যাপক আইনী সুরক্ষা পান। তাই বিমানবন্দরটি তার রানওয়ের দিকে অগ্রসর হওয়া রুটকে পরিবর্তন করার বিকল্প খুঁজছে। যা এখন তাকাওয়ের খামারের চারপাশে রয়েছে। আগামীবছর টোকিওতে রাগবি বিশ্বকাপ এবং তারপর ২০২০ সালের অলিম্পিক উপলক্ষে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিমানবন্দর এখন চাচ্ছে তার তৃতীয় রানওয়ে তৈরি করার। এটি তাকাওয়ের খামারের কাছে নয়। বিমানবন্দর এখন অন্যান্য নিকটবর্তী কৃষকদের সঙ্গে সমঝোতা করার চেষ্টা করছে। ওপরে তাকালে দেখা যায়, সেই জমিগুলো যেগুলো তাকাও ও তার প্রতিবেশীদের খামারগুলোতে বেড়া দিয়ে দেয়া হয়েছে। বাদামি মাটির দ্বীপগুলো বিমানবন্দরের যাত্রীদের বহনকারী ট্যাক্সিগুলোর একটি ওয়েবের ফাঁদে আটকা পড়েছে। দিনে ও রাতের বিমানবন্দরের ভয়াবহ বাতাস কৃষিকাজের অস্তিত্বকে জটিল করে তুলেছে যদিও বিমানবন্দরের চারপাশের এলাক জৈব চাষের জন্য আদর্শ নয়। -এএফপি
×