ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

যিশু ফিলিস্তিনীদের সংগ্রামের প্রেরণা

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭

যিশু ফিলিস্তিনীদের সংগ্রামের প্রেরণা

ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এক বাণীতে শুক্রবার সারাবিশ্বের খ্রীস্টানদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি যিশুকে ফিলিস্তিনী সংগ্রামের প্রেরণা হিসেবে অভিহিত করেছেন। খবর জেরুজালেম পোস্ট ও ওয়াই নেটের। রামাল্লা থেকে বড়দিন উপলক্ষে দেয়া বাণীতে আব্বাস লেখেন, ৬ ডিসেম্বর ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি অবৈধ। ইসরাইল বসতি সম্প্রসারণ ও তা অব্যাহত রেখে সারাবিশ্বের মানুষকে অপমান করেছে। ফিলিস্তিনীরা যিশুর কাছ থেকে প্রেরণা পায়। এজন্য তারা মার্কিন নীতি প্রত্যাখ্যান করেছে। যদিও মার্কিন প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্যায়কারীদের পুরস্কার দেয়ার এবং যারা তাদের সমর্থন করবে না তাদের দেখে নেয়ার হুমকি দিয়েছে। আমরা মুক্তি ও স্বাধীনতার পথে এগিয়ে যাব। আমরা যিশুর বাণী থেকে প্রেরণা পেয়েছি। তিনি অন্যায়কে প্রত্যাখ্যান করেছেন ও আশার বাণী ছড়িয়ে দিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট আব্বাস বাইবেল থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘ধন্য তারা যারা ন্যায়বিচার পেতে ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত থাকে’। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিশেষ অধিবেশন আহ্বান করায় অনুদান কমিয়ে দেয়ার হুমকির কথা উল্লেখ করে আব্বাস বলেন, যারা ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন তাদেরকে হুমকি দেয়া হয়েছে। তারা সবাই আমাদের জাতি ও সারাবিশ্বের মর্যদাপূর্ণ কোটি কোটি মানুষের সমর্থন পেয়েছেন। বেথলেহেমের চারপাশে ১৮টি অবৈধ বসতির কাজ চলছে। এগুলো ফিলিস্তিনী ভূমির দিকে বিস্তৃত করা হচ্ছে। ইসরাইল প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রকল্প নিয়ে আসছে। ফলে বৃহত্তর জেরুজালেমবাসী ফিলিস্তিনীদের মত দুঃখে রয়েছে। দুঃখজনক হলেও এটি সত্য যে আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধে কাজ করার সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র নিয়েছে। পুরস্কার হিসেবে তারা জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী স্বীকৃতি দিয়েছে। ওয়াশিংটনের অবৈধ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে পবিত্র শহর বেথলেহেম ও জেরুজালেমের মধ্যে সম্প্রীতি ছিন্ন হয়েছে। দুটি শহরই দুই হাজার বছরেরও বেশি সময়ের খ্রীস্টান ধর্মকে প্রথমবারের মত আলাদা করা হল। আব্বাস বলেন, পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনীদের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বর্তমানে যে ধরনের শান্তি প্রক্রিয়া উত্থাপন করা হয়েছে তা ফিলিস্তিনীরা প্রত্যাখ্যান করেছে। এটা এজন্য যে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত সমর্থন অবৈধ। যাতে আমাদের অধিকার লঙ্ঘন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রকে আমরা শান্তি প্রক্রিয়ায় মধ্যস্ততাকারী হিসেবে ও তাদের পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত কোন পরিকল্পনা গ্রহণ করব না। কেননা যুক্তরাষ্ট্রের পছন্দ পক্ষপাতদুষ্ট। তাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা ১৯৬৭ সালের সীমান্ত সমস্যা অনুযায়ী দুই রাষ্ট্রের ভিত্তিতে সমাধান হচ্ছে না। এমনকি তা আন্তর্জাতিক আইন অথবা জাতিসংঘের প্রস্তাবের ভিত্তিতেও হবে না। আমরা বিশ্বের সব খ্রীস্টানের কাছে পবিত্র ভূমির জন্য সত্যিকারের কণ্ঠস্বর শুনতে চাই। সেই একই কণ্ঠস্বর যা জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী করার স্বীকৃতিকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করে। ইউনেস্কো থেকে নাম প্রত্যাহার ॥ যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করে ইসরাইল সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা জাতিসংঘের অঙ্গসংগঠন ইউনেস্কো থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেবে। ইরসাইল বিরোধী, পক্ষপাতদুষ্ট ও সংস্কারের অভাব এই অভিযোগে তারা নাম প্রত্যাহার করেছে। শুক্রবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে ইউনেস্কোতে তার দেশের প্রতিনিধিকে নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনী প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস ও ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যস্ততাকারী নয় বলে জানিয়েছেন। তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্র আর কোন রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশীদার হিসেবে কাজ করতে পারবে না। উভয়েই যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রক্রিয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
×