ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মোঃ তরিকুল ইসলাম

মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ২৬ মার্চ ২০১৮

মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস

আজ মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস। আজকের উন্নয়নশীল বাংলাদেশের সৃষ্টির সূচনালগ্ন ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ। এই দিন ইতিহাসের পাতা রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল। এই দিন বাংলাদেশের প্রথম লাল-সবুজের স্বাধীন পতাকা ওড়ানো হয়। এই দিন বাংলার দামাল ছেলেরা দেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে ট্যাঙ্ককের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। এই দিন পোড়া লাশের গন্ধ ও মায়ের কান্না সহ্য করতে না পেরে সন্তানেরা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করার পরেও পাকিস্তান সরকার বঙ্গবন্ধুর হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। বরং বাংলার জনগণের ওপর আরও বেশি অত্যাচার শুরু করে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গভীর রাতে ঘুমন্ত নিরীহ বাঙালীর ওপর ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে আক্রমণ চালায়। ২৬ মার্চ ১২:৩০ মিনিটে অর্থাৎ প্রথম প্রহরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমন্ডি-৩২নং বাড়ি থেকে ইপিআরের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। জাতির পিতার ইংরেজীতে স্বাধীনতার যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেটির বাংলা অনুবাদ হলো ‘এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন, বাংলাদেশের জনগণ তোমরা যে যেখানে আছ এবং যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শেষ পর্যন্ত দখলদার সৈন্যবাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমি তোমাদের আহ্বান জানাচ্ছি। চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি বাংলার যে ভাষণটি দিয়েছিলেন সেটি হলো ‘পাকিস্তানী সেনাবাহিনী অতর্কিতভাবে পিলখানা ইপিয়ার ঘঁাঁটি, রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমণ করেছে এবং শহরের রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধ চলছে। আমি বিশ্বের জাতিসমূহের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছি।’ এর আগে জাতির পিতা ৭ মার্চে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান) দাঁড়িয়ে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এই ভাষণের মাধ্যমে জাতি সেদিন স্বাধীনতার যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল। আর সেটি শুরু হলো ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে। জাতির জনকের চূড়ান্তভাবে স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে আজ ৪৭টি বছর কেটে গেলেও ওই দিনটি বাঙালীর বুকে এখনও ভীতি জাগায়। বাঙালী ওই দিনটির বিভীষিকাময় সেই ঘটনাগুলো, পোড়া লাশের গন্ধ ভুলতে পারে না। এই দিনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বিশেষ বাণী প্রদান করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন, পেশাজীবী সংগঠন নানাভাবে এই দিনটি পালন করেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, ধানমন্ডি ৩২ জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনসহ অনেক কর্মসূচী পালন করেন। মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসের ৪৭ বছর উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আলোচনা সভা ও ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শিরোনামে রচনা প্রতিযোগিতা ও ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর নির্বাচন ও ’৭১-এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ওপর উপস্থিত বক্তিৃতার আয়োজন করেছে। সেই সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শন করে। এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
×