ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বরিশালে বদলে গেছে বিলাঞ্চলের জনপদ

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ১৯ মে ২০১৮

বরিশালে বদলে  গেছে বিলাঞ্চলের জনপদ

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশজুড়ে চলমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাকর্মযজ্ঞের অংশহিসেবে বরিশালের বানারীপাড়া ও উজিরপুর উপজেলায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়িত হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে এই দুই উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়িত হওয়ায় প্রত্যন্ত বিলাঞ্চল এখন অবয়বে শহুরে জনপদে রূপ নিয়েছে। ফলে চোখে পড়ার মতো সরকারের এ উন্নয়নের জয়গান এখন এলাকাবাসীর মুখে মুখে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশজুড়ে চলমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির মহাকর্মযজ্ঞের এসব উন্নয়নমূলক কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন স্থানীয় (বরিশাল-২ আসন) সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের প্যানেল স্পীকার ও বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস। সূত্র মতে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর আসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই এই দুই উপজেলায় উন্নয়নমূলক কর্মকা-ের যাত্রা শুরু হয়। বানারীপাড়া পৌরসভায় প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকা ব্যয়ে দ্বিতল পৌর ভবন নির্মাণ, ওয়াটার সাপ্লাইয়ের কাজ, কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ, গোরস্তান, শ্মশানঘাট, রাস্তাঘাট, ড্রেন, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণসহ পৌর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। পাঁচ কোটিরও অধিক টাকা ব্যয়ে বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের আধুনিক বহুতল ভবনের নির্মাণ, বানারীপাড়ার লবণসাড়া গ্রামে ১০শয্যাবিশিষ্ট শিশু হাসপাতাল নির্মাণের পাশাপাশি সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুতল ভবন নির্মাণ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। বানারীপাড়া ও উজিরপুরসহ পার্শ্ববর্তী জেলা এবং উপজেলার মানুষের অতিসহজে গোপালগঞ্জে যাতায়াতের জন্য জাইকা প্রকল্পের মাধ্যমে সাড়ে ছয় শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীর পশ্চিমপারের শিয়ালকাঠী থেকে দুর্গম ইউনিয়ন বিশারকান্দি পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ৯৮টি ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। এছাড়াও কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে উজিরপুর সদর থেকে ধামুড়া, হারতা, সাতলা, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া সড়ক পাকাকরণসহ অসংখ্য ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। এরমধ্যে সাতলা নদীতে ১২০ কোটি ও হারতা নদীতে ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ কাজ এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। হারতা, সাতলা এবং ওটরা ইউনিয়নকে উজিরপুর উপজেলার মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল কচা নদী। একই সঙ্গে পার্শ্ববর্তী উপজেলা বানারীপাড়ার সঙ্গেও এই নদীর জন্য সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ছিল না। ফলে দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য ও যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছিলেন কয়েক যুগ ধরে। এ দুর্ভোগের অবসান করতে হারতা বাজার সংলগ্ন নদীতে ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হ"েছ ২৮০ মিটার দীর্ঘ সেতু। আর এ সেতুর মাধ্যমেই উজিরপুরের সঙ্গে বানারীপাড়াসহ দেিণ স্বরূপকাঠী, কাউখালী, ভা-ারিয়া থেকে পাথরঘাটা এবং উত্তরে মাওয়া ও দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত গড়ে উঠবে সড়ক যোগাযোগের সেতুবন্ধন। বানারীপাড়া ও উজিরপুরে শতাধিক প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল, মাদ্রাসা এবং কলেজে বহুতল ভবনসহ সাইকোন শেল্টার নির্মাণ করা হয়েছে এবং কিছু ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। এ দুই উপজেলায় প্রায় দুই শ’ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ পাকা সড়ক পুনঃনির্মাণ ও সংস্কার কাজ করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের সময়ে এ দুই উপজেলায় কমপে দুই শতাধিক ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। বানারীপাড়ার সন্ধ্যা নদীর ওপর স্বপ্নের সেতু নির্মাণ, বিশারকান্দিতে আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই ও স্থান নির্ধারণের প্রাথমিক কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও মসজিদ, মন্দির, গির্জা, চার্চ, প্যাগোডা, কাবসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। এসব উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হয়েছে।
×