ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তীব্র পানি সঙ্কটে বিপর্যস্ত নগরজীবন

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১০ জুন ২০১৭

তীব্র পানি সঙ্কটে বিপর্যস্ত নগরজীবন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তীব্র পানি সঙ্কটে বিপর্যস্ত নগরজীবন। বিশেষ করে রাজধানীর উত্তরার অন্তত ৬টি সেক্টরে দুসপ্তাহ ধরে পানি না থাকায় দিশেহারা ওইসব এলাকার বাসিন্দারা। এমন পানিবিহীন পরিস্থিতিতে রমজানের বাকি দিনগুলো কিভাবে কাটবে, সেই চিন্তায় আতঙ্কিত তারা। স্থানীয় ওয়াসা কর্মকর্তা বলছেন, লোডশেডিয়ের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর উত্তরা। বলা হয় এটি ঢাকার সবচেয়ে পরিকল্পিত আবাসিক এলাকা। কিন্তু, গত দুই সপ্তাহ ধরে তীব্র পানি সঙ্কট এলোমেলো করে দিয়েছে এখানকার জনজীবন। উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের পানির পাম্পের সামনের দৃশ্য এটি। গাড়ির জন্য নয়। মালিকের বাড়ির জন্য পানি নিতে এসেছেন এই প্রাইভেটকার চালক। ৫ নম্বর সেক্টর থেকে রোজ অন্তত ৫ বার এভাবে পানি পানি বহন করতে হচ্ছে তাকে। পানির জন্য দিনভর কেউ না কেউ ছুটে আসছেন এখানে। তবে পাম্প থেকে পানি বহন করে বাসা-বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ভোগান্তিতে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠেছে রোজাদারদের। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পানির জন্য এই হাহাকার উত্তরা ৩, ৫, ৮, ১০, ১২ ও ১৪ নম্বর সেক্টরে। ভাড়াটিয়া চাপ দিচ্ছেন বাড়িওয়ালকে, আর বাড়িওয়ালা ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু সমাধান হচ্ছে না কিছুতে। ফলাফল, গৃহস্থালীর কাজকর্ম ও সুপেয় পানি যোগাড় করতে প্রতিদিন বাড়তি খরচ গুনতে হয় বাসিন্দাদের। উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের ১৪ নম্বর রোডে রজমান আলীর আট সদস্যের পরিবার এটি। পানির অভাব থেকে বাঁচতে ৪ জন গেছেন আত্মীয়ের বাড়িতে। বাকিরা কোনমতে দিন কাটাচ্ছেন বিকল্প ব্যবস্থা করে। সংকট সম্পর্কে জানতে স্থানীয় ওয়াসা কার্যালয়ে গেলে, সটকে পড়েন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী। এ সময় তার কক্ষে দেখা মিললো কয়েকজন ভুক্তভোগীর। উপবিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী জানান, পর্যাপ্ত বিদ্যুত না থাকায় পানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। দুসপ্তাহ বাসিন্দাদের কোনো সদুত্তর না দিলেও, এখন গণমাধ্যমকে আশ্বাস দিলেন দু’তিন দিনেই সমাধান হবে। রাজধানীতে দিন দিন তীব্র হচ্ছে গ্যাস সঙ্কট স্টাফ রিপোর্টার ॥ গ্যাসের দেখা নেই, তাই দিনের বেলায় জ্বলছে না চুলা। গ্যাস মিলছে গভীর রাতে। রাজধানীতে দিন দিন তীব্র হচ্ছে এ সঙ্কট। যা বেড়েছে রমজানে। এতে কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে নগরজীবন। তারওপর গ্যাসের জন্য এ মাস থেকে গুনতে হচ্ছে বাড়তি দাম। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিদ্যুতের ঘাটতি থাকায় গ্যাস সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে। রান্না বান্নার সব প্রস্তুতিই আছে, কিন্তু গ্যাস নেই, তাই উনুনে জ্বলছে না আগুন। রাজধানীর দক্ষিণখান, আশকোনা, বিমানবন্দর এলাকার প্রতিটি ঘরেই এখন এমন হাহাকার। দিনের আলোতে কখনোই মেলে না গ্যাসের দেখা। গভীর রাতে যখন নগর ঘুমায়, তখন একটু একটু করে বাড়ে গ্যাসের আঁচ। সেই সাথে অনেকের হেঁশেলেও বাড়ে ব্যস্ততা। দিন কিংবা মাস নয়, এলাকাটিতে এ সঙ্কট চলছে বছরের পর বছর। বাধ্য হয়েই ঘরের পাশে কেউ বসিয়েছে মাটির চুলা; আবার কেউ রান্না সারছেন সিলিন্ডারে। বছর দুয়েক আগে যেখানে দুই চুলার গ্যাসের জন্য সাড়ে চারশো টাকা দিতে হতো, এখন সেখানে মাস শেষে গুনতে হয় দিগুণের বেশি; সাড়ে নয়শো টাকা। একে তো সঙ্কট, তার ওপর বাড়তি মূল্য তিক্ততা বাড়িয়েছে নগরবাসীর। রাজধানীতে তীব্র গ্যাস সঙ্কট চলছে মিরপুর, গ্রিনরোড, মোহাম্মদপুর, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায়। কর্তৃপক্ষের দাবি, সরকারের নির্দেশে বিদ্যুতের জন্য গ্যাস সরবারহ বাড়ানোয় সঙ্কট বেড়েছে রাজধানীতে। তবে আশ্বাস মিলেছে, ঈদের পর কমতে পারে এই দুর্ভোগ।
×