ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফ্রান্সে ভোট ব্যাংক দ্বিধাবিভক্ত ॥ প্রথম দফায় হেরে যাওয়া ৮ দলই ইইউ বিরোধী

শহরে প্রভাব ম্যাকরনের গ্রামে লি পেনের

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ২৯ এপ্রিল ২০১৭

শহরে প্রভাব ম্যাকরনের গ্রামে লি পেনের

উন্মুক্ত বিশ্ব বনাম সীমান্তঘেরা দেশ, আধুনিকতা বনাম রক্ষণশীলতা এর মধ্যে কোন পথ তারা বেছে নেবে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে ফ্রান্সবাসীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ম্যাকরনের জন্য একটি সুখবর যে, প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয় ওঁলাদ তার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে বলেছেন, তাকে তিনি ভোট দেবেন। এতদ সত্ত্বেও একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, ম্যাকরন বা লি পেন কারও জন্য আগামী দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের পথ খুব একটা মসৃণ হবে না। কেননা গত রবিবারে প্রথম দফা নির্বাচনে যে ১১ দল অংশগ্রহণ করেছিল, এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, তাদের পেছনে জনসমর্থন আছে ৪৯ দশমিক ৬ শতাংশ এবং এই ১১ দলের ৮ দলই ইউরোপীয় জোট বিরোধী। এখন লি পেন যদি এই ৮ দলকে আস্থায় এনে ম্যাকরনের বিপক্ষে ঠেলে দিতে পারেন তবে লি পেনের জয়রথ ঠেকানোর কোন পথ ম্যাকরনের সামনে খোলা থাকবে না। ফ্রান্সে রবিবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রথম দফা ভোট ন্যাশনাল ফ্রন্টের উগ্র ডানপন্থী নেত্রী মেরি লি পেনের চেয়ে আড়াই শতাংশ ভোট বেশি পেয়ে রাজনীতিতে নবাগত মধ্যপন্থী নেতা ইমানুয়েল ম্যাকরন এগিয়ে যান। ৩৯ বছর বয়সী ম্যাকরনের রাজনীতিতে পদচারণা খুব বেশিদিনের নয়। ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠিত কোন রাজনৈতিক দলেরও তিনি আশীর্বাদপুষ্ট নন। পক্ষান্তরে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মেরি লি পেন তার পিতার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের বর্তমান কর্ণধার। রাজনীতি মাঠের গতি প্রকৃতি, আঁকাবাঁকা পথ সব তার জানা। তাই লি পেন বেশ আশাবাদী যে,আগামী ৭ মের দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই আড়াই শতাংশের বিভেদ রেখা পার হয়ে তিনি কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে সক্ষম হবেন। এই লক্ষ্যে পরিচালিত এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, লি পেন ফ্রান্সের ছোট ছোট শহর ও গ্রামাঞ্চলে বেশি ভোট পেয়েছেন। তার জাতীয়তাবাদী এবং বিশ্বায়ন ও অভিবাসী বিরোধী প্রচার এসব এলাকায় বেশি প্রভাব ফেলেছে। তাছাড়া নির্বাচনের মাত্র দু’দিন আগে চ্যাম্প এলিসিতে সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশ অফিসার নিহত হওয়ার ঘটনা নির্বাচনে তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলে। অনেকের মতে, ২০১৬ সালে ব্রেক্সিট ও যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ও ফ্রান্সের এ নির্বাচনে পরোক্ষ প্রভাব বিস্তার করে। ভূখ-গত ব্যবধান সত্ত্বেও ইংলিশ চ্যানেলের ওপাড়ে ব্রিটেনের টেরেসা মে যে সব যুক্তি দেখিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যকে আলাদা করেছেন, প্রায় একই ধরনের যুক্তি প্রদর্শন করে ফ্রান্সের লি পেন রাতারাতি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পক্ষান্তরে, ম্যাকরনের ইউরোপপন্থী উন্মুক্ত সীমান্তনীতি এবং উন্নয়নমূলক এজেন্ডা শহরের শিক্ষিত ও সচেতন জনগোষ্ঠীকে প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়। তাই আগামী ৭ মে দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুই বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী জনগোষ্ঠীকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন মত বা পথ ধরে তারা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। Ñনিউইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্ট
×