ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

নাট্য নিকেতনের উৎসবে ‘রূপসুন্দরী’

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১৪ মে ২০১৮

নাট্য নিকেতনের উৎসবে ‘রূপসুন্দরী’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সিরাজগঞ্জের নাট্য নিকেতন তাদের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন করেছে ৮ দিনের নাট্যোৎসবের। তাদের এবারের নাট্যোৎসবের শেষ দিনে নাট্যলোক সিরাজগঞ্জ তাদের নতুন প্রযোজনা নাটক রূপসুন্দরী পরিবেশন করবে। নাট্যকার মাহবুব আলম রচিত নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন অনিক কুমার সাহা। আজ সন্ধ্যা ৭-৩০ মিনিটে সিরাজগঞ্জের ভাসানী মিলনায়তন মঞ্চে রূপসুন্দরী নাটকের চতুর্থ মঞ্চায়ন হবে। নির্দেশনার পাশাপাশি অনিক কুমার সাহা নাটকের মঞ্চ ও পোশাক পরিকল্পনাও করেছেন। রূপসুন্দরী নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন- ত্বসিন, লাহিম, মমিন বাবু, জহুরুল রতন, রেজাউল, শাহানা, চিন্ময় সুত্রধর, টুটুল, আকাশ, বিপ্লব, ইমরান, আপন, তিতাস, রাফি, পাপ্পু, হাসেম, আবিদ এবং প্রান্ত। আর শিশির রহমানের আবহ সঙ্গী পরিকল্পনায় যন্ত্র বাজিয়ে এবং কণ্ঠ দিয়ে সহযোগিতা করছেন বিন্তি ও বাপন। রূপসুন্দরী নাটকের বিভিন্ন অংশে কোরিওগ্রাফি করেছেন ফারহানা কাঙ্খিতা এবং আলোক পরিকল্পনা করেছেন বিশিষ্ট আলোক নির্দেশক ঠান্ডুরায়হান। সামাজিক স্বীকৃতি না থাকলে নারীর ঠিকানা আসলে কোথায়? জমিদারের ঔরসজাত সন্তান সুন্দরী কিন্তু সামাজিক স্বীকৃতি না থাকায় তাকেও পড়তে হয় জমিদারের লালসার নজরে। সন্তানের নিরাপত্তা নিশ্চত করতে সুন্দরীর মা সুন্দরীকে পরামর্শ দেয় বাড়ি ছেড়ে পালাতে। সুন্দরী তার মায়ের পরামর্শে বাড়ি ছেড়ে নিজের রূপ লুকিয়ে ছদ্মবেশে ঘুরতে থাকে নানান জায়গায়। বান্নির মেলায় তার সাক্ষাত হয় ছলিমের সঙ্গে। ঘটনাক্রমে সে আশ্রয় পায় ছলিমের বাড়িতে। আবার সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে তাদের বিয়েও হয়। বিয়ের পরে উন্মোচিত হয় তার আসল পরিচয়। শঙ্কা কেটে যায় সুন্দরীর আর রূপ উন্মুক্ত হয়। কিন্তু যে শঙ্কায় সে বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় পায় ছলিমের সেই শঙ্কায় সে আষ্টেপৃষ্ঠে পতিত হয় এবার। তালুকদারের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে সুন্দরীর রূপে। তালুকদারের রোষানলে পুড়ে প্রাণ যায় ছলিমের, প্রাণ যায় সুন্দরীর! পু-্রনগরীর এক লোকগাথা করতোয়া নদীতে শীলাদেবীর আত্মাহুতি আর তার লাশ ভেসে ওঠার স্থানে গড়ে ওঠা বান্নির মেলা। নাট্যকার মাহবুব আলম শীলাদেবীর এক পরিবর্তিত রূপ নির্মাণের চেষ্টা করেছেন ভিন্ন প্রেক্ষাপট রচনার মধ্যে দিয়ে। রূপসুন্দরী নাটকে নাট্যকার মাহবুব আলম তুলে ধরেছেন নারীর চিরায়ত একটি নির্যাতনের চিত্র। যুগে যুগে নারীরা কিভাবে ভোগবাদী পুরুষের দ্বারা নির্যাতিত হয়ে আসছে তারই গল্প অত্যন্ত শৈল্পিকভাবে চিত্রিত করেছেন নাটকে। আর নির্দেশক অনিক কুমার সাহার নির্দেশনার গুণে সেই চিত্র আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। নির্দেশক অনিক কুমার সাহা নাট্যলোক-এর অভিনেতা ও কর্মীদের নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। চলছে নাটকের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। টানা মহড়ার মধ্যে দিয়ে অভিনেতা ও গানের দলের সবাই নিজেদেরকে ঝালিয়ে নিচ্ছেন। এখন শুধু উদ্বোধনী মঞ্চায়নের অপেক্ষায় নাটক রূপসুন্দরী। ৭ মে থেকে শুরু হওয়া নাট্য উৎসবে নাট্যলোকের রূপসুন্দরী নাটক ছাড়াও আনন্দধারা নৃত্যকলা একাডেমি, সিরাজগঞ্জের ‘খোকার বাংলাদেশ’, নাট্য নিকেতনের ‘তোতা কাহিনী’, থিয়েটার অঙ্গন জামালপুরের ‘এইখানে সবখানে’, ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠীর ‘ফিরে দেখা’, বাংলা কলেজ যুব থিয়েটারের ‘দৌড়’, নাট্যবেদের ‘কালচক্র’ এছাড়া শিল্পনাট, জেলা শিল্পকলা একাডেমি দিনাজপুরের নাটক ‘স্বপ্নভঙ্গের রঙ্গমঞ্চ’ মঞ্চস্থ হয়।
×