ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতা দিবসে দেশে ফিরে অবস্থান ব্যাখ্যা করব

প্রকাশিত: ০৬:১৬, ২০ নভেম্বর ২০১৭

স্বাধীনতা দিবসে দেশে ফিরে অবস্থান ব্যাখ্যা করব

সৌদি আরব সফরে গিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে হৈচৈ ফেলে দেয়া লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ আল হারিরি বলেছেন, বৈরুতে ফিরে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করবেন তিনি। শনিবার ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে বেঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। খবর এএফপির। সাদ হারিরি বলেন, লেবাননের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় নিয়ে আমি বুধবার বৈরুতে ফিরে যাব। স্বাধীনতা উদযাপনের অনুষ্ঠানে অংশ নেব, সেখানেই প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনের সঙ্গে বৈঠকের পর আমি আমার অবস্থান জানাবো। সংবাদ সম্মেলনে সাদ হারিরি মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা প্রশমনের জন্য চেষ্টা করায় ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে ধন্যবাদ জানান। বুধবার লেবাননের স্বাধীনতা দিবস। এক টুইট বার্তায় লেবাননের প্রেসিডেন্ট মিশেল আউনও ‘বুধবার সাদ বৈরুত ফিরবেন’ বলে জানিয়েছেন। সাদ প্যারিস থেকে তাকে ফোন করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে বৈরুতে ফেরার আগে সাদ আরব দেশগুলোতে ‘সংক্ষিপ্ত সফর’ করতে পারেন বলে জানিয়েছিলেন তার রাজনৈতিক দল ফিউচার মুভমেন্টের সদস্য ওকাব সাকর। তিনি পার্লামেন্টেরও সদস্য। ৪ নবেম্বর রিয়াদ থেকে সম্প্রচারিত এক টেলিভিশন বার্তায় নিজের প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা জানিয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ। তার এ ঘোষণায় লেবাননকে নতুন করে রাজনৈতিক সঙ্কটে ফেলে দেয়। মধ্যপ্রাচ্যের দুই আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব ও ইরানের চলমান উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করে। পদত্যাগের ঘোষণায় নিজের প্রাণনাশের আশঙ্কা প্রকাশ করে এজন্য হিজবুল্লাহ ও ইরানকে দায়ী করেছিলেন সাদ। তেহরান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল ও সৌদি আরবের সঙ্গে মিলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বাড়াতেই সাদের পদত্যাগের ঘোষণা। হিজবুল্লাহর অভিযোগ ছিল, রিয়াদ সাদকে আটকে রেখে পদত্যাগের ঘোষণা আদায় করে নিয়েছে। সৌদি আরব তা অস্বীকার করে। সাদ নিজেও তার ‘চলাচল সীমিত নয়’ বলে দাবি করেন। ইতোমধ্যে লেবাননে না ফেরা পর্যন্ত পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে না বলে ঘোষণা দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মিশেল আউন। এরপর বেশ কয়েকদিন পার হওয়ার পরও লেবাননে না ফেরায় ও প্রকাশ্যে না আসায় সৌদি আরব তাকে জিম্মি করে রেখেছে বলে অভিযোগ করে লেবানন। এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে এক টুইটে তাকে জিম্মি করে রাখার দাবিকে মিথ্যা বলে অভিহিত করেন সাদ। সৌদি আরবও অভিযোগ অস্বীকার করে। এর মধ্যেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আকস্মিক সফরে সৌদি আরবে গিয়ে দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখা করে লেবানন পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। গত বুধবার ম্যাক্রোঁ জানান, তিনি সাদ ও তার পরিবারকে প্যারিসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তার আমন্ত্রণেই শনিবার প্যারিসে যান সাদ। সৌদি আরব ও লেবাননের সঙ্গে ফ্রান্সের সুসম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে ম্যাক্রোঁ সাদকে রিয়াদ থেকে প্যারিসে নিয়ে যেতে এবং লেবানন সঙ্কট সমাধানের পথ বের করতে সক্ষম হয়েছেন বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। একে ফরাসী প্রেসিডেন্টের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবেই দেখছেন তারা। প্যারিসে প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাত করার পর সাদ আরও কয়েকটি আরব দেশের রাজধানী সফর করবেন বলে সংবাদ প্রচার করেছিল বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম। সাদের ফ্রান্স সফর লেবাননকে ঘিরে দুই আঞ্চলিক পরাশক্তি সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যকার উত্তেজনা কিছুটা কমিয়ে আনতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
×