ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পূর্বাচল বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণ বাঙ্গালবাড়ি

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ৬ জানুয়ারি ২০১৮

পূর্বাচল বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণ বাঙ্গালবাড়ি

রাজধানীর পাশে এক নির্মল প্রাকৃতিক রাজউকের নির্মাণাধীন উপশহর পূর্বাচল। যদিও এখানে এখনও শহর গড়ে ওঠেনি, কিন্তু এলাকাটিকে ঘিরে নানা বিনোদনের আয়োজন চলছে বিনোদনপ্রেমী মানুষের জন্য। বসুন্ধরা-খিলক্ষেত ৩০০ ফুট, পূর্বাচলের নীলা মার্কেটের পর এখন অন্যতম আকর্ষণ বাঙ্গালবাড়ি। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ছেলে বুড়ো থেকে শুরু করে কিশোর কিশোরীরা ভিড় জমিয়েছে বাঙ্গালবাড়িতে। বাঙ্গালবাড়িটি দর্শার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। দিন দিন জমে উঠেছে পূর্বাচল উপশহর। দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা আসছে পূর্বাচলে পুরনো জিনিসপত্রের পসরা সাজানো বাঙ্গালবাড়িতে। যে কোন উৎসব-পার্বণ ঘিরেই ঢাকা শহর ও আশপাশের জেলার বাসিন্দারা নিয়মিতই ঘুরতে আসছেন এখানে। বিশেষ করে এখানকার বাঙ্গালবাড়ি বাতিঘরে সাধারণ লোকজন ভিড় করছে প্রাচীন ব্যবহার্য তৈজসপত্র ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাওয়া গ্রাম-বাংলার নানা সংরক্ষণ দেখতে। সরেজমিন ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে পূর্বাচলের চিত্র। পবিত্র ঈদ-উল-আযহার দিন থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় করছে উন্মুক্ত বিনোদনের স্বাদ নিতে। এখানে বেড়াতে এসে সবরকম বিনোদন পাচ্ছে তারা। ঘোড়ার গাড়ি, গরুর গাড়ি, চরকি চড়া, নৌকা দোলা, নৌকা ভাড়া করে নদীতে ঘোরা, ইচ্ছে হলেই সাঁতার কাটা যায়। এছাড়া বেশ কয়েকটি সুইমিংপুলে সামান্য অর্থ খরচ করে সাঁতার কাটার নিরাপদ আয়োজন রয়েছে। দর্শনার্থীদের আহারের জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত অস্থায়ী খাবার হোটেল। সেখানে সাধারণ খাবার থেকে শুরু করে বিদেশী রান্না করা খাবার মিলছে স্বল্প দামে। এতে আকৃষ্ট হচ্ছে তারা। এছাড়া পূর্বাচল উপশহরের আশপাশের পার্কগুলোও ঘুরে দেখছে। যদিও সেখানে টাকা খরচ করে প্রবেশ করতে হয়। তবে বেশ মজা নিচ্ছে পূর্বাচলের নির্মল পরিবেশে ঘুরে। বিশেষ করে পূর্বাচল উপশহরের ৯নং সেক্টরে বাঙ্গালবাড়িতে ভিড় করছে উৎসুক জনতা। বাঙ্গালবাড়ি বাতিঘর নামের একটি জাদুঘর দেখতে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। সম্প্রতি বাঙ্গালবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ওই বাড়িতে রয়েছে পুরনো নানা স্মৃতি বিজড়িত সব সংরক্ষণ। বাপ, দাদা কিংবা ও দাদার, দাদার কালের নানা ব্যবহৃত তৈজসপত্র দেখতে দর্শনার্থীরা তাদের পরিবারের সদস্য ও শিশুদের নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। কথা হয় আবদুল হক ভূঁইয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী মাহিরা তাসফি প্রভার সঙ্গে। সে জানায়, প্রথমবার হুক্কা, হারমোনিয়াম, গিটার, একতারা, যাঁতা, সিঁকা, কাহাল ছিঁয়া, বিশেষ দোলনা, পাখা, চাপ টিউবওয়েল, গরুর গাড়ি, পালকি, বাবুই পাখির বাসা, মাটির সানকি, বাঁশের বাঁশি, বীণসহ নানারকম পুরনো দিনে তৈজসপত্র দেখতে পাচ্ছে শিশুরা। এর আগে এগুলো বইয়ে পড়েছে বলে জানায়। এ সময় প্রভা আরও জানায়, বাঙ্গালবাড়িতে আরও অনেক কিছু আছে যা সে চিনে না। তার বাবাও বলতে পারেননি। বাঙ্গালবাড়িতে উপজেলার মর্তুজাবাদ থেকে ঘুরতে আসা অভিভাবক সাইফুল ইসলাম জানান, তার তিন সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে পূর্বাচলে ঘুরতে এসেছেন। এসেই শুনলেন এখানে বাঙ্গালবাড়ি রয়েছে। এ সময় তাদের নিয়ে বাঙ্গালবাড়িতে যান তিনি। নানা পুরনো সংরক্ষণ দেখে শিশুদের কৌতূহলের শেষ নেই। অনেক কিছু তিনিই চেনে না বলে জানান। বাঙ্গালবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা লায়ন মীর আবদুল আলীম বলেন, ‘আধুনিকতার ছোঁয়ায় আমরা অতীতকে ভুলে যাই। তাই আমাদের নতুন প্রজন্মকে সেসব হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই বাঙ্গালবাড়িতে নানা পুরনো জিনিসপত্র সংগ্রহ চলছে। ইতোমধ্যে বেশকিছু সংরক্ষণ করা হয়েছে। -মীর আবদুল আলীম, রূপগঞ্জ থেকে
×