ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

কথোপকথন

সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের মাধ্যমে যুব সমাজকে সচেতন করতে চাই ॥ মনিরুল ইসলাম রাজীব

প্রকাশিত: ০৪:৩৫, ২৬ মে ২০১৮

সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের মাধ্যমে যুব সমাজকে সচেতন করতে চাই ॥ মনিরুল ইসলাম রাজীব

মনিরুল ইসলাম রাজীব। এই সময়ের অন্যতম প্রতিভাবান অভিনেতা। পেশায় কলেজ শিক্ষক হলেও সমাজকর্মী এবং সাংস্কৃতিক সংগঠক হিসেবেও সুনাম আছে তার। টঙ্গী আইডিয়াল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ এবং আইন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে কর্মরত। একাধারে মঞ্চনাটক, টিভিনাটক টেলিফিল্ম ও ধারাবাহিক নাটকে কাজ করছেন। সম্প্রতি কাজের ব্যস্ততা নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। ছোট বেলায় সাংস্কৃতিক অঙ্গন নিয়ে কি স্বপ্ন দেখতেন? মনিরুল ইসলাম রাজীব : নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে সমাজের সকল অসঙ্গতি তুলে ধরার স্বপ্ন ছোট বেলা থেকেই দেখতাম। নাটক হবে সকল অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে স্বোচ্চার হওয়ার প্রধান হাতিয়ার। সেই বিশ্বাস থেকেই এই লাইনে কাজ করছি। বর্তমানে টিভি ও মঞ্চ নাটকের ব্যস্ততা কেমন? কি কি কাজ করছেন। মনিরুল ইসলাম রাজীব : বর্তমানে টিভি নাটকে ঈদের নাটক ও দুটি ধারাবাহিক নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছি। রোজার মাস বিধায় দলের নতুন নাটক জেলেদের জীবন কাহিনী নিয়ে মঞ্চ নাটক, ‘মৎস্য শিকারী’ নাটকের পান্ডুলিপির কাজ চলছে। এ পর্যন্ত কতগুলো মঞ্চ নাটকে কাজ করেছেন? মনিরুল ইসলাম রাজীব : এ পর্যন্ত মোট ৭টি মঞ্চ নাটকে প্রায় দু’শ শো-করেছি। পথ নাটক করেছি প্রায় ৩০টির মতো। তার মধ্যে অন্যতম হলো-‘ডালিম কুমার’, ‘একজন হাতেম আলী’, ‘বৌ’, ‘একাত্তর’, ‘চেতনা’, ‘ছুটি’, ‘মহাবিপদ’ উল্লেখযোগ্য। এ পর্যন্ত কতগুলো টিভি-নাটকে কাজ করেছেন? কি কি? মনিরুল ইসলাম রাজীব : একক ও ধারাবাহিক নাটক মিলিয়ে প্রায় শতাধিক নাটকে অভিনয় করেছি। তার মধ্যে ধারাবাহিক নাটক হলো-মারুফ মিঠুর ‘বউ বকা দেয়’, সাগর জাহানের ‘ল্যামúোস্ট’, রাকেস বসুর ‘অলি’, একক নাটক ‘নায়ক’, ‘এফএম মাইক’, ‘উড়ে যাওয়ার কাল’, ‘মাহিনের অদ্ভুত ঘড়িটি’, ‘অন্তরালে’, ‘সেই রকম ঘুষখোর’, ‘রাক্ষুসী’, ‘ফেসবুকে ভালো লাগা মন্দ লাগা’ প্রভৃতি। আপনার নাটকের দলের নতুন প্রযোজনার খবর কি? নাট্যদল নিয়ে পরিকল্পনা কি? মনিরুল ইসলাম রাজীব : আমার দল আইডিয়াল থিয়েটার বর্তমানে জেলেদের জীবন কাহিনী নিয়ে রচিত নাটক ‘মৎস্য শিকারী’ নাটকের মহড়া নিয়ে ব্যস্ত। নবেম্বরের মধ্যে নাটকটি মঞ্চায়নের পরিকল্পনা চলছে। নাটকের দল নিয়ে সারাদেশ ও পৃথিবী ঘুরে নাটকের নিয়মিত শো করা, নিয়মিতভাবে নাট্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যে একটি থিয়েটার স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং নিয়মিত নাট্যউৎসবের আয়োজন করার পরিকল্পনা আছে। সেই লক্ষ্যে নিজেকে এবং দলকে প্রস্তুত করছি। বর্তমানে টঙ্গীর সাংস্কৃতিক অবস্থা কেমন? মনিরুল ইসলাম রাজীব : টঙ্গীর সাংস্কৃতিক চর্চা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। নাট্যসংগঠনগুলো মহড়া কক্ষের অভাবে নিয়মিত নাটকের মহড়া করতে পারছে না। পৃষ্ঠপোষকতা নেই, বিশেষ করে অডিটরিয়াম না থাকায় দলগুলোর কার্যক্রম অনেকটা দিবসকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। বর্তমানে দেশে মঞ্চ নাটক এবং টিভি নাটকের মান উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা কি? এক্ষেত্রে আপনার পরামর্শ কি? মনিরুল ইসলাম রাজীব : বর্তমানে মঞ্চ নাটক ও টিভি নাটকের শিল্পী এবং সংশ্লিষ্ট কলাকুশলীদের প্রশিক্ষণের অভাব লক্ষ্য করছি। বিশেষ করে আমি বলব যারা মঞ্চে নিয়মিত অভিনয় করে তাদের টিভি নাটকে তেমন মূল্যায়ন করা হয় না। আর যারা আজকে অভিনয়ে টিভি নাটকে যুক্ত হলো তারা স্টার হয়ে গেল বিধায় তাদের অভিনয় শেখার আগ্রহ থাকে না বিধায় নাটকের অভিনয়ের মান দিন দিন কমে যাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে আমি যথেষ্ট আশাবাদী সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি শিক্ষকতার সমন্বয় করেন কি ভাবে? মনিরুল ইসলাম রাজীব : সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে ছোট বেলা থেকে যুক্ত থাকায় এটি আমার প্রাণ। তাই এ প্রাণ যেন কোন মতে শুকিয়ে না যায়, সেই জন্য অনার্স, মাস্টার্স ও এলএলবি করেও কোন চাকরি নেইনি। একটি কারণ তা হলো চাকরি নিলে এ অঙ্গনে আমার প্রাণ সতেজ থাকবে না। তাই শিক্ষকতা পেশা বেছে নিয়েছি। আমি একজন সংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে গর্ববোধ করি বিধায় দুটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি এবং টঙ্গী আইডিয়াল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে এবং আইন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে কর্মরত আছি। সম্প্রতি সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক গাজীপুর মহানগরীর সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছি। এ ছাড়াও দারিদ্র্য বিমোচন পরিবেশ ও মানবাধিকার উন্নয়ন সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান এবং সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, উত্তরার প্রচার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত আছি। সাংস্কৃতিক অঙ্গন নিয়ে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি? মনিরুল ইসলাম রাজীব : ইচ্ছা আছে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে যুব সমাজকে সচেতন করতে চাই। যাতে করে যুব সমাজ ভয়াল মাদকের হাত থেকে রক্ষা পায়। - সাজু আহমেদ
×