ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় চিহ্নিত হয়নি গণকবর

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬

নওগাঁয় চিহ্নিত হয়নি গণকবর

একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা নওগাঁ জেলার বীরত্বগাথাকে খাটো করে দেখার অবকাশ নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের পাশাপাশি এখানকার মুক্তিকামী বাঙালী বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে। জীবন দিয়েছে অকাতরে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে যারা ঘাতকদের হাতে প্রাণ দিয়েছে, তাদের পাশাপাশি নওগাঁ সদরের দোগাছী ডাঙ্গাপাড়া পুকুরপাড়, ফতেপুর গড়েরহাট, রানীনগরের আতাইকুলা, আত্রাইয়ের মিরাপুর, ধামইরহাটের কুলফৎপুর ও মান্দার পাকুড়িয়ায় মুক্তিকামী মানুষের লাশ গণকবর দেয়া হয়, সেই বেদনাবিধুর স্মৃতিবিজড়িত বধ্যভূমির কথা অনেকেই ভুলতে বসেছে। এর মধ্যে দুটির স্মৃতিচিহ্ন কিছুটা ধরে রাখার চেষ্টা করা হলেও অন্য তিনটির কোন স্মৃতিচিহ্ন নেই। নতুন প্রজন্ম জানেই না, পাকি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর এদেশী রাজাকার, আলশামস ও আলবদরদের সহায়তায় কি নির্মমভাবে নিরীহ মুক্তিকামী বাঙালীকে হত্যা করা হয়েছিল! শুধু তাদের স্বজনরাই মনে রেখেছে সেদিনের সেই নির্মমতার কথা। একাত্তরের ২৫ এপ্রিল পাকি হানাদার বাহিনী রাজাকারদের সহায়তায় নওগাঁ সদরের পিরোজপুর ও খিদিরপুর গ্রাম (বর্তমানে পৌর এলাকা) থেকে প্রায় অর্ধশত নিরীহ মানুষদের ধরে দোগাছী ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের পুকুরপাড়ে হাত-চোখ বেঁধে লাইন করে দাঁড় করিয়ে হত্যা করে। এই বধ্যভূমি চিহ্নিতকরণে বা রক্ষণাবেক্ষণে কোন মহল এগিয়ে আসেনি। ফলে শহীদদের স্মৃতিচিহ্ন নেই সেখানে। একই দিন সদরের ফতেপুর গড়েরহাটে দেবীপুর, ফতেপুর ও কাদোয়া গ্রামের নিরীহ বাঙালীদের হত্যা করে হানাদার বাহিনী। বধ্যভূমিটি আজও চিহ্নিত হয়নি। রানীনগর উপজেলার আতাইকুলা গ্রামের বধ্যভূমিটি আজও অবহেলিত। একই দিন ঘাতকদের ব্রাশ ফায়ারে আতাইকুলা হিন্দুপাড়ার মানুষদের হত্যার পর বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা সেখানে গর্ত খুঁড়ে স্তূপাকারে লাশ রেখে মাটিচাপা দেয়। ’৯৭ সালে এমপি শাহিন মনোয়ারা হক সেখানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়ে কিছু গম বরাদ্দ দেন। যা দিয়ে প্রাচীর বেষ্টনী আর শহীদদের নামফলক তৈরি করা হয়েছে মাত্র। আর কোন অগ্রগতি হয়নি। Ñবিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ থেকে
×