ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিন পদ্ধতিতে পণ্য পরিবহন

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ১৬ জুন ২০১৭

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে তিন পদ্ধতিতে পণ্য পরিবহন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আন্তঃদেশীয়, ট্রানজিট ও ট্রান্সশিপমেন্ট তিনটি পদ্ধতিতে পণ্য পরিবহন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। বৃহস্পতিবার সংসদে সরকারী দলের এ কে এম শাহজাহান কামালের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশী নৌ-যান দ্বারা ২২ লাখ ৫০ হাজার ৯৭৪ মেট্রিক টন পণ্য এবং ভারতীয় নৌযান দ্বারা ৮ হাজার ৬৮০ মেট্রিক টন পণ্যসহ মোট ২২ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৪ মেট্রিক টন পণ্য পরিবাহিত হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশী নৌ-যান দ্বারা ৪ হাজার ৪৯৯ মেট্রিক টন ট্রানজিট পণ্য পরিবাহিত হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই পণ্য পরিবহনকালে বাংলাদেশী নৌযানসমূহ ভাড়া বাবদ ১ কোটি ৩৬ লাখ ৭৬ হাজার ৯৬০ টাকা অর্জন করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাত্রীবাহী অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় নৌপথে নৌযান চলাচলের জন্য উভয় দেশের নৌ-সচিব কর্তৃক ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বরে নয়াদিল্লীতে দুটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, আলোচ্য প্রটোকলের আওতায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহ ‘ট্রান্স-শিপমেন্ট’র মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের লক্ষ্যে আশুগঞ্জ নদী বন্দরে একটি ‘ইনল্যান্ড কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) নির্মাণের পরিকল্পনা সরকার গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, আইসিটি নির্মিত হলে নৌপথে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্যকে সমৃদ্ধশালী ও প্রসার ঘটানো সম্ভব হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালের ১৬ জুনে নৌপরিবহনমন্ত্রী অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থায় আশুগঞ্জ বন্দর দিয়ে ‘বাই-মডেল’ পদ্ধতিতে নিয়মিতভাবে ‘ট্রান্স-শিপমেন্ট’ কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন। এছাড়া ট্রানজিট মাশুল বাবদ প্রতি মেট্রিক টন পণ্যের জন্য ১৯২ দশমিক ২২ টাকা রাজস্ব অর্জিত হচ্ছে যা জাতীয় অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের নৌ-পথ অতিক্রম ও বাণিজ্য প্রটোকল ‘পিআইডব্লিউটি এ্যান্ড টি-এর অনুচ্ছেদ ৩ দশমিক ৩ থেকে ৩ দশমিক ৫ অনুযায়ী নৌরুট সংরক্ষণ বাবদ ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশকে প্রতিবছর ১০ কোটি টাকা পরিশোধ করে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরে দুইদেশের মধ্যে বাংলাদেশের যাত্রী পরিবহন সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এর মাধ্যমে যাত্রী ও পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের মাধ্যমে দুইদেশের পর্যটন খাত আরও শক্তিশালী হবে। মন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ২০১৫ সালের জুনে বাংলাদেশ সফরকালে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তিটিতে নতুন কিছু প্রবিধি সংযুক্ত হয়, যার প্রেক্ষিতে ভারতের ভূখ- ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে জলপথ, স্থলপথ ও রেলপথ তিন পথেই বাংলাদেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। মাহমুদ আলী বলেন, এ প্রবিধানগুলো অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল ও বাণিজ্য প্রটোকলেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের সঙ্গে যোগাযোগ সুবিধা নিশ্চিতকল্পে বর্তমান সরকারের সময়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এতে করে বাণিজ্য ও জনযোগাযোগ বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ফলে দেশ ও জনগণ উপকৃত হচ্ছে।
×