ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জের যমুনা পাড়ের বাঁধ নির্মাণ

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২৯ জুলাই ২০১৭

সিরাজগঞ্জের যমুনা পাড়ের বাঁধ নির্মাণ

বন্যা ও ভাঙ্গনের কবল থেকে আবাদী ফসল ও ঘরবাড়ি রক্ষায় সিরাজগঞ্জে যমুনাপাড়ে প্র্রায় দুই কিমি বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। সিরাজগঞ্জের উজানে সদর উপজেলার বাহুকা ও কাজীপুর উপজেলার শুভগাছা এবং বীরশুভগাছায় পানি উন্নয়ন বিভাগ জরুরী ভিত্তিতে এই বাঁধ নির্মাণ করেছে। এতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রায় দুই মাস আগে ক্ষতিগ্রস্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধের অভ্যন্তরে আরও একটি রিং বাঁধ নির্মাণ করে চলতি বর্ষায় মানুষের সহায় সম্পদ রক্ষা করা হয়েছে। কোন রকম প্রশাসনিক অনুমোদন এবং ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ না করেই এই বাঁধ নির্মাণ কাজ শেষে করেছে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগ। এই বাঁধ নির্মাণের পর এলাকার মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। তবে রিং বাঁধের সম্মুখভাগে একটি সড়ক বাঁধ গত ১৩ জুলাই রাতে পানির প্রচ- চাপে ভেঙ্গে নবনির্মিত রিং বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিচলিত হয়ে উঠে বাঁধ সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ। বাঁধ সংলগ্ন বাহুকা, ইটালী ও গজারিয়ার শতাধিক বাড়ি ঘর বন্যার পানিতে প্লাবিত। প্রায় ১৫ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাদের চিৎকারে রাতেই বাহুকার মানুষ বাঁধ ভাঙ্গা স্থানে জড়ো হয়ে স্বেচ্ছায় শ্রম দিতে থাকে ভাঙ্গন রোধের জন্য। কিন্তু না, কিছুই করা যায়নি। রাক্ষুসী যমুনা যেন রুদ্্র মূর্তি নিয়ে লোকালয়ে ঢোকার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে ভোরে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর, পানি উন্নয়ন বিভাগ, পুলিশ, ঠিকাদার শ্রমিক সঙ্গে নিয়ে ভাঙ্গন স্থানে প্রতিরোধ ব্যূহ গড়ে তোলে। এলাকার মানুষও তাদের সহায়তা করে। প্রায় দুই মাস আগে থেকেই সিরাজগঞ্জের উজানে এবং ভাটিতে যমুনায় ভয়াবহ ভাঙ্গন শুরু হয়। নদীতে বিলীন হয়ে যায় বাহুকা, শুভগাছার প্রায় আড়াই শ’ ফুট বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এছাড়াও প্রায় দুই কিমি এলাকাজুড়ে বাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙ্গন দেখা দেয়। পুরো বর্ষা মৌসুমে বন্যার পানিতে মানুষের জানমালের ক্ষয় ক্ষতির কথা চিন্তা করে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। সিরাজগঞ্জে যমুনাপাড়ের অসময়ের ভাঙ্গনে জমি-জিরাত ও জানমালের ক্ষতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ভাঙ্গনরোধে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ ও বাহুকা, শুভগাছায় বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অভ্যন্তরে আরও একটি রিং বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। কিন্তু বাঁধ নির্মাণে চিরাচরিত নিয়ম অনুযায়ী সরকারের প্রশাসনিক অনুমোদন, জমি অধিগ্রহণর এবং ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ করে সংশ্লিষ্ট বিভাগ করার কথা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হয়েছে। এটি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নির্বাচনী এলাকা। এ অঞ্চলের মানুষ নেতার প্রতি আস্থা রেখে এবং নিজেদের জানমাল রক্ষার বৃহত্তর স্বার্থে দ্রুত বাঁধের কাজ শেষ করার জন্য জমি দিয়েছে। মাত্র দুই মাসের মধ্যেই প্রকল্প এলাকায় যমুনা নদীর তলদেশ থেকে ড্রেজিং করা অপসারিত মাটি বাঁধে কাজে লাগিয়ে নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। এদিকে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম যমুনার ভাঙ্গন প্রসঙ্গে বলেছেন- অসময়ে যমুনায় এমন ভাঙ্গন এর আগে কখনও হয়নি। তবে পানি কম থাকায় ক্ষতি হয়নি। যমুনা নদীর ভাঙ্গন থেকে সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলার খুদবান্দি, সিংড়াবাড়ি ও বাহুকা- শুভগাছা এলাকায় স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক কাজের জন্য প্রকল্প হাতে নিয়ে তা উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় চার শ’ পঁয়ষট্টি কোটি টাকা। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। বাবু ইসলাম সিরাজগঞ্জ থেকে
×