ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাবিতে হাসান আজিজুল হককে নিয়ে ‘গল্পলোকের চিত্রকর’ প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৫:০০, ১২ মে ২০১৮

রাবিতে হাসান আজিজুল হককে নিয়ে ‘গল্পলোকের চিত্রকর’ প্রামাণ্য চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক হয়ে উঠেছেন উপমহাদেশের বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ। কিশোর বয়সে দেখা দেশ ভাগের দুঃসহ যন্ত্রণা বয়ে বেড়িয়েছেন আজীবন। খুব কাছ থেকে দেখেছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম। তাই তার লেখায় অনুভব করা যায় পল্লী বাংলায় জীবন সংগ্রাম, দেশভাগের দগদগে ঘা, বাঙালী জাতির মুক্তিসংগ্রাম আর অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা। লেখার কারণে দুর্ভোগ কম পোহাতে হয়নি তাকে। উগ্রপন্থীদের হুমকি শুনেছেন, তা সত্ত্বেও লিখে গেছেন। তাই তার জীবনটাই যেন হয়ে উঠেছে বাংলার এক ইতিহাস। এই জীবন্ত ইতিহাস নিয়ে বানানো হয়েছে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘গল্পলোকের চিত্রকর’। বানিয়েছেন রাজশাহী ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা আহসান কবির লিটন। গত বুধবার সন্ধ্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রামাণ্য চিত্রটির প্রদর্শনী। প্রদর্শনীতে এসেছিলেন অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক নিজেও। প্রদর্শনীটির আগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি বলেন, আমার জীবন নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরি করবে শুনে ভীত হয়ে পড়েছিলাম। এটা শুনে আমি বেশ অবাক হয়েছিলাম। আমি গ্রামের ধুলাবালিতে বড় হওয়া এক দরিদ্র পরিবারের ছেলে। আমার বন্ধুরা ছিল রাখাল। এমন একটা ছেলের জীবনে কী-ই বা থাকতে পারে, যা নিয়ে চলচ্চিত্র বানানো যায়! অনুষ্ঠানে রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক রাকসু ভিপি ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, হাসান আজিজুল হক স্যার দুই বাংলারই মানুষ। একসময় আমি তাঁর ছাত্র ছিলাম, এখন তাঁর শিষ্যে পরিণত হয়েছি। স্যারের ওপর যে প্রামাণ্য চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে তা নিঃসন্দেহে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের রাজনৈতিক, সামাজিক বলয়ে তাঁর বড় একটা প্রভাব রয়েছে সেটা আমরা জানি। তিনি আমাদের মধ্যে এখনও আছেন বলে আমরা বুঝতে পারি না। রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান বলেন, হাসান আজিজুল হক আমাদের মধ্যে এখনও আছেন বলে হয়তো তাঁর গুরুত্ব অনুভব করতে পারছি না। যেমন পারি না নাকের আগায় দম থাকা পর্যন্ত, বাতাস ফুরিয়ে গেলে বাতাসের গুরুত্ব আমরা ভালভাবে বুঝি। তিনি আমাদের মধ্যে থেকে চলে গেলেও তাঁর কর্ম তাকে চিরদিন বাঁচিয়ে রাখবে। রাজশাহী ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি ডাঃ এফএমএ জাহিদের সভাপতিত্বে প্রদর্শনীপূর্ব আলোচনা অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- সহকারী ভারতীয় হাইকমিশনার অভিজিত চট্টোপাধ্যায়, সাবেক রাবি উপাচার্য ও রাষ্ট্রদূত ড. সাইদুর রহমান খান, রাবি ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি সাজ্জাদ বকুল প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ মাসুদ। অনুষ্ঠানটির আয়োজনে ছিল ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটি, রাজশাহী ফিল্ম সোসাইটি, রাবি চলচ্চিত্র সংসদ, চিলড্রেনস্ ফিল্ম সোসাইটি।
×