অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ দেশের পুঁজিবাজারে তারল্য প্রবাহ বেড়েছে। সূচকের সাথে তাল মিলিয়ে লেনদেনও ইতিবাচক ধারায় শেষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন ছাড়িয়েছে হাজার কোটি টাকা। মূলত নতুন বিদেশী বিনিয়োগের ওপর ভর করেই দিনটিতে লেনদেন প্রায় সাড়ে ১১শ কোটি টাকায় পৌঁছছে। ভাল মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির চাহিদা বাড়ার সূচকও অবস্থান করছে সর্বোচ্চ চূড়ায়।
ঢাকা ব্রোকারর্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মোস্তাক আহমেদ সাদেক জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বিনিয়োগকারীদের লালিত স্বপ্ন লেনদেন ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে। বৃহস্পতিবারে বিদেশী নতুন ফান্ড বাজারে আসায় বিনিয়োগকারীদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। সেই সঙ্গে ভাল কোম্পানির চাহিদ ধরেই বাজার সংশ্লিষ্টরা বাজারে গতি ফেরাতে চেষ্টা করছেন, আজ তা সফল হয়েছে। বিদেশী বিনিয়োগ বাড়া সেটারই প্রতিফলন।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার ডিএসইতে এক হাজার ১৪৯ কোটি ৮৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে; যা আগের দিনের তুলনায় ২৮৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন এ বাজারে ৮৬৪ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ব্লক মার্কেটে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ এককভাবে ২০৬ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে; যা ডিএসইতে মোট লেনদেনের ১৮ শতাংশ। আর এই কোম্পানির বড় অংকের লেনদেন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অবদান রেখেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নেয় ৩২৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫১টির, কমেছে ১২৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৯টির শেয়ার দর।
এদিকে ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ২১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৮৯২ পয়েন্টে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৬১ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ৭৯৫ পয়েন্টে।
ডিএসইতে খাতভিত্তিক বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দিনটিতে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে প্রকৌশল খাতের। দিনটিতে কোম্পানিগুলোর মোট লেনদেন ১৮৭ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ২২.৭২ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। দিনটিতে খাতটির মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২৫ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ১৫.২১ ভাগ। তৃতীয় অবস্থানে ছিল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত। সারাদিনে খাতটির লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯.২১ ভাগ।
ডিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : আফতাব অটোস, শাশা ডেনিমস, ইফাদ অটোস, অলিম্পিক এক্সেসরিজ, আরএসআরএম স্টিল, জিবিবি পাওয়ার, কাসেম ড্রাইসেল, সিটি ব্যাংক, আর্গন ডেনিমস ও ফরচুন সুজ।
দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : শ্যামপুর সুগার, আলহাজ্ব টেক্সটাইল, মেঘনা পেট, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, ন্যাশনাল হাউজিং, ডেফোডিল কম্পিউটার, ন্যাশনাল টিউবস, গোল্ডেন হার্ভেস্ট, মুন্নু সিরামিক ও কাসেম ড্রাইসেল।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। সিএসইতে ৫৮ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সিএসই সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৭৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৭৩ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৬টির, কমেছে ৭৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩১টির।
সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : অলিম্পিক এক্সেসরিজ, ফরচুন সুজ, সি অ্যান্ড এ টেক্সটাইল, হোটেল পেনিনসুলা, স্কয়ার ফার্মা, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, ইয়াকিন পলিমার ও বে´িমকো ফার্মা।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: