ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভিক্ষুকরা এখন উন্নয়নকর্মী

প্রকাশিত: ০৩:৫৭, ২৮ অক্টোবর ২০১৭

ভিক্ষুকরা এখন উন্নয়নকর্মী

চল্লিশ বছর আগে মারা যাওয়া তহির উদ্দিনের স্ত্রী মোজে বেওয়া (৬৫) এখন ক্ষুদ্র মুদি দোকানের মালিক হয়েছেন। অথচ স্বামীর মৃত্যুর পর তার বেঁচে থাকার একমাত্র পথ ছিল ভিক্ষাবৃত্তি। সেই ভিক্ষুকের গ্লানি মুছে ফেলে তিনি আজ একজন উন্নয়ন কর্মীতে রূপান্তরিত হয়েছেন। বৃদ্ধ বয়সে মোজে বেওয়া এখন কর্মব্যস্ত নারী। মুখে অনাবিল হাসির রেখা সারাক্ষণ ঘুরপাক খাচ্ছে। শুধু মেজো বেওয়া নয় এমন শত শত ভিক্ষুক ভিক্ষার পথ ছেড়ে দিয়ে উন্নয়ন কর্মীর খাতায় নাম লিখিয়েছে। ভিক্ষার কথা জানতে চাইলে এখন তারা লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলেন। ভিক্ষুকমুক্ত কিশোরীগঞ্জ উপজেলাকে বর্তমান সরকারের দেয়া অনুদানে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। ফলে আজ মোজে বেওয়ার মতো শত শত ভিক্ষুক পুনর্বাসিত হয়ে নিজেরাই নিজেদের তৈরি করেছে উন্নয়নকর্মী হিসেবে। এদিকে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে দেয়া এই উন্নয়ন কর্মীদের কর্মব্যস্ততা দেখেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহীম। মঙ্গলবার সারাদিন তিনি এই সব উন্নয়ন কর্মীদের সঙ্গে কাটান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মেহেদী হাসান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাহিদ তামান্না। জেলা প্রশাসক বলেন, দেশের প্রথম ভিক্ষুকমুক্ত উপজেলা কিশোরীগঞ্জ। এর আলোকে নড়াইল জেলা ও খুলনা বিভাগ ভিক্ষুুকমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এটিকে একটি মডেল হিসেবে নিয়ে গোটা জেলাকে ভিক্ষুুকমুক্ত ঘোষণার কাজ চলছে। এক জরিপে জেলা ভিক্ষুুকের সংখ্যা তিন হাজার বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে তাদের হাঁস, মুরগি ছাগল ও স্যানিটেশন টয়লেট প্রদান করা হয়েছে। এখন তাদের মধ্যে কে কি কিভাবে উন্নয়নকর্মীতে পরিণত হতে চায় সেটির কাজ চলছে। কিশোরীগঞ্জ উপজেলা শহরের বাজার পাড়ার আকবর আলী (৫৫) বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ভিক্ষুকদের কথা ভেবে সারাদেশে যে ভিক্ষুকমুক্ত করার কর্মসূচী হাতে নিয়েছে তা দেশের উন্নয়নের মাইলফলক। আমরা কিশোরীগঞ্জবাসী দেশের প্রথম ভিক্ষুকমুক্ত উপজেলার বাসিন্দায় পরিণত হয়েছি। -তাহমিন হক ববী, নীলফামারী থেকে
×