ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র কাটাখাল সংস্কারে উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ২৯ জুলাই ২০১৭

সিরাজগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্র কাটাখাল সংস্কারে উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ ॥ ঢাকার হাতিরঝিল প্রকল্পের আদলে সিরাজগঞ্জ শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত কাটাখাল সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ব্রিটিশ শাসনামলের ঐতিহ্যবাহী এ কাটাখাল সংস্কার করে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলাসহ অত্যাধুনিক বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। প্রকল্প স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনও দেয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এ প্রকল্পের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পুরো টাকার বরাদ্দও মিলেছে। ব্রিটিশ শাসনামলে যমুনা নদীর সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে ব্রিটিশ বেনিয়ারা সিরাজগঞ্জ শহরের ভেতর দিয়ে খাল খনন করে। এ খাল বড়াল নদী নামে সরকারের মানচিত্রে স্থান করে নিয়েছে। এ বড়াল নদী শহর ভেদ করে পার্শ¦বর্তী কামারখন্দ উপজেলায় হুড়াসাগর নদীতে মিশে গেছে। এককালের পাট বন্দর হিসেবে খ্যাত সিরাজগঞ্জে ব্রিটিশ বেনিয়ারা প্রমোদতরীসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এ নদী ব্যবহার করেছে। সিরাজগঞ্জ শহরের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এ হুরাসাগর নদী কালের বিবর্তনে কাটাখালে পরিণত হয়। আরও পরে তা মরাখালে পরিণত হয়েছে। এ কাটাখাল শহরের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম। খালের জন্যই বৃষ্টি-বাদল যতই প্রবল হোক, অতীতে শহরে কোন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো না। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে জনগণ আজ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ পৌরসভা এ কাটাখাল সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য একজন পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কাটাখাল সংস্কারের জন্য ২২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত এ মরাখাল ছিল শহরবাসীর দুঃখ। পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিল না। এর আগে উদ্যোগ নেয়া হলেও তা ছিল অর্থ লুটপাট ও লোক দেখানো প্রকল্প। বর্তমানে এ প্রকল্পে আট কিলোমিটার খাল খনন করে এর সঙ্গে ফুটপাথ, ড্রেন, সড়ক ও ব্রিজ এবং সিঁড়ি নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও সড়কবাতি, ঘাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে খালের সৌন্দর্য বাড়ানো হবে বলে সিরাজগঞ্জ পৌরসভার মেয়র সৈয়দ আব্দুর রউফ মুক্তা জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ঢাকার হাতিরঝিল প্রকল্পের সঙ্গে তুলনা করে সিরাজগঞ্জ শহরের কাটাখালের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে। সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত মুন্না বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশে নদী-খাল খনন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কাটাখাল সংস্কার করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ইতোমধ্যেই এ প্রকল্পে ২৩ কোটি টাকার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ঢাকার হাতিরঝিল প্রকল্পের সঙ্গে তুলনা করে কাটাখালের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই এ প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। সিরাজগঞ্জ শহরকে স্বচ্ছ পানি ও নৌযান চলাচলের মধ্য দিয়ে দুই ভাগে ভাগ করেছিলে যে কাটাখাল, সেই কাটাখাল নতুনভাবে জন্ম নেবে। প্রয়োজনে আরও কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। কিন্তু কাটাখালকে আর মৃত দেখতে চাই না।
×