ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

পুঁজিবাজারে চার মাসে সর্বোচ্চ লেনদেন

প্রকাশিত: ০৬:৩৩, ১১ জুলাই ২০১৭

পুঁজিবাজারে চার মাসে সর্বোচ্চ লেনদেন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সোমবার মূল্যসূচকের উর্ধমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। দুই বাজারেই লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। এই দিনে চার মাসের সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা লেনদেন করেছে। দিনটিতে ব্যাংক খাতের শতভাগ কোম্পানির দর বেড়েছে। এছাড়া বড় মূলধনী কোম্পানির গ্রামীণফোনের দর বেড়েছে বেশি। এই দুটি খাতই সূচকের উত্থানে বড় ভূমিকা রেখেছে। একই সঙ্গে বাজারে নতুন টাকার প্রবাহ বাড়ানোর কারণেও এক ধরনের আস্থার পরিবেশ বিরাজ করছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার এবং ব্যাংকে আমানতের সুদের হার কমে যাওয়ার কারণে পুঁজিবাজারের দিকে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এই কারণে দীর্ঘদিন ধরে বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া বিনিয়োগকারীরাও নতুন করে আশা দেখছেন। একই সঙ্গে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়াও লেনদেন বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা আগের তুলনায় বাড়া এবং জুন ক্লোজিং কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশকে ঘিরে বাজারে শেয়ারের চাহিদা বেড়েছে। সোমবারের ব্যাংক খাতের চাহিদা থাকলেও মূলত ছোট মূলধনী বীমা কোম্পানিগুলোর দর বেড়েছে বেশি। শুধু তাই নয় দিনটিতে দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে ৬টিই বীমা খাতের। তবে সেগুলো সাধারণ বীমা। জীবনবীমা কোম্পানিগুলোর দর খুব বেশি বাড়েনি। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সোমবার ডিএসইতে ১ হাজার ২৬৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় ১০৪ কোটি ১ লাখ টাকা বেশি। রবিবার ডিএসইতে ১ হাজার ১৬০ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নেয় ৩২৮টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৮টির, কমেছে ১২১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির শেয়ার দর। এদিকে ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্যসূচক ৫২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৮২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩১৯ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ২ হাজার ১২২ পয়েন্টে। আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্টের বাজার পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, আগামীর কর্পোরেট ঘোষণাকে সামনে রেখে দেশের পুঁজিবাজারের ইতিহাসে সূচক সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৮২৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। গ্রামীণফোনের ৩.২ শতাংশ দরবৃদ্ধির দিনে সার্বিক সূচকটি মোট ৫২.৯০ পয়েন্ট বেড়েছে। তবে দিনটিতে ব্যাংকের দর বেড়েছে ২.৩ শতাংশ করে। দিনটিতে কিছুদিন ধরে অব্যাহতভাবে দর বাড়তে থাকা বস্ত্র খাতের দশমিক ৮০ শতাংশ দর কমেছে। ওষুধ এবং রসায়ন খাতটি মোট ১৭ শতাংশ লেনদেন করে শীর্ষে অবস্থান করছে। এই দিনে গত চার মাসের সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার লেনদেন করেছে। ডিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : কেয়া কসমেটিক, সাইফ পাওয়ার, বে´িমকো, কনফিডেন্স সিমেন্ট, প্রাইম ব্যাংক, ফু-ওয়াং ফুড, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, এ্যাপোলো ইস্পাত ও বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম। দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ফু-ওয়াং ফুড, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বিজিআইসি, ১ম প্রাইম মিউচুয়াল ফান্ড, পূরবী জেনারেল, ফেডারেল ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও ফার্স্ট ব্যাংক। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : কে এ্যান্ড কিউ, প্রগেসিভ লাইফ, সিমটেক্স, বিডি ওয়েল্ডিং, ইনটেক, ন্যাশনাল হাউজিং এ্যান্ড ফিন্যান্স, নর্দান জুট, প্যাসিফিক ডেনিম, ডেল্টা স্পিনার্স ও প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল। অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সেঞ্জে (সিএসই) ৮১ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৬৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৮ হাজার ৬৪ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৬৩টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৪টির, কমেছে ৯২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টি কোম্পানির শেয়ার। সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : কেয়া কসমেটিক, ফু-ওয়াং ফুড, সাইফ পাওয়ারটেক, বিকন ফার্মা, এ্যাপোলো ইস্পাত, ন্যাশনাল ব্যাংক, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো ও তুং হাই নিটিং।
×