ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের আরোপিত বিধি-নিষেধের সমালোচনা

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের আরোপিত বিধি-নিষেধের সমালোচনা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ রেমিটেন্স কমে যাওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের আরোপিত বিধি-নিষেধের সমালোচনা করেছেন বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার এ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি মোস্তফা জব্বার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও একটু ভেবে দেখা দরকার। এ বিষয়ে আরও চিন্তা করার সুযোগ আছে। দুই-একজন খারাপ কাজ করলে, তার শাস্তি সবাইকে দেয়া ঠিক হবে না। বুধবার রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে বিআইআইএসএস অডিটোরিয়ামে ‘মোবাইল ব্যাংকিং, ফিন্যান্স এ্যান্ড সিকিউরিটি ইস্যু’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি। ফ্রিডরিচ নিউম্যান স্ট্রিফটাং (এফএনএফ) নামক সংগঠনের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই যৌথ উদ্যোগে এ গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়। সম্প্রতি হুন্ডি ও অপব্যবহার রোধে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেন সীমা কমিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে কোন মোবাইল ব্যাংকিং হিসেবে ৫ হাজার টাকা বা তার বেশি নগদ অর্থ জমা বা উত্তোলনে গ্রাহককে পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ডের ফটোকপি দেখাতে হবে; যা এজেন্ট তার রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করবেন। রেজিস্টারে গ্রাহকের সই বা টিপসই সংরক্ষণের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। প্রতিদিনের টাকা উত্তোলনের সীমা ২৫ হাজার থেকে কমিয়ে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে; তবে দিনে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা জমা দেয়া যাবে। মাসে ১০ বারের বেশি অর্থ উত্তোলন করা যাবে না। এক মাসে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করা যাবে। আর জমা মাসে সর্বোচ্চ ২০ বার বা সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা দেয়া যাবে। মোস্তফা জব্বার বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনা মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতোই সিদ্ধান্ত। টেলিকম সেক্টরের ই-কমার্স ব্যবসায় আসার ক্ষেত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সবকিছুই যদি টেলকো গ্রুপের হাতে ছেড়ে দেয়া হয় তাহলে অন্যরা কি করবে। টেলকোর স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধ করতে না পারলে প্রতিযোগিতা তৈরি করা যাবে না। এক্ষেত্রে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। মোস্তফা জব্বারের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বৈঠকে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার বলেন, মোবাইল ব্যাংকিং সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংককে খুব দ্রুতই একটি কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। যেহেতু, আমিও সরকারী পর্যায়ে আছি, এ ব্যাপারে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের জেনারেল ম্যানেজার লিলা রাশিদ বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে শুধু বিকাশই ৮০ শতাংশ মার্কেট দখল করেছে। তাই এক্ষেত্রে আমরা প্রতিযোগিতামূলক বাজার তৈরিতে গাইডলাইন তৈরি করছি। বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে মাতলুব আহমেদ বলেন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গাইডলাইনের প্রয়োজন রয়েছে। ওমানে গিয়ে আমি দেখেছি, বিকাশের মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠানোর বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে দেশের বাইরে বিকাশের কোন এজেন্ট নেই। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে। গোলটেবিল বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিধিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, প্রবাসীরা অনেক কষ্ট করে টাকা উপার্জন করে। তাই তাদের পাঠানো রেমিটেন্সের ওপর নগদ প্রনোদনা দেয়া উচিত। টেলকো গ্রুপের উদ্দেশে মাতলুব বলেন, আপনারা নিজেদের ব্যবসায় মন দিন। তাহলে ভাল সার্ভিস দিতে পারবেন। গোলটেবিল বৈঠকে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বেসিসের সাবেক সভাপতি শামীম আহসান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিকাশের সিইও কামাল কাদির, এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মাহবুব আলম প্রমুখ।
×