ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

মার্কিন নির্দেশনা মানব না ॥ লুইস ভিদেগারে

মেক্সিকোর দৃঢ় প্রত্যাখ্যান

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মেক্সিকোর দৃঢ় প্রত্যাখ্যান

যুক্তরাষ্ট্রে অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বহিষ্কারের বিষয়ে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি মঙ্গলবার যে নির্দেশনা জারি করেছে সেটি প্রত্যাখ্যান করেছে মেক্সিকো। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের নেয়া সর্বশেষ এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে প্রায় সব অবৈধ অভিবাসী বহিষ্কারের ঝুঁকির মুখে পড়বে। খবর বিবিসি অনলাইনের। মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইস ভিদেগারে বুধবার বলেছেন, ‘তার দেশ কোন দেশের অপর একটি দেশ সম্পর্কে একতরফা কোন সিদ্ধান্ত মেনে নেবে না।’ এই বিতর্ক এমন এক সময় সামনে এলো যখন দুই শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা মেক্সিকো সফর করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি জন কেলি বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই মেক্সিকোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। বিদ্যমান মার্কিন অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষকে এমন কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছে যে অবৈধ অভিবাসী যে দেশ থেকেই আসুক তাকে মেক্সিকোতে বহিষ্কার করা যাবে। এখন মেক্সিকোকে বিদেশী অভিবাসী গ্রহণে বাধ্য করার কর্তৃত্ব যুক্তরাষ্ট্রের আছে কিনা তা স্পষ্ট নয়। ভিদেগারে বলেন, ‘আমরা এদের গ্রহণ করতে পারি না, মেক্সিকোর স্বার্থ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়।’ তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে মেক্সিকোর সাধারণ নাগরিকরা যে মানবাধিকার, স্বাধীনতা ও অন্যান্য অধিকার ভোগ করার দাবি রাখে তা নিশ্চিত করার জন্য তার দেশ জাতিসংঘের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দ্বারস্থ হতে দ্বিধা করবে না।’ তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সীমান্ত নীতি তারা মেনে নেবে না। ট্রাম্প প্রশাসন মঙ্গলবার দেশটিতে বৈধ কাগজপত্র নেই বা নথিভুক্ত নন এমন অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে নতুন করে দিক-নির্দেশনা জারি করে। এরই অংশ হিসেবে অপরাধের রেকর্ড আছে এমন অনিবন্ধিত অভিবাসীদের প্রথমে টার্গেট করা হবে। সেই সঙ্গে খোঁজা হবে তাদের যারা মার্কিন নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি কিংবা সামাজিক সুবিধা ব্যবস্থার অপব্যবহার করেছে। এছাড়া যারা নিজেদের মিথ্যে পরিচয় দিয়েছে তাদের এবং যাদের জননিরাপত্তা ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁঁকি মনে করা হবে তাদেরও খুঁজে বের করা হবে। নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা এবং গ্রীন কার্ডধারীরা যে প্রাইভেসি বা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকার পান, অবৈধ অভিবাসীরা তা পাবেন না। যে সব অবৈধ অভিবাসী শিশু যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিল তারা অবশ্য এর আওতার বাইরে থাকবে। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ‘ড্রিমার্স অর্ডারে’র আওতায় শিশুরা এই সুরক্ষা পাবে। এর আগে অভিবাসীদের ঢল আটকাতে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের কথা বলেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারাভিযানে নেমেই ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। তার মতে, দেশে অপরাধ প্রবণতা ও মাদকাক্তদের সংখ্যা বাড়ার জন্য অবৈধ অভিবাসীরাই দায়ী। সব মিলিয়ে মেক্সিকোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখন যথেষ্ট তিক্ত। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলতি মাসে মেক্সিকোতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে যেমন পরেও তেমনি প্রতিবেশী রাষ্ট্রটির বিরুদ্ধে নানা সময়ই অবজ্ঞাসূচক ও বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা বলে এসেছেন ট্রাম্প। এসব কারণে মেক্সিকানরা তার ওপর ক্ষুব্ধ। তার ওপর ট্রাম্প আবদার তুলেছেন মেক্সিকোর মানুষের যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ প্রবেশ রোধ করতে তিনি দুই দেশের সীমান্তে দেয়াল দেবেন। ট্রাম্পের ভাষায় এই ‘বড় সুন্দর’ সীমান্তের খরচ দিতে হবে মেক্সিকোকেই। শেষ পর্যন্ত মেক্সিকানরা নেমে আসে রাজপথে। মেক্সিকো সিটিসহ ২০ শহরে ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র সফরের কথা থাকলেও প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েতো নিজেই সেটি বাতিল করেন।
×