ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে আবাদি জমি বিনষ্ট করে অবৈধভাবে ১০টি ইটভাটা স্থাপন

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ৭ ডিসেম্বর ২০১৬

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে আবাদি জমি বিনষ্ট করে অবৈধভাবে ১০টি ইটভাটা স্থাপন

ইফতেখারুল অনুপম, টাঙ্গাইল ॥ টাঙ্গাইলে নাগরপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আবাদি জমি বিনষ্ট করে ও কাঠবাগানের পাশে অবৈধভাবে ১০টি ইটভাটা স্থাপন করেছে প্রভাবশালীরা। আবাদি জমি ও সরকারী জায়গা দখল করে এবং কাঠবাগানের পাশে ইটভাটা কার্যক্রম চললেও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন, আবাদি জমির মাটি কেটে ভাটার মাটি সংগ্রহ ও জ্বালানি হিসেবে বনজ সম্পদ উজাড়ের কারণে নাগরপুরে ভাটপাড়া গ্রামে খোরশেদ মার্কেট নামকস্থানে অবৈধভাবে নতুন দু’টি ইটভাটা গড়ে উঠায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগুলোতে জীব-বৈচিত্র ও জনবসতি হুমকির মুখে পড়েছে। ইটভাটা সংলগ্ন গ্রামের ভাটপাড়া বীরসলিল, নলসন্ধ্যা, ডাংগা, দুয়াজানী, বেকড়া, বনগ্রাম, গয়হাটা, পাকুটিয়া, আগতারাইলের জনসাধারণ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করলেও এ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। উপজেলার খোরশেদ মার্কেট সংলগ্ন আবাদি জমিতে এবং কাঠবাগানের পাশে এ.টি.এম ব্রিক্স ও রাবিয়া ব্রিক্স নামে অবৈধভাবে নতুন দু’টি ইটভাটা গড়ে তুলেছে। কোন বৈধ অনুমতি ছাড়াই ভাটপাড়া মৌজায় অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। ইটভাটার মালিকরা প্রভাবশালী বিধায় এদের বিরুদ্ধে কেউ কোন প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। জানা যায়, ভাটার মালিকরা প্রথমে কম জায়গা নিয়ে ইটভাটা নির্মান করলেও ধীরে ধীরে আবাদি জমি দখল করে পরিধি আরো বাড়ানো হচ্ছে। স্থানীয় জনসাধারণের দেয়া তথ্য মতে, প্রশাসনিক তদারকির কারণে নাগরপুরে খোরশেদ মার্কেট নামকস্থানে আরো দু’টি নতুন ইটভাটাসহ ১০টি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। খোরশেদ মার্কেট, দুয়াজানী, বনগ্রাম, পাকুটিয়া, আগতারাইল, ডাংগা, মীরনগর ও বেকড়া নামকস্থানে উপজেলার সিন্ডিকেট ইট ব্যবসায়ীরা সরকারের অনুমোদন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নতুন করে দু’টি ইটভাটাসহ ১০টি ইটভাটা স্থাপন করেছে। এম.বি ব্রিক্সের মালিক বাবুল দেওয়ান বলেন, স্থানীয় ভূমি মালিকদের কাছ থেকে অধিকাংশ জমি লীজ বা ক্রয় করে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইটভাটা করা হয়েছে এবং জমির মালিকদের কাছ থেকে মাটি ক্রয় করে ইটভাটায় সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে জমির মালিকগনরা লাভবান হচ্ছেন। ভাটপাড়া গ্রামের লিয়াকত হোসেন জানান, খোরশেদ মার্কেট এলাকায় ভাটপাড়া মৌজায় আবাদি জমি বিনষ্ট করে ও কাঠবাগানের পাশে নতুন করে রাবিয়া ব্রিক্স ও এ.টি.এম ব্রিক্স ইটভাটাসহ ৩টি ইটভাটা নির্মান করেছে প্রভাবশালীরা। এদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। এরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আবাদি জমির উপর অবৈধভাবে ইটভাটা স্থাপন করায় জনবসতি হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. রোকনুজ্জামান বলেন, ইটভাটায় ইট পোড়ানোর কারণে স্থানীয় গ্রামবাসীর জনগনের মাঝে শ্বাসকষ্ট, প্রদাহ জনিত রোগ, চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগ বৃদ্ধি পেতে পারে। পরিবেশের এই বিরুপ প্রভাব রোধ করা না হলে নাগরপুরের জনসাধারণ আরো জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েবে। কাঠবাগান ও ফলদ বাগানের ফলদ কমে যাবে এবং বাগানগুলো বিনষ্ট হয়ে যাবে। এ বিষয়ে নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ ইলাহী বলেন, নাগরপুরের খোরশেদ মার্কেট সংলগ্ন নতুন দু’টি ইটভাটা স্থাপনসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১০টি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অচিরেই এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×