স্টাফ রিপোর্টার ॥ টানা বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতার কারণে রাজধানীর বেশিরভাগ সড়কেরই এখন বেহাল দশা। মূল সড়ক থেকে অলিগলি সর্বত্রই একই হাল। বেশিরভাগ সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সড়কে বছরজুড়ে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাধীন প্রায় এক হাজার কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। অন্যদিকে উত্তরের আওতায় রয়েছে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার রাস্তা। দুই সিটির প্রাথমিক হিসাব মতে, এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০০ কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খারাপ। প্রতিবছর রাস্তা মেরামতে বাজেটের একটি বড় অংশ ব্যয় করে দুই সিটি কর্পোরশন। চলতি বছর ডিএসসিসির বাজেটে এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৩০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। ডিএনসিসি সড়ক মেরামত ও উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে গত অর্থবছর দুই সিটির সড়ক মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রায় ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিম্নমানের পণ্য দিয়ে রাস্তা তৈরির কারণেই এ অবস্থা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সড়কগুলো ১০-১৫ টন ওজনের গাড়ি চলাচলের জন্য তৈরি করা হয়। কিন্তু ৪০-৫০ টন ওজনের গাড়ি চলাচল করায় রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মালিবাগের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, এ এলাকার রাস্তা দিয়ে চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে। আমাদের এ দুর্ভোগ যেন দেখার কেউ নেই। রামপুরা এলাকার ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, রামপুরা বাজার থেকে উত্তর বাড্ডার রাস্তায় অসংখ্য খানাখন্দ। বাস, রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা যা দিয়েই চলাফেরা করি না কেন সবই গর্তে পড়ে যায়। ফলে যেকোন সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। আর সামান্য বৃষ্টিতেই কাদা আর পানি মিলে একাকার হয়ে যায়। এতে বোঝার উপায় থাকে না কোথায় খানাখন্দ আর কোথায় সমতল। সড়কের বেহাল দশার বিষয়ে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, এ বছর বৃষ্টি আগে থেকেই শুরু হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় বৃষ্টি বেশিও হয়েছে। তাই রাস্তার অবস্থা খারাপ। আমাদের এক হাজার কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ (প্রায় ৩০০ কিমি.) রাস্তা ভেঙেছে বলে ধারণা করছি। অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তর সিটি কর্পোরেশনের এক প্রকৌশলী জানান, ১২০০ কিমি. রাস্তার মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা রাস্তাগুলো পরিদর্শন করে ইট-সুরকি দিয়ে মেরামত করছি।