ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহী রেশম কারখানা চালুর দাবি

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ১৩ মার্চ ২০১৭

রাজশাহী রেশম কারখানা চালুর দাবি

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ রেশমকে ঘিরে উত্তরের বিভাগীয় শহর রাজশাহীর পরিচিত থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রাজশাহীর রেশম কারখানা সহসা চালু হচ্ছে না। এরই মধ্যে সরকার ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি চালু করার বিষয়ে সম্ভাব্য সমীক্ষা সম্পাদনের জন্য কমিটি গঠন করলেও রেশম ঐতিহ্যের শহরেই বন্ধ কারখানাটি খুলে দেয়ার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ রাজশাহীবাসী। প্রেক্ষিতে এ কারখানাটি অবিলম্বে খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছে রাজশাহীর বৃহৎ সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রম পরিষদ। ইতোমধ্যেই আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি, রাজশাহীর রেশম কারখানাটিও খুলে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হোক। তাহলে রাজশাহী ফিরে পাবে রেশমের ঐতিহ্য। ইতোমধ্যে রেশমকে রাজশাহী জেলার ব্র্যান্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত ৫ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা ব্র্যান্ডিং বিষয়ক প্রস্তুতি সভায় সর্বসম্মতক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু রাজশাহীর রেশম কারখানা খুলে দেয়ার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। রেশম রাজশাহীর ব্র্যান্ড হলে এর সঙ্গে রাজশাহীর রেশম কারখানাও চালুর যৌক্তিকতা রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। রেশম উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির দফতরের এক আদেশে ঠাকুরগাঁও রেশম কারখানাটি চালু করার বিষয়ে সম্ভাব্যতা-সমীক্ষা সম্পাদনের জন্য আট সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে দুই মাসের মধ্যে এই সমীক্ষা সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। ওই আদেশক্রমে চিঠিতে সহকারী সচিব হায়দার আলী মোল্লা স্বাক্ষর করেন। এই চিঠির অনুলিপি শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ১৫ কর্মকর্তাকে দেয়া হয়েছে। সূত্র মতে, রাজশাহী নগরের শিরোইল বাস টার্মিনাল এলাকায় ১৯৬১ সালে সাড়ে ১৫ বিঘা জমির ওপর রেশম কারখানাটি নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৬ সালে সরকার প্রায় ১০ কোটি টাকার নতুন যন্ত্রপাতি কিনে দিয়ে কারখানাটির আধুনিকায়ন করে। তবে ২০০২ সালের ৩০ নবেম্বর মূলধন না থাকার অজুহাতে কারখানাটি বন্ধ করে দেয় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। এতে প্রায় ৩০০ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়ে। পাশাপাশি রেশমকে ঘিরে আরও প্রায় ৫০ হাজার পলুচাষী বিপাকে পড়েন। সে সময় আন্দোলন করেও কারখানাটি চালু করতে পারেননি রাজশাহীবাসী। হতাশা থেকে এ অঞ্চলের পলুচাষীরাও চাষ কমিয়ে দেন। এদিকে রাজশাহী রেশম কারখানাটি খুলে দেয়ার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, এ কারখানায় কর্মচারী ছিলেন প্রায় ৩০০ জন। কারখানা বন্ধ করে দেয়ার পর রাজশাহীবাসী আন্দোলন করেছে। যেখানে রেশমের প্রাণ কেন্দ্র সেখানকার কারখানা খুলে না দিয়ে ঠাকুরগাঁও কারখানা খোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যা রাজশাহীবাসী মেনে নেবে না বলে জানান তিনি। জামাত খান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাজশাহী ব্র্যান্ডিং হলো রেশম। রেশমকে ঘিরে রাজশাহীর অনেক ইতিহাস ঐতিহ্য রয়েছে। সম্প্রতি রেশমকে রাজশাহী জেলার ব্র্যান্ড করার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও কারখানা চালুর কোন উদ্যোগ না নেয়ার বিষয়টি হতাশাজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ নগরবাসীকে নিয়ে শীঘ্রই রেশম কারখানা চালুর দাবিতে আন্দোলনে নামবে। ইতিমধ্যে আন্দোলনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
×