ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কলেজ শিক্ষক কার্তিক সেনগুপ্তের ফুলের পসরা

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭

কলেজ শিক্ষক কার্তিক সেনগুপ্তের ফুলের পসরা

মহানবী (স) এর হাদিস থেকে ফুলের প্রতি ভালবাসার নিদর্শন খুঁজে পাওয়া যায়। জোটে যদি মোটে দুটি পয়সা, একটি দিয়ে খাদ্য কিনিও ক্ষুধার লাগি, আরেকটি দিয়ে ফুল কিনিও হে অনুরাগী। ফুলের প্রতি ভালবাসার এ অমর বাণী ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে অনুপ্রাণিত করে। কথিত আছে, যে ফুল ভালবাসে, সে মানুষ খুন করতে পারে না। মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাক হানাদারের বিরুদ্ধে সাহস যুগিয়েছে, একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি, মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি...’। ১৯৯১ সালে লক্ষ্মীপুরে ‘পুষ্পবন’ নামে সর্ব প্রথম ফুলের দোকান খুলে বসেন কার্তিক রঞ্জন সেনগুপ্ত। শখের বসে পাঁচ/ছয় হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে তিনি ফুলের ব্যবসা শুরু করেন। যেসব ফুলের বেশি চাহিদা, তার মধ্যে রয়েছে- গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা ইত্যাদি। কলেজ রোডে ছোট্ট টিনের ঘরে তার ব্যবসা শুরু। শুরুতে পাঁচ থেকে ছয় বছর পর্যন্ত লাভের মুখ দেখেননি। তিনি জানান, ব্যবসা নয়- শখই ছিল তার কাছে বড়। তারপরও ব্যবসার হাল ছাড়েননি। এর আগে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে ফুল আনতে হতো ঢাকা থেকে। এতে পরিবহন এবং যোগাযোগ কারণে সময় মতো ফুল সংগ্রহ করা ছিল কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তিনি ধৈর্য সহকারে শক্ত হাতে ব্যবসার হাল ধরেন। বর্তমানে নিজস্ব দোকান ভিটা বাদে পাঁচ লাখ টাকার পুঁজি রয়েছে দোকানে। তিনি জানান, বিভিন্ন জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক দিবস, ঈদ, পূজা-পার্বণ, বিয়ে হচ্ছে ব্যবসার মৌসুম। বর্তমানে প্রতি মাসে তার ৬০-৭০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়। এতে খরচ বাদে ১৪-১৫ হাজার টাকা লাভ থাকে। দু’সন্তান মিলে চারজনের ছোট্ট সংসার নিয়ে তিনি সুখে আছেন। এর মধ্যে বড় মেয়ে ঐশ^র্য সেনগুপ্ত ঢাকায় বেসরকারী মেডিক্যালে এমবিবিএস পড়ছে। ছোট মেয়ে মাধুর্য সেনগুপ্ত পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে। তাকে অনুসরণ করে জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ রামগতিসহ বিভিন্ন স্থানে ১৫-২০টি ফুলের দোকান গড়ে উঠেছে। স্থানীয়ভাবে ফুল চাষ করা গেলে কম দামে সাধারণ মানুষকে ফুল সরবরাহ করা যেত। এতে ফুলের প্রতি মানুষের অকৃত্রিম ভালবাসা আরও বাড়বে বৈ কমবে না। এ ছাড়া ফুল হারবাল ওষুধ, রূপচর্চা, পারপিউম এবং কসমেটিকস তৈরিতে ফুলের জুড়ি নেই। তাই ফুলের প্রতি স্বর্গীয় ভালবাসা অক্ষুণœ রাখতে হলে সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে কৃষকদের পৃৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে এর প্রসারতা বাড়াতে হবে। এতে অর্থনৈতিকভাবে কৃষক লাভবান হতে পারে। ফুলের প্রতি ভালবাসা বৃদ্ধি পেলে মানুষের মাঝে হিংসা, হানাহানি এবং খুন খারাবি কমবে। ভালবাসায় সিক্ত হবে দেশ-জাতি। -মহিউদ্দিন মুরাদ, লক্ষ্মীপুর থেকে
×