ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ হয়নি ॥ মেনে নিলেন ট্রাম্প

প্রকাশিত: ০৩:৪৬, ৯ জুলাই ২০১৭

নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ হয়নি ॥ মেনে নিলেন ট্রাম্প

রাশিয়া গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেনি, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের এ বক্তব্য মেনে নিয়েছেন তার মার্কিন প্রতিপক্ষ ডোনাল্ড ট্রাম্প, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এ দাবি করেছেন। তবে ওই বৈঠকে দুই প্রেসিডেন্টের মধ্যে কি কথাবার্তা হয়েছে তা নিয়ে পরস্পর বিরোধী খবর পাওয়া গেছে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও বিবিসি। জার্মানির হামবুর্গে জি-২০ সম্মেলনে ট্রাম্প ও পুতিন দু’জন দু’ঘণ্টার বেশি সময় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। দুই নেতার এই বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। প্রথমে আসে গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার সাইবার হস্তক্ষেপের প্রসঙ্গটি। এ ধরনের কর্মকা- ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি হুমকি’ বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে। তবে ওই নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ না করার দাবির পক্ষে যেসব যুক্তি দেয়া হয়েছে তার সবগুলো ট্রাম্প গ্রহণ করেননি বলে হোয়াইট হাউসের একজন কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ বিষয়ে দুই নেতার মধ্যে যে বাক্য বিনিময় হয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের বর্ণনায় তা ছিল বেশ জোরালো। যদিও বৈঠকের পর লাভরভ বলেন যে, এ বিষয়ে রাশিয়ার যে কোন দায় নেই পুতিনের এমন বক্তব্য মেনে নিয়েছেন ট্রাম্প। তবে আসলেই সেটি মেনে নিয়েছেন কি না টিলারসনের কথা সেটা স্পষ্ট হয়নি। লাভরভ বলেন, নির্বাচনের পর কয়েক মাস এটি নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক আলোচনা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে (মার্কিন) কংগ্রেসেও। এর পক্ষে কেউ কোন প্রমাণ উপস্থিত করতে পারেনি। তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, তা দূর করে আমরা সামনে এগিয়ে যেতে চাই।’ বৈঠকে নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ ছাড়াও সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধ, সন্ত্রাস এবং সাইবার নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলো উঠে আসে। টিলারসন বলেন, ‘আলোচনার জন্য এত বেশি ইস্যু ছিল যে, দু’জনের কেউই থামতে চাইছিলেন না। এক পর্যায়ে ফার্স্ট লেডিকে পর্যন্ত ভেতরে পাঠানো হয়েছিল, যদি আমাদের বের করে নেয়া যায়। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। এর পর আরও এক ঘণ্টা বৈঠক করেছি’। বৈঠক শুরুর আগে ক্যামেরার সামনে পুতিনকে উদ্দেশ্য করে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনার সঙ্গে দেখা হওয়ায় আমি সম্মানিত বোধ করছি’। জবাবে পুতিন বলেন, ‘আপনার সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে দেখা করতে পেরে আমি আনন্দিত’। কথা বলার জন্য দু’নেতা অনুবাদকের সাহায্য নেন।বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের পুতিন বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আমার দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়েছে। আমরা অনেক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছিলাম। আমাদের আলোচনায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, ইউক্রেন সঙ্কট, সিরিয়া পরিস্থিতিসহ আন্তর্জাতিক নানা বিষয় উঠে আসে।’ সাইবার হস্তক্ষেপের মতো সিরিয়া প্রসঙ্গ নিয়েও দুই নেতার মধ্যে অনেকক্ষণ কথাবার্তা হয়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটিতে তারা একসঙ্গে কাজ করতে পারবেন বলে দুই শীর্ষ নেতা আশা প্রকাশ করেন। হোয়াইট হাউস ইঙ্গিত দিয়েছে যে, পুতিনের কাছ থেকে ট্রাম্প এমন কোন নিশ্চয়তা পান নি যা থেকে ধারণা করা যেতে পারে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মস্কো কোন ধরনের নাক গলানোর চেষ্টা করেনি। এখন কার কথা সঠিক তা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। বৈঠক শেষে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ট্রাম্প। তিনি দ্রুত ছুটে যান হামবুর্গের এলফিলহারমোনিতে কনসার্টে। এই ভেন্যু জি-২০ নেতাদের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজের জন্য নির্ধারিত ছিল। ফার্স্টলেডি মেলানিয়া এ সময় ট্রাম্পের সঙ্গে ছিলেন। ট্রাম্প ও পুতিন কি কি বিষয়ে আলোচনা করেন সেটি ছাড়াও দুই নেতা ব্যক্তিগতভাবে পরস্পরের সঙ্গে কি রকম আচরণ করেন তার প্রতি পর্যবেক্ষকদের বিশেষ আগ্রহ ছিল। কারণ ট্রাম্প ক্ষমতাসীন হওয়ার পর গত কয়েক মাসের মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে বেশ দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকেও এমন কথা বলা হয়েছিল। মাস খানেক আগে সিরিয়ায় একটি সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে ট্রাম্পের নির্দেশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর থেকে মস্কো ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হওয়া শুরু হয়।
×