ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়ালটন ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আজ আয়ারল্যান্ড

মাশরাফির ২০ রানের আক্ষেপ

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ১৯ মে ২০১৭

মাশরাফির ২০ রানের আক্ষেপ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে গেল বাংলাদেশ। তিনজাতি সিরিজে কিউইদের কাছে ৪ উইকেটে হারল। অথচ ম্যাচটিতে জেতার ভাল সুযোগ ছিল। যদি আর ২০টি রান স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারত বাংলাদেশ। তাহলে জেতার সম্ভাবনাও থাকত। আর এ জন্যই আক্ষেপে পুড়ছেন ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। এই আক্ষেপ নিয়েই আজ আবার স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে লড়াই করতে নামবে বাংলাদেশ। ম্যাচটি ডাবলিনের মালাহিড স্টেডিয়ামে বেলা পৌনে চারটায় শুরু হবে। বুধবার গভীর রাতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে হতাশ মাশরাফি বলেন, ‘সৌম্য রান করেছে। মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহও রান পেয়েছে। টপঅর্ডারে তামিম ও সৌম্য ভাল জুটি গড়েছে। তবে আমরা জুটিগুলোকে বড় করতে পারিনি। আউট হয়ে গেছি। ব্যাটিংয়ে আমাদের ২০ রানের ঘাটতি ছিল।’ আগে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ২৫৭ রান করেছে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার ৬১, মুশফিকুর রহীম ৫৫ ও মাহমুদুল্লাহ ৫১ রান করেন। শেষদিকে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ব্যাট থেকে আসে ৪১ রান। এ চার ব্যাটসম্যানই শুধু দলকে রান উপহার দিতে পেরেছেন। তবে শেষদিকে গিয়ে যে রান হবে আশা করা হয়েছিল সেইরকমটি হয়নি। ৪০ ওভারেই ১৯০ রান হয়ে যায়। ৫ উইকেটও হারায় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে তখন ছিলেন মাহমুদুল্লাহ ও মোসাদ্দেক। স্বাভাবিকভাবেই ১৭০ বা ১৮০ রান হওয়ার আশা করা হয়েছিল। শেষ ১০ ওভারে এজন্য লাগত ৮০ রান। শেষ ১০ ওভারে এই রান হয়ও। কিন্তু শেষদিকে ১০ ওভারে মাত্র ৬৭ রান করা গেছে। এখানেই পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ। তাছাড়া জুটিগুলোও খুব বড় হয়নি। বাংলাদেশ যে টার্গেট দেয়, তাও অতিক্রম করা নিউজিল্যান্ডের কাছে কঠিন ছিল। যদি বোলাররা ভালভাবে বোলিং করতে পারতেন। মুস্তাফিজুর রহমান যেন তার ছন্দ ফিরে পেয়েছেন। রুবেল হোসেনও দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। কিন্তু বাকিরা নৈপুণ্য দেখাতে ব্যর্থ হন। তাতে করে নিউজিল্যান্ডও ১৫ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেট হারিয়ে ৪৭.৩ ওভারে ২৫৮ রান করে জিতে যায়। ১৪৭ রানের মধ্যে লুক রনকি ও রস টেইলরকে মুস্তাফিজ ও টম লাথামকে আউট করে দেন রুবেল। আরেকটি রান আউট হয়। চার উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। এমন মুহূর্তে যদি আরেকটু ভাল বোলিং করে উইকেট তুলে নেয়া যেত তাহলে বাংলাদেশের হাতে জয় ধরাও দিতে পারত। কিন্তু হলো না। পঞ্চম উইকেটে নেইল ব্রুম ও জেমস নিশাম মিলে যে ৮০ রানের জুটি গড়ে দলকে ২২৭ রানে নিয়ে যান, সেখানেই নিউজিল্যান্ডের জয়ের সম্ভাবনা দাঁড়িয়ে যায়। ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত হারেও। মাশরাফি ব্যাটিংয়ের মতো বোলিং নিয়েও সন্তুষ্ট নন। তা হওয়ারও কথা না। মাশরাফি জানিয়েছেন, ‘শুরুর দিকে আমার বোলিং আরও ভাল হতে পারত, আমি পারিনি। মুস্তাফিজ ভাল করেছে। রুবেলও দারুণভাবে ফিরেছে। তবে বোলিংয়ে শুরুতে উইকেট নিতে হবে। সাকিবের শুরুটা ভাল ছিল।’ মুস্তাফিজের প্রশংসা করেন মাশরাফি, ‘মুস্তাফিজের জন্য একটা পরীক্ষা ছিল। যেটা উতরে গিয়ে ও অসাধারণ বোলিং করেছে। রুবেলের বোলিংও ছিল দুর্দান্ত।’ নিজ দল হারে। এরপরও প্রতিপক্ষের প্রশংসা করতে ভুলেননি মাশরাফি, ‘এই উইকেটে রান তোলাটা সহজ ছিল। যে জায়গায় নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানরা ছিল দুর্দান্ত। মিডল অর্ডারে ওরা ধারাবাহিকভাবে ছোট ছোট জুটি গড়েছে। ওই জুটিগুলোই আসলে গড়ে দিয়েছিল জয়ের ভিত।’ সাব্বির রহমান রুম্মন টানা দুই ম্যাচে ব্যর্থ হলেন। তবে সাব্বিরকে নিয়ে চিন্তিত নন মাশরাফি। বলেছেন, ‘সে তিনেই ভাল খেলে এসেছে। অবশ্যই এই ধরনের উইকেটে একটু চ্যালেঞ্জ থাকে। বিশেষ করে উপমহাদেশ থেকে আসা ব্যাটসম্যানদের জন্য। আশাকরি নিজের ভুলগুলো সে ধরতে পারবে। ও ছন্দেই ছিল। দুই ম্যাচ রান করতে পারেনি। আমার বিশ্বাস সে ছন্দে ফিরবে।’ শেষ পর্যন্ত মুস্তাফিজ ও রুবেলের বোলিংয়েই প্রাপ্তি খুঁজে পেয়েছেন মাশরাফি, ‘আমরা মোটামুটি একটা স্কোর করেছি। ২৬০ (আসলে ২৫৭) করে জেতা সব সময়ই কঠিন। সাকিব ভাল শুরু করলেও আমি পারিনি। তবে মুস্তাফিজ উইকেট নিয়েছে। রুবেলও ভাল বোলিং করেছে।’ এখন সামনে আয়ারল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যে আরও একটি করে ম্যাচ রয়েছে সেদিকেই চোখ রাখতে চান অধিনায়ক, ‘আমাদের ২০ রানের ঘাটতি ছিল। দ্রুত উইকেট নেয়াটা খুব দরকার ছিল। এসব উইকেটে ২৫০-৬০ করে জিততে হলে দ্রুত উইকেট নেয়া প্রয়োজন। আমাদের সেটাও হয়নি। আমাদের এখনও দুটি ম্যাচ বাকি। ভুলগুলো ঠিক করে নিতে পারব আশা করি।’ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়ে যায়। এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে হারে বাংলাদেশ। আজ আবার আইরিশদের বিপক্ষে ম্যাচে কিউইদের বিপক্ষে করা ভুলগুলো কতটা শুধরে নিয়েছে দল সেদিকেই সবার দৃষ্টি থাকছে।
×