ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১২ মিশনে

রফতানি আয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ ২৫ মিশন

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রফতানি আয়ে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ ২৫ মিশন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ থেকে সাধারণত ৫৭টি দেশে পণ্য ও সেবা রফতানি হয়ে থাকে। এসব দেশে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হলে অর্জিত হয় রফতানির সামগ্রিক লক্ষ্যমাত্রা। তবে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ওই ৫৭ গন্তব্যের ২৫টিতেই অর্জিত হয়নি লক্ষ্যমাত্রা। তবে বাকি ৩২টি গন্তব্যে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। এরমধ্যে ১২টি মিশনে ভাল প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। মিশনগুলো হচ্ছেÑ বার্লিন, টোকিও, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, প্যারিস, মস্কো, ম্যানিলা, জাকার্তা, স্টোকহোম, রাবাত, কাঠমান্ডু ও কলম্বো। বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্যে এসব জানা গেছে। আলোচ্য সময়ে দেশ থেকে সামগ্রিকভাবে রফতানি হয়েছে ১ হাজার ৭৯১ কোটি ডলারের পণ্য। এ সময়টাতে রফতানির কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছিল ১ হাজার ৭৮৭ কোটি ডলার। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসের পণ্য রফতানি শূন্য দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় গত ছয় মাসে রফতানি আয় ৭ দশমিক ১৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে পণ্য রফতানিতে আয় হয়েছিল ১ কোটি ৬৭২ কোটি মার্কিন ডলার। ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিশ্বে বাংলাদেশের ৩৯টি মিশনের মধ্যে রফতানি লক্ষ্যমাত্র অর্জিত হয়েছে ২৪ মিশনে। মিশনগুলো হচ্ছে- মানামা, থিম্পু, ব্রাসেলিয়া, কায়রো, এথেন্স, হংকং, রোম, আম্মান, নাইরোবি, কুয়েত, ত্রিপলী, মালে, পোর্ট লিউস, মেক্সিকো সিটি, হেগে, মাস্কাট, ইসলামাবাদ, ওয়ারসো, লিসবন, দোহা, রিয়াদ, প্রেট্টোরিয়া, নিউইয়র্ক ও তাসাখেন্দ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরের তুলনায় ৩৯ মিশনের মধ্যে ২৯ মিশনে চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এরমধ্যে কেনিয়ার নাইরোবি থেকে ১৯৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ছয় মাসে ৩৯ মিশন থেকে আয় এসেছে ৪০৮ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। এসব মিশনের মধ্যে রোম থেকে গত ছয় মাসে সবচেয়ে বেশি আয় এসেছে ৮০ কোটি ১৯ লাখ ডলার। নেদারল্যান্ডের হেগ থেকে এসেছে ৬৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার, পোল্যান্ডের ওয়ারসো থেকে এসেছে ৪৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ডেনমার্কের কোপেনহেগেন থেকে এসেছে ৩৪ কোটি ৩২ লাখ ডলার, সুইডেনের স্টোকহোম থেকে এসেছে ৩৩ কোটি ৮৯ লাখ ডলার, তুরস্কের আঙ্কারা থেকে এসেছে ২৭ কোটি ৩৫ লাখ ডলার, হংকং থেকে এসেছে ১৮ কোটি ৮২ লাখ ডলার, সৌদি আরবের রিয়াদ থেকে ১৫ কোটি ২৭ লাখ ডলার। ইপিবির তথ্য অনুসারে, বিশ্বে বাংলাদেশের যে ১৮ কমার্শিয়াল উইংস আছে তার মধ্যে মাত্র ৮টি রফতানি লক্ষ্যমাত্র পূরণ করতে পেরেছে। আর বাকি ১০ উইংস লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। বাণিজ্যিক কার্যক্রম থাকা যে ৮টি উইংস লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেরেছে সেগুলো হল-ব্রাসেলস, দিল্লী, ক্যানবেরা, অটোয়া, তেহরান, লন্ডন, মার্দিদ ও ওয়াশিংটন। এদিকে ১০ মিশন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলেও ভাল প্রবৃদ্ধি করেছে ৬ মিশন। এগুলো হচ্ছে- বার্লিন, টোকিও, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, প্যারিস ও মস্কো। আলোচ্যসময়ে সবচেয়ে বেশি রফতানি আয় এসেছে বার্লিন থেকে। এ সময়ে ওই গন্তব্য থেকে মোট ৩১৪ কোটি ৫১ লাখ ডলার রফতানি আয় এসেছে। এরপরেই ওয়াশিংটনে রফতানি করে আয় হয়েছে ২৯৩ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। আর এই সময়ে লন্ডনে রফতানি করে এসেছে ২০৬ কোটি ৯৩ লাখ ডলার। অটোয়া মিশন থেকে আয় হয়েছে ৫৪ কোটি ১৩ লাখ ডলার, দিল্লিতে রফতানি করে আয় হয়েছে ৩৬ কোটি ১৯ লাখ ডলার। এ প্রসঙ্গে রফতানিকারকদের সংগঠন ইএবির সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী জনকণ্ঠকে বলেন, গতানুগতিক দেশের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না রফতানি খাত। নতুন নতুন দেশের দিকে ব্যবসায়িক পরিসর বাড়াতে হবে। মিশনগুলো এই কাজে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে পারে। বিশেষ করে কোন দেশে কখন কোন ধরনের পণ্যের উপযোগিতা ও চাহিদা রয়েছে, সেটা তারা খুঁজে বের করে সে মোতাবেক ব্যবসায়ীদের পরামর্শ দিতে পারে তবেই সফলতা আসবে।
×