ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে ভাসমান সেতু এখন বিনোদন কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

যশোরে ভাসমান সেতু এখন বিনোদন কেন্দ্র

মনিরামপুরের ঝাঁপা বাঁওড়ে প্লাস্টিকের ড্রাম দিয়ে নির্মিত ভাসমান সেতু দেখতে দর্শনার্থীদের ভিড় ক্রমে বাড়ছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকাসহ দূর-দূরান্ত থেকে বিভিন্ন বয়সী ও শ্রেণী-পেশার হাজার হাজার মানুষ সেতু দেখতে আসছেন। ছুটির দিনে দর্শনার্থী আসছেন বেশি। আবার অনেকে দল বেঁধে এখানে আসছেন পিকনিক করতে। ব্যবসা হবে বিবেচনায় সেতুর পশ্চিম পাড়ে ঝাঁপা গ্রামে রাতারাতি গড়ে উঠেছে পিকনিক স্পট। সেতু নির্মাণ কমিটিসহ স্থানীয়দের প্রায় ত্রিশ বিঘা জমির ওপর গড়ে উঠেছে স্পটটি। আবার দর্শনার্থীদের আনন্দ দিতে ওই পাড়ে বসেছে নাগরদোলা। একই সঙ্গে সেতুর দুই পাড়ে বসেছে বেশ কয়েকটি অস্থায়ী দোকান। ফলে সেতুটি ঘিরে কর্মসংস্থান হয়েছে বেশ কিছু লোকের। সেতুটি ঘুরে দেখতে দর্শনার্থীদের জন্য পাঁচ, দশ ও ২০ টাকা টিকেট নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ। ব্রিজের দুই পারে ৫-৬ ব্যক্তি এই টিকেট বিক্রির কাজে ব্যস্ত। দিনে প্রায় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টিকেট বিক্রি করে মোটা টাকা আয় করছেন সেতু নির্মাতারা। টিকেট বিক্রেতারা এমনটি জানালেও আয়ের সঠিক হিসাব জানাতে চাননি দায়িত্বশীলদের কেউ। এদিকে দর্শনার্থীদের চাপে ব্রিজ সংরক্ষণে কাজ করছেন সেতুটির কারিগর রবিউল ইসলাম। ভাসমান সেতু দেখতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মোটরসাইকেলে এসেছিলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তিন ছাত্র। তাদের মধ্যে সোহাগ বলেন, ‘ফেসবুকে সেতুটি দেখে তা ঘুরে দেখার ইচ্ছা হয়েছে। আমরা তিনজন এসেছি। সেতু দেখে অনেক ভাল লাগছে।’ সেতুটি নিয়ে গবেষণা করার জন্য তিনি শিক্ষকদের অনুরোধ করবেন বলে জানিয়েছেন। একই সময়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ভাসমান সেতু দেখতে এসেছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমান। তার গাড়ির চালক রুহুল আমিন বাবু বলেন, ‘ব্রিজ দেখতে ভালই লাগছে। স্যার ব্রিজ দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।’ যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়া এলাকা থেকে স্ত্রীকে নিয়ে সেতু দেখতে এসেছিলেন রিয়াজ উদ্দিন তুহিন নামে এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘ব্রিজটি দেখতে সত্যিই অসাধারণ।’ একা বা প্রিয়জনকে নিয়ে ঝাঁপা বঁাঁওড়ের ভাসমান সেতু দেখতে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসছেন বহু মানুষ। আবার অনেকে সেতু দেখতে এসে বাড়তি আনন্দ পেতে চড়ে বসছেন নৌকায়, ঘুরে দেখছেন বাঁওড়। সেতু দেখতে আসা লোকজনকে আনন্দ দিতে বাঁওড়ের পশ্চিম পাড়ে নাগরদোলা বসিয়েছেন যশোর সদর উপজেলার রুদ্রুপুর গ্রামের আক্কাস আলী। তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবারে এসেছি। প্রতিদিন পনেরো শ’ থেকে আঠারো শ’ টাকা আয় হয়। সেখান থেকে এখানকার কমিটিকে দু’শ’ করে টাকা দিয়ে যা থাকছে কোন রকম চলছে।’ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘সেতু দেখতে আসা মানুষের ভিড় ক্রমেই বাড়ছে। দর্শনার্থীদের চাহিদার কথা ভেবে এখানে এলাকাবাসীর ত্রিশ বিঘা জমির ওপর মেহগনি ও আমবাগানে একটা পার্ক তৈরি করা হয়েছে। পার্ক সাজাতে কাজ চলছে। দুটি টয়লেট ও একটি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এই পর্যন্ত গত দুই শুক্রবারে চালুয়াহাটির একটি মাদ্রাসা থেকে ও ইউনিলিভার কোম্পানির মনিরামপুরের একটি গ্রুপ এখানে পিকনিকে এসেছে। -সাজেদ রহমান, যশোর থেকে
×