ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় এই ব্যবস্থা থাকছে না

বাণিজ্যমেলায় বন্ধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান!

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১১ জানুয়ারি ২০১৮

বাণিজ্যমেলায় বন্ধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান!

ওয়াজেদ হীরা ॥ ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার প্রথম দশ দিনই শেষ হয়ে গেছে। প্রতি বছরই এই মেলাকে ঘিরে বিশেষ আগ্রহ থাকে মানুষের মধ্যে। সেই আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে বেশি পরিমাণে দর্শক টানতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিল মেলার আয়োজক কমিটি রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। প্রথমবারের মতো দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা ছিল। তবে সেটি হচ্ছে না। দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত এই বিনোদনের ব্যবস্থা থাকছে না বলে জানা গেছে। জানা গেছে, এবারই প্রথম মেলায় দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর জন্য আট লাখ টাকা বাজেট বরাদ্ধ করা হয়। নেয়া হয় সব ধরনের প্রস্তুতি ও মঞ্চ তৈরির জন্য জায়গা বরাদ্দ হয়। মঞ্চের প্রাথমিক কাজও শেষ হয়েছিল। শুধু অনুষ্ঠানটাই হলো না। তবে অনুষ্ঠানের জন্য তৈরি মঞ্চটি খালি পড়ে নেই। মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শনার্থীরা বসে বিশ্রাম নেন। আবার সেলফিতেও মেতে উঠেন। মেলা আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, এবারের মেলায় এটি ছিল একটি ব্যতিক্রম উদ্যোগ। যেখানে বিভিন্ন দেশীয় সংস্কৃতি ফুটিয়ে উঠানো হতো। দেশের গান, সংস্কৃতি, কৃষ্টি ফুটিয়ে তুলে নতুন প্রজন্মকে আরও অনুপ্রাণিত করার জন্য এমন উদ্যোগ নেয়া হয় বলেও জানা যায়। তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে এই অনুষ্ঠান না করতে চিঠি দেয়া হয়। আর সেই চিঠি পেয়েই মূলত আয়োজকরা আর সামনে এগিয়ে যায়নি। মেলা আয়োজক কমিটি একাধিক কর্মকর্তারা জানান, এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সপ্তাহে একদিন বৃহস্পতিবার হওয়ার কথা ছিল। মেলায় আগত দর্শনার্থীরা এবং নতুন প্রজন্মকে দেশের সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বিশদভাবে জানাতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। দেশের নানা শিল্পী তাদের গান গাইতেন এই মঞ্চে। সরেজমিন দেখা যায়, মেলায় যেখানে সাংস্কৃতিক মঞ্চের স্থান নির্ধারণ হয়েছিল সেখানে আড্ডা আর সেলফিতে মেতেছে তরুণরা। সেলফির ফাঁকে আব্রাহাম ও তার বন্ধুরা জানান, আমরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা শুনেছিলাম। মেলায় এসে শুনলাম এটি হয় না। হলে ভালই লাগত। শীতকালে একটু বাড়তি বিনোদন হতো। উপস্থিত একাধিক দর্শনার্থীরাও একই মতো। তারাও শুনেছিলেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা তবে কেন হচ্ছে না সে বিষয়ে তারা কিছুই জানে না। তাই ঘুরে ফিরে চলে যাচ্ছেন যে যার মতো। ইপিবির সচিব ও মেলার পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা নুতন কিছু সংযোজন করেছিলাম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান তার একটি। দর্শনার্থী বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে বিনোদনের পাশাপাশি দেশাত্ববোধ বিষয়ে জানাতে আমাদের সংস্কৃতি তুলে ধরতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তবে ডিএমপি থেকে নিষেধ করার করণে আর হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এই অনুষ্ঠানের জন্য বাজেট ছিল টাকা মন্ত্রণালয়ে ফেরত যাবে। শেরে-ই-বাংলা নগর থানার ওসি ও মেলার ইনচার্জ জনকণ্ঠকে বলেন, গত ২২ বছর ধরে মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়নি এখন কেন হবে সে প্রশ্ন রাখেন তিনি। দেশের সার্বিক নিরপত্তার কথাও বলেন তিনি। তিনি আরও যুক্ত করে বলেন, ডিএমপি থেকে চিঠি দিয়েছেন না করতে। আরও বিস্তারিত জানতে হলে তেজগাঁ জোনের ডিসির সঙ্গে কথা বলার জন্য বলেন এই কর্মকর্তা। তেজগাঁও উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার জনকণ্ঠকে বলেন, আসলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্যই এটি করা হয়েছে। এমনিতেই মেলায় অনেক ভিড় থাকে। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলে তা সামলানো আরও কষ্টকর হতে পারে। মেলায় দেশী বিদেশী মানুষসহ অনেক দর্শনার্থী থাকেন সার্বিক বিবেবচনায় এটি করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই কর্মকর্তা আরও যোগ করে বলেন, এটা তো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা এটির সঙ্গে এই অনুষ্ঠান যায় না।
×